আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের কৃষি: সার প্রস্তুতকারীদের অসাধুতায় কৃষি ক্ষেত্রে অশনিসংকেত

বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ - এ কথা নতুন করে বলার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু বাংলাদেশের কৃষি ক্রমে ধ্বংসের পথে। ঢাকা বা অন্যান্য প্রধান শহরের আশেপাশের জেলা শহরগুলির কৃষি জমি অনেক আগে থেকেই ডেভলপারদের দৌরাত্নে আর কৃষি জমি নেই। কিন্তু সম্প্রতি, কৃষি ক্ষেত্রে নতুন অশনিসংকেত দেখা দিয়েছে। হাইব্রিড জাতের ফসল চাষের সাথে সাথে কৃষি ক্ষেত্রে বেড়েছে রাসায়নিক সারের ব্যবহার।

দেশের বাজারে এখন নিত্য নতুন রাসায়নিক সার, যার নাম এক সময় বাংলাদেশের কেউই জানত না। এই সময়ের কৃষিতে সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হচ্ছে ডিএপি, এমওপি, টিএসপি, এনপিকেএস (মিশ্র), বোরন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি রাসায়নিক সার। এসব সার প্রস্তুত ও বাজারজাতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে দেশের অনেক বেসরকারী সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। আর এ সকল সার ডিলার ও রিটেইলারদের মাধ্যমে পৌছে যাচ্ছে দেশের আনাচে কানাচের কৃষকদের হাতে। সম্প্রতি বাজারে প্রাপ্ত অনেকগুলি সার ব্যবহার করি এবং প্রাপ্ত ফলাফল দেখে আতন্কিত হই।

কোন সারেই গ্রহণযোগ্যমাত্রার কোন ফলাফল নেই। যা দুই একটিতে কিছু আছে তা নেই এর সমান। বিষয়টি নিয়ে কথা বললাম দেশের একজন বড় সার ডিলারের সাথে। তিনি জানালেন, এখন বাজারে যত সার আছে এর কোনটিই গ্রহণযোগ্য বা ব্যবহার যোগ্য নয়। বাংলাদেশের বেশীরভাগ কৃষক সারের সঠিক ব্যবহার ও কার্যকরীতা সম্পর্কে জানেনা আর কোম্পানীগুলি এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে।

সার ব্যবহার বা চাষাবাদ সম্পর্কে কৃষক সার ব্যবসায়ী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এবং সার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির উপর নির্ভরশীল। তিনি আরও জানান সঠিক মানের সার এর যে উৎপাদন খরচ পড়বে তা আমাদের মত দেশের কৃষকদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তারপর ভালো কোম্পানীগুলি অসাধু কোম্পানীর লো প্রাইসিং এর সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে বাধ্য হচ্ছে লো কোয়ালিটি সার প্রস্তুত করতে। তিনি উদাহরন দিয়ে বলেন ৫০ কেজি এনপিকেএস (মিশ্র) সার তৈরীতে খরচ হয় কমপক্ষে ২৩০০ টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজারে অসংখ্য মিশ্রসার রয়েছে এবং সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮০০ টাকা।

এ অবস্থায় সঠিকমানের সার প্রস্তুত করা আর নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা একই কথা, কারন সে সারের চাহিদা বাজারে নেই। জিজ্ঞাসা করেছিলাম কৃষি বিভাগ থেকে কোন তদারকি হয় কি না। তিনি জানালেন নিয়মিতই হয়, তবে তদারকি নয় মাসোহারা। কোন কোন এলাকয় কখনও কখনও সৎ কিছু কর্মকর্তা নিয়মানুযায়ী কাজ করেন, তারা বাজার থেকে স্যাম্পল নিয়ে খামারবাড়িতে পরীক্ষার জন্য পাঠান, কিন্তু খামারবাড়িতে প্রতিটি কোম্পানীরই লিয়াজো রয়েছে। টেস্টে কোন স্যাম্পল গেলেই, সংশ্লিষ্ট কোম্পানী বিষয়টি ম্যানেজ করে নেয় এবং কোন পরীক্ষা ছাড়াই রিপোর্ট তৈরি হয়ে যায়।

আর সে রিপোর্ট সবসময় সন্তোষজনকই হয়। উনার সাথে কথা বলার পর, আমার স্বপ্নগ্রাম কর্মসূচী নিয়ে সত্যি শন্কিত হয়ে পড়েছি। তিনি শেষে একটি ভালো পরামর্শ দিলেন আর তা হলো রাসায়নিক সার ছেড়ে যদি জৈব সার ব্যবহার শুরু করতে পারি তবে ভালো হয়, বাজারে যে সকল জৈবসার আছে তার মান সত্যি সন্তোষজনক। আর যদি পারি নিজেরাই যেন জৈবসার উৎপাদনের ব্যবস্তা করি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.