আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাম্প্রতিক সময়ে আমার ৩০টি ফেসবুক স্টাটাস

পাখি এক্সপ্রেস ১. কোন কারণ ছাড়া আমার মনে হতো আওয়ামীলীগ ভালো রাজনৈতিক খেলোয়াড়। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কোন কারণ ছাড়া যেকোন কিছু মনে করা ঠিক না। আওয়ামীলীগের জন্য কবর খোঁড়ার কাজে একটা কোদাল সরবরাহের সামর্থ্যও বিএনপির নেই। অথচ আওয়ামীলীগ নিজ শরীরের দ্বিগুন কবর নিজের জন্য অলরেডী খুঁড়ে ফেলেছে। আগামী নির্বাচনের পর আবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, জঙ্গী হামলা, রাজাকারের গাড়িতে জাতীয় পতাকা!! ২. কবিগণ এখনো কত কবিতা যে লিখেননি! কবে যে এসব কবিতা লেখা হবে, কে জানে! লেখক ভাড়া করে হোক আর যেভাবেই হোক, স্বৈরশাসক এরশাদ অনেক কবিতা লিখেছেন।

কিন্তু আরেক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান লিখেননি। আবার তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও কবিতা লিখেননি। অথচ উনি চাইলেই ২ লাইন কবিতা লিখতে পারতেন। "মগবাজারের কোথাও আমায় কবর দিও ভাই/যেন দিবানিশী গোলাইম্মার গন্ধ শুঁকতে পাই!" অথবা "এসো মিছিলে যাই, ভয় নেই হারাবার/পল্টন থেকে স্লোগানে স্লোগানে যাবো মগবাজার!" ৩. মন চাইলো জনপ্রিয়দের একটা তালিকা করি। শুরু করলাম- জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান, জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী হৃদয় খান, জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ...।

যাই এবার একটা ব্রেক নিই। বাকিটা পরে লিখুম। ৪. হুমায়ুন আহমেদের ক্যান্সার হওয়াতে নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমত লোকটি উপন্যাস লিখতে পারছেন না। দ্বিতীয়ত আমেরিকায় বসে বসে ক্যান্সারভিত্তিক ধর্ম, মানবতা, সুপার হিরো ইত্যাদি খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

এমনকি আগের সংসারের সন্তানদের প্রতি ক্যান্সারকেন্দ্রিক পিতৃত্ববোধও জেগে উঠেছে। উনার ধর্মের পেছনে ক্যান্সার, মানবতার পেছনে ক্যান্সার, সুপার হিরোর পেছনেও ক্যান্সার। ভাগ্যভালো ব্যাটম্যান, সুপারম্যানদের কারো ক্যান্সার ছিলো না। নইলে এতোদিনে উনার সুপার পাঠকরাও ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে যেতেন। আমরা এখন সুপার ক্যান্সার যুগে প্রবেশ করেছি।

৫. ফেসবুকে ডিজুস মুসলমানরা যে হারে ধর্মকর্ম শুরু করে দিয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সালাত আদায় করার জন্য "পাঞ্জেগানা পেজ" খুলে 'আসুন জামায়াতের সাথে সালাত আদায় করি' স্টাটাস দেয়া শুরু করবে। মাঝে মাঝে ১৮+ জোকসের পেজও দেখি হাদিস চর্চা হয়। পোলাপান ৫ ফুট মাস্তি করে ৫ ইঞ্চি আল্লাহরে ডাকে। ন্যাংটা হইয়া নাচতেও ইচ্ছে করে, আবার ঘোমটার কথাও মনে পড়ে। এ জন্য এসব পোলাপানের প্যান্ট হাফ হয়, দাঁড়ি হয় কোয়ার্টার, আর ধর্মকর্ম হয় ইঞ্চি মেপে।

৬. তোদেরব্লগ.কম এর উদ্যোগে পহেলা ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হতে যাচ্ছে "নিউ বাংলা ব্লগ দিবস। " উল্লেখ্য কয়েক বছর ধরে ১৯ ডিসেম্বর তারিখে 'বাংলা ব্লগ দিবস' পালিত হয়ে আসছে। একটি সার্বজনীন দিবস থাকে আরেকটি দিবসের কেন প্রয়োজন? এমন প্রশ্নের জবাবে জনাব তোদেরব্লগ.কম বলেছেন, "একটি দিবসে তোদেরব্লগ.কম এর বিশাল বিশাল ব্লগারদের পোষায় না। আর আমরাতো কারো দিবস নকল করছি না। আগে একটি 'নিউ' লাগিয়েছি।

" এক সংবাদ থেকে জানা যায়, উক্ত ব্লগ দিবসের সাথে সচলায়তন, মুক্তমনা, গ্লোবাল ভয়েস অনলাইনসহ নাম না জানা প্রচুর ব্লগ সাইট একাত্মতা ঘোষনা করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে ক্যাসেল জার্মানি থেকে হাঁটু পানির জলদস্যু (হিমু, সচলায়তন) বলেছেন, "সচলায়তনের নাম দেখে বিস্মিত হলাম। সচলায়তন কোনো ধরনের ব্লগ দিবস পালনে ইচ্ছুক নয় বলেই জানি। সচলায়তনের নাম এখানে সচলায়তন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হচ্ছে। " উল্লেখ্য অনেকে তোদেরব্লগ.কমকে 'আমারব্লগ.কম' নামেও দাবি করে থাকেন।

৭. ছোটবেলায় গ্রামের প্রগতিশীলদের চিহ্নিত করতে পারিনি। অথবা আমি তখন প্রগতিশীল খুঁজিনি। এটা খুব বড় কোন ঘটনা নয়। বড় ঘটনা হচ্ছে ওই সময় যারা প্রগতিশীল ছিলেন, তাদের বেশিরভাগই এখন চরম রক্ষণশীল। স্কুল কলেজে পড়ার সময় এদের অনেককে বেকার দেখেছি, এখনো পর্যন্ত উনারা বেকার।

তাহলে সমস্যা কোথায় ছিলো? আসলে উনাদের উড়ার মতো দু'টা ডানা গজিয়েছিলো বটে, সেটার যত্ন নেয়া হয়নি বলে ডানা দু'টো খসে পড়েছে। এখন না পারছেন হাঁটতে, না পারছেন উড়তে। নিজের দুরাবস্থার জন্য কখনো পরিবারকে, কখনো রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দায়ী করে থাকেন উনারা। মূল পরাজয়টা এখানে। নিজের দুরাবস্থার জন্য নিজের চাইতে বেশি কেউ দায়ী হতে পারেন না।

যখন মনে হবে আমার দুরাবস্থার জন্য অন্য কেউ দায়ী, তখনই নিজের আত্মবিশ্বাস নবায়নের জন্য উঠেপড়ে লেগে যাবো। ওই সময় এটা ছাড়া আমার কোন কাজ থাকবে না। ৮. নানান কূটকৌশলে একটা মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করো। যেমন ধরো "জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক" এ মিথ্যাটি প্রতিষ্ঠিত করলে। এরপর একটা সময় যখন মিথ্যাটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অপসারনের উদ্যোগ নেয়া হবে তখন তোমার পক্ষের বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো এবং বলো, "দেশের এতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা থাকতে সরকার/আদালত এটা নিয়ে ব্যস্ত হলো কেন?" ৯. আমি আমাকে খুব স্পষ্ট দেখি, তাই বেশ আলোকিত মনে হয়।

সে হয়তো অতো স্পষ্ট দেখতো না। আসলে আমি নিজেকে নিজের মতো করে দেখেছি, নিজের জন্য দেখেছি। এভাবে দেখা ভুল, যদি আমি ভালোবাসাসহ বেঁচে থাকতে চাই। যাকে ভালোবাসি, এমনকি সে যদি প্রিয় রিকশাওয়ালাটিও হয়... তবে তার চোখে একবার নিজেকে দেখে নিতে হবে। নইলে ভালোবাসা হারিয়ে যাবে।

১০. গাধা একটি উপকারি জন্তু, ঈশ্বর একজন উপকারি মুরুব্বী। একদিকে কিছু ভার, কিছু ওজন গাধার পিঠে দিয়ে নির্ভার হই। অন্যদিকে নিজের সব ব্যর্থতার দায় ঈশ্বরকে দিয়ে নিশ্চিন্ত হই। আমার ঈশ্বর আমার প্রিয় গাধার মতো। ১১. আমাদের বারান্দা আর দু'কাপ চা টাকার কাছে বিক্রি করে দিও না।

মগজের অর্ধেকের বেশি বিক্রি হয়ে গেছে। সকালবেলা যে হাসিতে বিদায় দাও, জন্মের আগেই তা বিক্রি হয়ে যায়। প্রতিদিন কতকিছু বিক্রি হতে দেখি। আজ এক সাংবাদিকের অসহায়ত্ব বিক্রি হতে দেখলাম। আরো অনেকের অসহায়ত্ব বিক্রি হতে পারেনি বলে আপসোস করছে।

তুমিতো জানো, ওই বারান্দা ওই দু'কাপ চা ছাড়া আমি অসহায় হয়ে যাই। এ অসহায়ত্ব টাকার কাছে বিক্রি করবো না। আজও অফিস শেষে বাসায় দিয়ে বারান্দায় বসবো। তুমি চা বানিয়ে রেখো। ১২. কোন যায়গায় হয়তো এক লোকের নাক নিয়ে কথা হচ্ছে।

কিছু লোক সেখানে গিয়ে ওই লোকের দাদার বাপের ভুঁড়ি নিয়া আলোচনা করে। শেষে হুট কইরা নাকের প্রসংগ এনে আলোচনা শেষ করে। এদের বেশিরভাগের মগজ আবার রাশিয়া, চীন থেকে আমদানিকৃত। এ দেশের জলবায়ুর সাথে খাপ খায় না। তাই ওদের আলোচনাগুলাও চীনা আলুর মতো ঢাউস সাইজের হয়।

চলেন এবার আমরা আলুর তরকারি খাই। ১৩. বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, "সবগুলো ক্যু এর সাথে আওয়ামীলীগ জড়িত!" কথাটা মিথ্যা না। আওয়ামীলীগকে গর্তে ঢুকানোর জন্যই বেশিরভাগ ক্যু হয়েছে। সুতরাং সবগুলো ক্যু'র সাথে আওয়ামীলীগ জড়িত আছে। ১৪. বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলো একেকটা ক্ষুধার্ত বন্য প্রাণী।

বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তাদের জন্য খুব লোভাতুর খাবার। সবাই যেভাবে হামলে পড়েছে!! ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানীরা এদেশীয় ভৃত্যদের সাথে নিয়ে 'বিশ্বমানের' হত্যাকান্ড চালিয়েছে। 'আন্তর্জাতিক মান' বজায় রেখে বেশ উন্নতমানের ধর্ষনকার্য চালিয়েছিলো। 'নিরপেক্ষ' লুটপাট করেছে (হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে)। নিরস্ত্র বাঙালিরা মৃত্যুর আগে 'আত্মপক্ষ সমর্থন' করে কালেমা পড়ে মরতে পেরেছে।

'মানবাধিকার' বজায় রেখে প্রকৃতির শরীর প্রকৃতিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো। সব রসুনের কোয়ার পুটকীটা আবার যুক্তরাষ্ট্রে। মুক্তিযুদ্ধের সময় নিরীহ পাক সেনাদের এসব 'বিশ্বমানের' 'নিরপেক্ষ' কর্মাকান্ডের যে প্রতিরোধ/প্রতিশোধ এদেশের গেরিলারা করেছে, তার প্রতিবাদ কিন্তু একাত্তরেই জানিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র। বাহ! সবকিছুতো দেখি ঠিকই আছে। আর আমাদের দেশেও যুক্তরাষ্ট্রীয় মানের আচরণ করার প্রতিোগিতা চলছে।

গোলাম আজমরা ঠিকমতো খেতে পাচ্ছেন কিনা? ঠিকমতো ঘুমোতে পারছেন কিনা? উনাদের যত্নাতিতে কোন ব্যাঘাত ঘটছে কিনা? এসব নিয়ে প্রতিযোগীদের চিন্তার শেষ নেই। এসব দেখে বেশ কনফিউজড হয়ে অভিধান নিয়ে বসলাম। খুব আশা করেছিলাম 'কারাগার = যেখানে জামাই আদর করা হয়' লেখা থাকবে। কিন্তু আমি নিরাশ হলাম ১৫. "তোর জন্মের সময়টা অনেক ঘটনাবহুল। তোকে নিয়ে যখন ভাবি, তখন ওইসব ঘটনা নেমে পড়ে চোখের সামনে।

সে সময় এক এক করে ধরা পড়ছিলো রাজাকার আলবদররা। তোর জন্মের আগেই সাঈদী, নিজামী, সাকা, মুজাহিদরা জেলখানায় বন্দী। সবার অপেক্ষা ছিলো গোলাম আজম কবে গ্রেফতার হবে! তুই তখন ৭ মাসের শিশু, ঠিকমতো বসতে শিখেছিস। তখন গ্রেফতার হয়েছিলো এই রাজাকার সর্দার। যখন খিলখিল করে হাসতি, আমার মনে হতো গোলাম আজমকে গ্রেফতারের খুশিতে হাসছিস।

তোর চেহারায় সে সুখবরটা এখনো লেপ্টে আছে। মুক্তিযুদ্ধতো করতে পারিনি, কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় এ দেশটাকে কত যুদ্ধ করতে হয়েছে তাতো দেখেছি। ওই সময় দু'টো বিষয় খুব মনযোগ দিয়ে দেখতাম। তোর বেড়ে ওঠা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে ঘিরে দেশে রাজনৈতিক তৎপরতা। এ বৃদ্ধ বয়সে বয়সে এসে তুই আমার স্মৃতির ডায়েরী।

তুই সামনে আসলে তোর চেহারায় তাকিয়ে একটার পর একটা পাতা উল্টাই আর দেখি আমার যৌবনের বাংলাদেশ! দেশটাকে খুব ভালোবাসি, কিন্তু তুই সামনে থাকলে সে ভালোবাসা কেমন নড়েচড়ে উঠে। সে সময় যেনো একটু বেশিই ভালোবাসি। মৃত্যুর সময় তুই আমার পাশে থাকিস, দূরে কোথাও যাসনে। তাহলে অন্তত দেশপ্রেম নিয়ে মরতে পারবো!" [ বৃদ্ধকালে হয়তো আমার ছেলেকে এভাবেই বলবো! ] ১৬. "তোর জন্মের সময়টা অনেক ঘটনাবহুল। তোকে নিয়ে যখন ভাবি, তখন ওইসব ঘটনা নেমে পড়ে চোখের সামনে।

সে সময় এক এক করে ধরা পড়ছিলো রাজাকার আলবদররা। তোর জন্মের আগেই সাঈদী, নিজামী, সাকা, মুজাহিদরা জেলখানায় বন্দী। সবার অপেক্ষা ছিলো গোলাম আজম কবে গ্রেফতার হবে! তুই তখন ৭ মাসের শিশু, ঠিকমতো বসতে শিখেছিস। তখন গ্রেফতার হয়েছিলো এই রাজাকার সর্দার। যখন খিলখিল করে হাসতি, আমার মনে হতো গোলাম আজমকে গ্রেফতারের খুশিতে হাসছিস।

তোর চেহারায় সে সুখবরটা এখনো লেপ্টে আছে। মুক্তিযুদ্ধতো করতে পারিনি, কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় এ দেশটাকে কত যুদ্ধ করতে হয়েছে তাতো দেখেছি। ওই সময় দু'টো বিষয় খুব মনযোগ দিয়ে দেখতাম। তোর বেড়ে ওঠা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে ঘিরে দেশে রাজনৈতিক তৎপরতা। এ বৃদ্ধ বয়সে বয়সে এসে তুই আমার স্মৃতির ডায়েরী।

তুই সামনে আসলে তোর চেহারায় তাকিয়ে একটার পর একটা পাতা উল্টাই আর দেখি আমার যৌবনের বাংলাদেশ! দেশটাকে খুব ভালোবাসি, কিন্তু তুই সামনে থাকলে সে ভালোবাসা কেমন নড়েচড়ে উঠে। সে সময় যেনো একটু বেশিই ভালোবাসি। মৃত্যুর সময় তুই আমার পাশে থাকিস, দূরে কোথাও যাসনে। তাহলে অন্তত দেশপ্রেম নিয়ে মরতে পারবো!" [ বৃদ্ধকালে হয়তো আমার ছেলেকে এভাবেই বলবো! ] ১৭. মাঝে মাঝে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর সমালোচনা করে স্টাটাস দিতে মন চায়। কিন্তু ভদ্রলোকের কিছু গুনগত পরিবর্তনের পুরস্কার স্বরূপ এ স্টাটাস আর দেয়া হয় না।

অবশ্য ইদানিং যে হারে "আমি রবিনহুড নই" টাইপের কথা বলতেছেন, তাতে বুঝা যাচ্ছে উনি নিজেরে রবিনহুড ভাবছেন। পরে না আবার পাবলিক কওয়া শুরু করে, "ভাই কাদের, আপনি আগের মতো হয়ে যান!" ১৮. ব্রিটিশরা এ ভারতবর্ষকে কয়েকশ টুকরা করে গেলো না কেন?! যে ভারতবর্ষে এক সময় "ব্রিটিশ বয়কট" হয়েছিলো, সেই ভৌগলিক সীমায় এখন "ভারত বনধ" হচ্ছে। আমরা স্যুট হ্যাট পরা মোড়ল থেকে ধুতি পড়া মোড়লের হাতে হস্তান্তর হয়েছি মাত্র। এ অঞ্চলের স্বাধীনতা, উন্নতি, শান্তি কেবল তখনই হবে যখন ভারত টুকরা টুকরা হয়ে যাবে। সে অপেক্ষায় আছি।

এ অঞ্চলের মুক্তির জন্য ভারতে কয়েকটা মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন আছে। ১৯. পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের সবচেয়ে নগ্ন দিক হচ্ছে "সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে অমুক তারকা" টাইপের ঘটনাগুলো। তখন রাষ্ট্রের চাইতে "অমুক তারকা" বেশি শক্তিশালী হয়ে যায়। রাষ্ট্র যেখানে শিশুদেরকে সুবিধা দিতে পারছে না, সেখানে একজন "অমুক তারকা" এসে সুবিধা দিচ্ছেন! ভালো সেন্স অব হিউমার থাকলে এরকম শিরোণাম পড়ে তীব্র হাসিতে ফেটে পড়ে কেঁদেও দেয়া যায়। ২০. ভালো কথা:: নামাজ পড়, রোজা রাখ, কিছু ধর্মকর্ম কর।

নইলেতো দোযখের আগুনে জ্বলবি। অপরদিকে বেহেশতে কত আনন্দ, কত নেয়ামত! হুরপরীদের সাথে নাচবি গাইবি, শরবত খাবি, ফুলের বাগানে কী সুন্দর প্রজাপতি, সুমধুর সঙ্গীত! ধর্মকর্ম না করলে এসব কিছুই পাবি না। খারাপ কথা:: মতিনের মেয়েকে বিয়ে করে কী পাবি? গরীব ঘরের মেয়েরা বড়লোকের বউ হয়ে শয়তান হয়ে যায়। অপরদিকে চৌধুরীর মেয়েটাকে দেখ, যেমন রূপসী তেমনই বড়লোকের মেয়ে। এক বাবার এক মেয়ে।

সব সম্পত্তি মেয়ে একলাই পাবে। বিয়ের পরই তোদেরকে সিংগাপুর বেড়াতে পাঠাবে। একটা বাড়ি এবং গাড়ি বিয়ের আগেই দিয়ে দিবে। আমাদের স্যোশাল স্টাটাসও বেড়ে যাবে। চৌধুরীর মেয়েকে বিয়ে না করলে এসব কিছুই পাবি না।

কিন্তু কথা দু'টা শুনতে প্রায় একই মনে হয়। আত্মসম্মানবোধে ভীষণ লাগে! ছি! কথাগুলো যেমন ছোটলোকি, তেমনই বস্তাপঁচা। ২১. ভাবতেছি এখন অফিস থেকে অন্যদিনের মতো স্বাভাবিকভাবে বাসায় যাবো। অথচ 'জিহাদী সেনা অভ্যুত্থান' যদি হয়ে যেতো, তাহলে আরো আগেই লেজ গুটিয়ে বাসায় যেতে হতো। এখন চলতো কার্ফ্যু।

সাইরেন বাজিয়ে ছুটে যেতো সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান। হয়তো মোল্লাদের মিছিল টিছিলও দেখা যেতো। টিভিতে শুনতাম "সিপাহী জিহাদী জনতার" বিপ্লবের খবর। একেকজন 'জিয়াউর রহমান' কোদাল নিয়ে নেমে যেতেন ঢাকা শহরের ড্রেন পরিষ্কারে। আর উজবুক জনগণ তখন মাতম করে করে বলতো, "আহারে এরকম শাসক জীবনেও দেখিনি! এ শাসকের চেহারায় বাংলাদেশের মানচিত্র দেখা যাচ্ছে!" ২২. যারা বুদ্ধিজীবী হওয়ার জন্য বিতর্ক সৃষ্টি করাকে মোক্ষম কৌশল হিসেবে মনে করেন, তাদের জন্য এখনই সুসময়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে মাত্র একটি বাক্য খরচ করে অপরাধীদের বিচার চান এবং একশ বাক্য খরচ করে তাদের আদর আপ্যায়ন, বিচারিক নিরপেক্ষতা, আত্মপক্ষ সমর্থন, মানবাধিকার এসব নিয়ে গ্যাজাতে থাকুন। ইতোমধ্যে অনেকেই সুফল পেয়েছে, আপনিও পাবেন। ২৩. < ওয়াও! দারুন বলেছোতো! আচ্ছা, তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও! > আমি? আমি বড় হয়ে একজন ফেসবুক বুদ্ধিজীবী হতে চাই। > বাহ! এটাও দারুন বলেছো! ২৪. সব রকমের প্রভু’র রমক এক, ধরন এক। মহান আল্লাহ, শ্রদ্ধেয় আব্বাজান, আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র, সর্ব জনাব, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মহামান্য আদালত...।

মহান, শ্রদ্ধেয়, মহামান্য জাতীয় শব্দগুলো টুপ করে এনে বসিয়ে দিতে হয়। আল্লাহ বলে দিয়েছেন উনাকে মহান বলতে হবে। বাবা শিখিয়েছেন উনাকে শ্রদ্ধেয় বলতে হবে। শিক্ষকরা শিখিয়েছেন উনাদের একান্ত অনুগত ছাত্র হয়ে যেতে। অফিসের কর্তাকে সর্ব জনাব না বললে উনি মাইন্ড করেন।

রাষ্ট্র বলেছে রাষ্ট্রের পতিকে মহামান্য বলতে হবে, আদালতকে মহামান্য বলতে হবে। উনারা বলেছেন তাই উনাদেরকে মহান বানাতে হবে, মহামান্য বানাতে হবে। কিন্তু কেন উনারা মহান-মহামান্য-শ্রদ্ধেয়, সেটা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। মান্য করতে নির্দেশ দিয়েছেতো করতেই থাকো! নইলে অপেক্ষা করতেছে নরক, তেজ্য, টি.সি, চাকুরিচ্যুতি, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, আদালত অবমাননা মামলা! ২৫. জয় বাংলা! জয় গোপালগঞ্জ!! রাজধানীতে কর্মরত ২৫জন উপ পুলিশ কমিশনারের মধ্যে ৩জন গোপালগঞ্জ জেলার, ৩ জন কিশোরগঞ্জ জেলার। এছাড়া আছেন ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, খুলনার।

অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার এবং এসিসহ ৩ জন গোপালগঞ্জের। ঢাকা মহানগরীর ৪১ থানার ওসির মধ্যে কেবল গোপালগঞ্জেরই ৬ জন। এছাড়া বৃহত্তর ফরিদপুরের আছে আরো ৬ জন। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় ডিএমপিতে কর্মকর্তা লেভেলে মাত্র ২জন ছিলেন গোপালগঞ্জের। ২৬. ভারতের দোহাই দিয়ে, আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের দোহাই দিয়ে, বয়সের দোহাই দিয়ে, অথবা অন্য যেকোন কারণে গোলাম আজমের গ্রেফতারের ফলে আপনার মনের কোন এক ছোট্টকোণে কিঞ্চিত বিষাদের জন্ম হয়েছে? ভালো করে চেক করে দেখুন।

যদি এরকম বিষাদ টের পেয়ে থাকেন, তবে ধরে নিন আপনার ভেতর জামায়াতপ্রীতিতো আছেই, পাকিস্তানপ্রীতিও আছে। আমার বিশ্বাস আপনি নিজেকে বাংলাদেশি মনে করেন। ভাইডি, সেক্ষেত্রে দয়া করে নিজের দেশপ্রেম নিয়ে তড়িৎ তদন্ত সেরে ফেলুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। আপনাকে একজন দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি হিসেবে দেখতে চাই। ২৭. ভার্চুয়াল রবিনহুডরা দেখতেছি ড. আসিফ নজরুলের কল্লা কাটতে কোমরে আফগানী গামছা বেঁধে নেমেছেন।

উনারা শুয়োরের সাথে বসবাসের ফতোয়া অস্বীকার করে যাচ্ছেন। এ দেশের বাতাসে শুয়োরের নি:শ্বাস, তাই উনারা নি:শ্বাস নেন না। এ দেশের জলে শুয়োরের স্পর্শ আছে, তাই উনারা জলপাপ করেন না। এখন পর্যন্ত উনাদের হাতে গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, সাকা, ব্লগার ত্রিভুজ, তিনজন শিবির সভাপতিসহ নাম না জানা অসংখ্য শুয়োর মৃত্যুবরন করেছে। মৃত্যুবরন না করে উপায় আছে? রবিনহুডরা যে শুয়োরের সাথে বসবাস করেন না! অব্যাহত শুয়োর নিধনের ধারাবাহিকতায় এবার কল্লা যাবে ড. আসিফ নজরুলের।

তবে নিন্দুকেরা বলে শুয়োর শুয়োরের যায়গায় থাকে, আসিফ নজরুলও তার যায়গায় থাকবে, কেবল রবিনহুডদের পাছার কাপড় থাকে না। পাছাপাছি করতে করতে ওদের পেছনের চামড়াই পাওয়া যাচ্ছে না, কাপড়তো ছাই!! ২৮. প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা, দীর্ঘজীবনী কামনা করলে পররাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা এবং সার্বিক বিষয়টি নিয়ে মশকরা করলে অন্তত একবার স্যরি বলতে হবে। আয়ামস্যরি ম্যাডাম! ২৯. অনলাইনেও প্রচুর শিয়াল সর্দার এবং তাদের পাল দেখা যায়। হুক্কাহুয়া ডাকও শোনা যায় প্রচুর। আমার ধারণা এখানে বিচরণ করা বেশিরভাগ মানুষই বাস্তব জীবনে তথাকথিত শিয়াল সর্দারদের রিসাইকেলবিনের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন বহু আগে।

এসব শিয়াল সর্দার হওয়া যেমন অবজ্ঞার বিষয়, তেমনি সর্দারের পেছনে হুক্কাহুয়ার যোগানদাতা হওয়াও অপমানজনক। তাই খুব খিয়াল কইরা দেখে শুনে বুঝে ভালো দর্শক হোন, স্রোতা হোন। দেখবেন একদিন আপনি নিজেই ভালো নির্মাতা হয়ে যাচ্ছেন। সেখানেই মান, সেখানেই সম্মান। ৩০. আওয়ামী লীগ সরকার ব্যর্থ হলে বিএনপির দোষ দেয়, বিএনপি সরকার ব্যর্থ হলে আ.লীগের দোষ দেয়।

দোষারোপের এ বিষয়টি হাস্যকর পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে বামপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসলে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতার সময় নিজ ব্যর্থতা ঢাকতে প্রথমে দোষ দেবে 'আধিপত্যবাদী' ভারতের, এরপর 'সাম্রাজ্যবাদী' যুক্তরাষ্ট্রের এবং সর্বশেষ 'আধিপত্যবাদী' ও 'সাম্রাজ্যবাদী'র দালালদের। এদেশের মানুষ তখন শিখবে, "হাজার বছর ধরে বাঙালি জাতি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। বাম সরকার নন-সাম্রাজ্যবাদের ঝান্ডা উঁচু করে রেখেছে। " আরো একটু সংযুক্ত করি, "মুক্তিযুদ্ধ নামে একটি ছোটখাটো আঞ্চলিক যুদ্ধ করেই টায়ার্ড হয়ে গেলে চলবে না।

সামনেই বিশ্ব মুক্তিযুদ্ধ। আমেরিকাকে খতম করে বিশ্বকে মুক্ত করতেই হবে। " ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.