আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভালবাসার বিপদঃ ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম

ধুসর এই পৃথিবীতে আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন খুজে বেড়াই সুস্থ্য থাকতে কে না চায় ? সুস্থ্য থাকার জন্য নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেয়াটা একান্ত জরুরী। আর এ জন্য মাঝে মাঝেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত মেডিকেল চেক আপের জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় রোগ না হলে বেশির ভাগ মানুষই ডাক্তারের কাছে যান না, নিছক অর্থ নষ্ট হবে মনে করে। আবার অনেকে আলসেমী করেও চেক আপ করান না, আর অনেকেতো সময়ই পান না ব্যস্ততার জন্য। তবে যে কারণেই চেক আপ করা বিরত থাকুন না কেন, যারা চেক আপ করাতে পারছেন না, হোক সেটা সময়ের অভাবে বা অন্য কোনো কারণে, তারা খুব সহজেই কোনো কোনো রোগের ব্যাপারে নিজের নিজের চেক আপ নিজেই করতে পারেন।

এ কাজটি করা যায় আপনার নখ দেখে। কি, অবাক হচ্ছেন ? বন্ধুরা, অবাক হওয়ার কিছু নেই। মানুষের শরীরের বিভিন্ন রোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার হাত বা পায়ের নখের আচরণ বিভিন্ন রকম আচরন করে থাকে, অর্থাৎ, বিভিন্ন রোগের প্রভাব নখেও পড়ে যা দেখে আপনি ঐ রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন। এরই মধ্যেই অনেকে নিশ্চয় ধরে ফেলেছেন যে এটি প্রেমঘটিত (সাধারণত) এরং হৃদয়ঘটিত এক ধরণের Medical Condition যার সংজ্ঞা অনেকটা এরকম - "“Broken Heart Syndrome হল এমন এক ধরণের Medical Condition, যেখানে আকস্মিক মানসিকভাবে চরম আঘাত পাওয়ার কারণে হৃদপিন্ডের মাংসপেশী myocardium সাময়িকভাবে দূর্বল হয়ে পরে এরং এর কারণে শারিরীকভাবে বুকে ব্যাথা অনুভূত হয়। ”" আরও ভাল করে বলা যায় - “Broken Heart Syndrome is such an Medical Condition which is triggered by extreme and sudden emotional trauma and due to which there is a temporary weakening of the myocardium (the muscle of the heart).” পূর্বে ধারণা করা হত যারা Broken Heart Syndrome বা BHS এ ভুগে, তারা হয়ত বড় রকমের হার্ট এ্যটাকের (Heart Attack) স্বীকার হচ্ছে।

কারণ BHS এমনই চালাক যে এটা ঠিক Heart Attack এর symptoms বা লক্ষণগুলোর মত লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে, যেমন – বুকে ব্যাথা হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসে স্বল্পতা, প্রবলভাবে ঘেমে যাওয়া ইত্যাদি। পরবর্তীতে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডাক্তারেরা নিশ্চিত হন যে এটা কোন হার্ট এ্যটাকের নয়, হার্ট এ্যটাকের এর ভেলকি মাত্র। শুদ্ধ বাংলায় এটাকে হয়ত মজা করে আমরা ”হৃদয়ের লীলা খেলা” বলতে পারি । Broken Heart Syndrome (BHS) আরও বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন – Takotsubo cardiomyopathy , Gebrochenes-Herz-Syndrom ইত্যাদি তবে stress cardiomyopathy নামটি বেশি প্রযোজ্য। BHS প্রথম আবিষ্কার করেন জাপানী ডাক্তারেরা ১৯৯১ সালে।

তারাই এটার নাম দিয়েছিলেন Takotsubo cardiomyopathy বা octopus trap cardiomyopathy । যদিও এখন পর্যন্ত এর সঠিক কারণটি জানা যায়নি, তবে ধারণা করা হয় আকস্মিক মানসিকভাবে চরম আঘাত পাওয়ার কারণে, শরীরের stress hormones-গুলোর (যেমন – adrenaline ) অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় এমনটি হয়। এখানে মানসিকভাবে আঘাত পাওয়া বলতে প্রেমিক-প্রেমিকার সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়া, প্রিয় কাউকে হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি ঘটনায় মানসিকভাবে আঘাত পাওয়াকেই সাধারণত বুঝিয়ে থাকে। এছাড়া ভয়াবহ কোন দু:সংবাদ শুনেও এমন হতে পারে। যাই হোক সুসংবাদ হল যে BHS নকল হার্ট এ্যটাকের মাত্র এবং এটা থেকে ১০০% ভাগ সুস্থ হওয়া সম্ভব ।

পরিশেষে এটাই বলব যে Broken Heart Syndrome এর ভয়ে ভালবাসা থেকে দূরে থাকা হবে চূড়ান্ত রকমের বোকামি কারণ - “Life is the flower of which love is the honey. ” –Jean Baptiste Alphonse Karr পুনশ্চ: পুরুষদের তুলনায় নারীরা Broken Heart Syndrome -এ বেশি ভোগে ( নারীরা একটু বেশিই ইমোশোনাল কিনা! No offence! )। সবার জ ননো ভালোবাসা রইল শেখ মোহাম্মদ রাসেল উদ্দিন BGC TRUST MEDICAL COLLEGE, ctg M.B.B.S 5th Year ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.