আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“শরীয়তে দু’ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর ব্যতীত অন্য কোনো ঈদ নেই-” তাদের এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ।

“বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায়। বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে। বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো। অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না। কেননা, সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়, তারা আর কিছুই করে না, তারা আত্মবিনাশের পথ পরিস্কার কিছুক্ষন আগের এই পোষ্টটি ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রন্তি ছড়াচ্ছে।

ধরা পড়ার ভয়ে মন্তব্য মডারেট করে রেখেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, (হে আমার হাবীব!) আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও রহমত অর্থাৎ আমাকে পাওয়ার কারণে তোমাদের উচিত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা। অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী পালন করা। ইসলামী শরীয়তে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়াও আরো ঈদ রয়েছে। যারা বলে, ‘দুই ঈদ ব্যতীত আর কোনো ঈদ নেই’- তারা কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ অস্বীকারকারী।

আর যারা কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ অস্বীকারকারী তারা শরীয়তের দৃষ্টিতে কাফিরের অন্তর্ভুক্ত। যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর দিনটিই প্রকৃতপক্ষে সবচেয়ে বড় ঈদ বা খুশির দিনের অন্তর্ভুক্ত। যারা বলে থাকে, ‘শরীয়তে দু’ঈদ ব্যতীত অন্য কোনো ঈদ নেই’ তারা প্রকৃতপক্ষে কিল্লতে ইলম, কিল্লতে ফাহম (কম জ্ঞান, কম বুঝ) অর্থাৎ কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ হওয়ার কারণেই এ কথা বলে থাকে। কারন, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা অর্থাৎ বছরে দু’ঈদ ব্যতীত আরো অনেক ঈদ যে রয়েছে তা কুরআন শরীফ-এর একাধিক আয়াত শরীফ ও অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত। সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর অর্থাৎ কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪৩৩ হিজরী’র গুরুত্ব ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা ও ফাযায়িল-ফযীলত আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা ইউনুস-এর ৫৮ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, (হে আমার হাবীব!) আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও রহমত অর্থাৎ আমাকে পাওয়ার কারণে তোমাদের উচিত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা। অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী পালন করা। ” এ আয়াত শরীফ দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে তাশরীফ আনার পবিত্র দিনটিই সবচেয়ে বড় ঈদের দিন বা খুশির দিন হিসেবে সাব্যস্ত হলো। মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ‘ইবনে মাযাহ ও মুয়াত্তা শরীফ’-এর বরাত দিয়ে বলেন, হযরত উবাইদ ইবনে সাব্বাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে মুরসাল হিসেবে বর্ণিত। রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন জুমুয়ার দিনে ইরশাদ করেন, হে মুসলমানগণ! এই যে জুমুয়ার দিন, এ দিনকে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

সুবহানাল্লাহ! মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ‘তিরমিযী শরীফ’-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম’ এ আয়াত শরীফটি শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন। তখন উনার নিকট এক ইহুদী ছিলো সে বলে উঠলো, ‘যদি এই আয়াত শরীফ আমাদের ইহুদী সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হতো আমরা আয়াত শরীফ নাযিলের দিনটিকে ‘ঈদের দিন বলে ঘোষণা করতাম। ’ এটা শুনে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বললেন, এ আয়াত শরীফ সেই দিন নাযিল হয়েছে যেদিন এক সাথে দু’ঈদ ছিল- (১) জুমুয়ার দিন এবং (২) আরাফার দিন। ” অর্থাৎ পুনরায় ঈদ ঘোষণা করতে হবে না। কেননা ঈদের দিনেই এ আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ উম্মতে হাবীবীর জন্য জুমুয়ার দিনের সাথে সাথে আরাফার দিনকেও ঈদের দিন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। বুখারী ও মুসলিম শরীফ-এও হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফ-এ আরাফার দিনকে উম্মতে হাবীবীর জন্য ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ‘বুখারী, মুসলিম, মিশকাত শরীফ’-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “রোযাদারের জন্য দুটি খুশি রয়েছে। একটি তার ফিতর বা ইফতারে সময় এবং অপরটি তার রব তায়ালা উনার সাথে সাক্ষাতের সময়। ” এ হাদীছ শরীফ-এ রোযাদারের জন্য দুটি খুশি বা ঈদের কথা বলা হয়েছে।

একটি হচ্ছে তার ইন্তিকালের পর আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাতের সময়। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তার ফিতর বা ইফতারের সময়। আর ফিত্র বা ইফতার হচ্ছে দু’প্রকার (১) কুবরা, (২) ছুগরা। কুবরা হচ্ছে ঈদুল ফিতর যা হাদীছ শরীফ দ্বারা ঈদের দিন হিসেবে প্রমাণিত। আর ছুগরা হচ্ছে রোযাদার প্রতিদিন মাগরিবের সময় করে থাকে।

এটা প্রতি বছরে ২৯ দিন অথবা ৩০ দিন হয়ে থাকে। মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইফতারীয়ে ছুগরা ফরয রোযা হিসেবে বছরে ২৯ বা ৩০ দিন। আর সুন্নত রোযা হিসেবে কমপক্ষে মুহররম মাসে ৯, ১০ অথবা ১০, ১১ তারিখ ২টি এবং তার সাথে আরো ১টি মোট ৩টি, শাওয়াল মাসে ৬টি, যিলহজ্জ মাসে ১ হতে ৯ তারিখ পর্যন্ত ৯টি এবং অন্যান্য মাসসমূহে ৩টি করে ২৪টি; সর্বমোট ৪২দিন। অর্থাৎ ৪২টি ঈদ। মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “প্রত্যেক মু’মিনের জন্য প্রতি মাসে চারটি ঈদ অথবা পাঁচটি ঈদ রয়েছে।

” মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ মু’মিনের জন্য প্রতি মাসে ৪টি বা ৫টি ঈদের কথা বলা হয়েছে। কারণ, প্রতি মাসে সোমবার শরীফ ৪টি বা ৫টি হয়ে থাকে। আর শুক্রবারও প্রতি মাসে ৪টি বা ৫টি হয়ে থাকে। অর্থাৎ ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর- এ দুটিই নয়, আরো অনেক ঈদ রয়েছে। কাজেই, শুক্রবার মু’মিনদের ঈদের দিন।

আরবী বা চন্দ্র বছর অনুযায়ী এক বছরে প্রায় ৫০টি শুক্রবার হয়ে থাকে। সে হিসেবে এ ৫০টি দিনও মু’মিনদের জন্য ঈদের দিন। আবার সোমবার শরীফ দিনও মু’মিনদের ঈদের দিন। চন্দ্র বছর অনুযায়ী এক বছরে প্রায় ৫০টি সোমবার শরীফ হয়ে থাকে। সে হিসেবে এ ৫০টি দিনই মু’মিনদের জন্য ঈদের দিন।

আর আরবী বছরে ১২টি মাসের মধ্যে একটি মাস হচ্ছে রমাদ্বান শরীফ। যা ২৯ বা ৩০ দিনে হয়ে থাকে। এবং এ ২৯ বা ৩০ দিন রোযাদার মু’মিনের জন্য খুশির দিন বা ঈদের দিন। সুন্নত রোযার ৪২ দিন খুশির বা ঈদের দিন। মু’মিনের জন্য আরাফার দিন ঈদের দিন বা খুশির দিন।

১২ই রবীউল আউয়াল শরীফই সবচেয়ে বড় ঈদের দিন বা খুশির দিন। কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ দ্বারা যেভাবে দু’ঈদ ছাবিত হয়েছে বা রয়েছে ঠিক একইভাবে অন্যান্য ঈদ এবং ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সাইয়্যিদু ঈদে আ’যম ও সাইয়্যিদে ঈদে আকবর হিসেবে ছাবিত বা প্রমাণিত হয়েছে। মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মু’মিনের জন্য সর্বমোট ঈদের দিন বা খুশির দিন হলো- শুক্রবার ৫০ দিন, সোমবার ৫০ দিন, আরাফার ১ দিন, ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ ১ দিন, ঈদুল ফিত্র ১ দিন, ঈদুল আযহা বা কুরবানীর ৩ দিন, ফরয রোযার ২৯ বা ৩০ দিন, সুন্নত রোযার ৪২ দিন সর্বমোট ১৭৭ বা ১৭৮ দিন। অর্থাৎ বছরের প্রায় অর্ধেক দিনই মু’মিন-মুসলমানের জন্য ঈদ বা খুশির দিন। সুবহানাল্লাহ! মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যারা বলে “শরীয়তে দু’ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর ব্যতীত অন্য কোনো ঈদ নেই-” তাদের এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ।

প্রকৃতপক্ষে কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ-এর আলোকে মু’মিন, মুসলমানগণের জন্য ঈদ শুধুমাত্র দুটিই নয়, আরোও রয়েছে। কাজেই ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর-এ দু’ঈদ ব্যতীত অন্যান্য ঈদকে অস্বীকার করার অর্থ হলো, কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফকেই অস্বীকার করা। আর যারা কুরআন শরীফ, সুন্নাহ্ শরীফকে অস্বীকার করে তারা মু’মিন-মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত নয় বরং কাফির। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।