আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিমচাঁদের সহি বিবাহ নামাঃ শেষ পর্ব উইথ বাসর রাতের আসল ফটু

পুড়ছিল ওই শ্মশান ভরে কাঠের রাশি, পুড়তে আমি ভালোবাসি, ভালোইবাসি। এই লন প্রথম পর্ব বিয়ার গেইটে গেলাম, গেইট ধরা হইছে । লগের বন্ধু কয় তোর পাগড়ি কই ?? কাম সারাইসে !! পাগড়ি তো কিনা হয় নাই!! আমি কইলাম এইটাই ফ্যাশান , আর পেচগি লাগাইস না । গেইটে দেহি মহা গাঞ্জাম । এয়ারপোর্ট কাওলা সিভিল এভিয়েশন স্কুলে বিয়া ।

দুনিয়ার মাইয়া আর পোলা , সব এগো কলোনীর । দেহি ফিতা লাগাইছে , আমার আরেক দোস্ত পুলক কয় , কাঁচি দেও, টেকা দিতাসি, কয় টেকা ?? গেইটের পোলাপাইন কয় ৫০০০০ টাকা । আমি লগে লগে পিছন দিকে রওনাদিলাম, এই প্রথম জীবনে পিছু হটলাম। সবাই কয় আয় হায় , পোলা যায় কই ?দোস্ত সুমন কয় , টেকা জমাইতে যাইতেছে , এই টেকা জমাইয়া পরে আইসসা ফিতা কাটব । এও টা হইল খেলা, সবাই বিয়ার দিন জোর কইরা ফিতা কাটে , আর আমরা টেকা জমাইতে পিছনে গেলাম গিয়া ।

ময় মুরুব্বিরা আমারে তোয়াজ কইরা ধইরা আনলো , কই কিছু দিয়া ভিতরে ঢুকো । আরেক দোস্ত আট আনা, এক টাকার কয়েন মিলাইয়া টোটাল ২০০০ টেকা বাইর কইরা দিলো । আর মুখে কইলো , যদি এর বেশী টেকা আমাগো কাছে খুইজা পান , তাইলে আপ্নাগো জুতা , আমার গাল । এই দিক খেয়াল করলাম , দোস্ত পুলক ফিতা কাটতে গিয়া , আমার বউর বান্ধবী বেলীর হাত চা চাইপা ধরছে(শালা পুরা লুল ), দুই জনের দিক এ দুই জনের কি রকম দৃষ্টি !! আহহা হা যাই হোক , সিনেমা মঞ্চে উইঠা বইলাম, জীবনে এই ফার্ষ্ট। নার্ভাস হইয়া গেলাম।

(খালি কান্নি দিয়া চাইয়া দেহি , ০১নং মন উদাস করে অন্য দিকে তাকাইয়া আছে )সবাই আমারে দোয়া দিতে আসে , আর আইসসাই কয় , মাথার পাগড়ি কই ?? এত পাগড়ি পাগড়ি শুইন্না , পাশের থেকে কে জানি , তার বহুল ব্যবহারকৃত রুমাল খানা আমার মাথায় বাইন্ধা দিলো (টুপি একখান ছিলো পিছনের পকেটে , কিন্তু সাইযে ছোট্ট) । আমার মনে হয় ,রুমাল মাথায় দেওয়া বর-- এই প্রথা আমার থেকেই শুরু হইছে । ফটকা বান্ধবী গুলা আইসা খালি পাস থেকে গুতা দেয় । একজন কয়,'' বিপ্লব ভাই , আপ্নারে জোশ লাগতেছে "। আমি আর পারলাম না কইলাম,আমার বউ র লগে যায়গা চেঞ্জ কইরা বস, তোমারেই বিয়া করমু ! সে কয় ছিঃ ছিঃ (এই কথা সে আবার তার বান্ধবীরে কইতে ভুলে নাই ।

বাসর রাইতে , আমার বউ কয় ,চরিত্র ঠিক করবা কিনা কও ? আমি তো পুরা বেকুব !) কাজী আইলো , কয় সাক্ষর দেন । এই সময় টেনশন হইলো ভীষণ। স্বাক্ষীর যায়গায় স্বাক্ষর দিতে গেলাম, সবাই হায় হায় কইরা উঠলো । দোস্ত পুলক সবাইরে কয় , কেউ টেনশন নিয়েন না , জীবনে অর প্রথম বিয়া তো, তাই টেনশন হইতেছে , অভ্যাস হইয়া গেলে সব ঠিক হইয়া যাইবো । দোয়া দরুদ পড়া শেষ , শুরু হইলো , জয়েন্ট ফটো সেশন ।

বউ আমার পাসে , হাসি হাসি মুখ । আমার ও হাসি হাসি মুখ । কিন্তু ভিতরে কাহিনী অন্য । বউ দাতের ফাঁক দিয়া কয় , কোন বেকুব রে বিয়া করলাম , বিয়ার দিন পাগড়ি নাই ! আমি ও হাসি মুখে সবার দিকে হায় হেলো করতে করতে চিকন, শয়তানি স্বরে কইলাম , এক টুপি ভুইল্লা গেছি , মাগার অন্য টুপি আনছি । বউ কয় , তোমার শরম করে না , এই সব ভালগার কথা কইতে ? আমি কইলাম, ভালগার ??কি কও তুমি ?? পিছনের পকেট থেকে হাতরাইড়া টুপি বাইর করলাম ।

খাওন-দাওন শেষ। বাসর রাইত হইবো । গিয়া দেখি সেইখানে ও মহা প্যাচাল । কত ফটো সেশন, আর কত নিয়ম কানুন । দোস্তরা সব চইল্লা গেছে , মাগার আমি তো টেনশনে ।

এর আগে ও টেনশন হইছে , খালি পায়ে বাসর ঘরে ঢুকছি , বিয়ার আসর থেকে জুতা চোরে লইয়া গেছে । বেইজ্জুতির এক শেষ । গেইটে টেকা কম দিছি , এই জন্য নাকি এই কাহিনী হইছে । মুরুব্বিরা কইলো , জামাই বউ মিল্লা এক লগে নামায পড়তে হইবো । এইটা সুইন্না তো আমি ভীষণ শরম পাইলাম , ইহ জীবনে মাইয়াগো লগে নামাজ পড়ি নাই ।

এইডা কেমন কথা ?? পড়তে হইলো , আয়নায় নাকি মুখ দেখতে হয় । দেখলাম , লগে বউ রে এক মহা ভেংচি কাটলাম । বাকী কাহিনী খুব একটা মনে নাই , আর তাছাড়া এখন চা খামু , সামুতে এতো সময় দিয়া লাভ আছে নাকি কোনো ?? ভালো কথা , এই লন ফুটূ, ১৯৯৬, ০২রা জুন . . ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।