আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট

আমি এক জন অতি সাধারন মানুষ জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো সেই সত্যকেই তুলে ধরেছিল। ইতিহাসও সেই সত্যকেই বহন করবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের বিপ্লব দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছিল। সমসাময়িক দেশ বিদেশের প্রতিক্রিয়াতেই তা লেখা রয়েছে। ইতিহাসেও তা থাকবে।

আজ আর একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে,৪০বছর আগে স্বাধীনতার যাত্রাকাল থেকে ক্ষমতাসীনরা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা না করত, যদি সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা থাকত, যদি বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার, বাক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক কার্যক্রম ও সংগঠনের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকত, যদি অন্যায়-অত্যাচার, হত্যা-নির্যাতন না হত, যদি সরকার পরিবর্তনের নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল থাকত তাহলে দুর্বিষহ যন্ত্রণা থেকে নাজাত পাওয়ার জন্য ’৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের প্রয়োজন হত না। ১৬ই আগষ্ট ১৯৭৫ দৈনিক ইত্তেফাকে ‘ঐতিহাসিক নবযাত্রা’ নামে সম্পাদকীয়ের অংশবিশেষ পাঠকদের জন্য তুলে ধরছি:- “দেশ ও জাতির এক ঐতিহাসিক প্রয়োজন পূরণে ১৫ই আগষ্ট শুক্রবার প্রত্যুষে প্রবীণ জননায়ক খন্দোকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সরকারের সর্বময় ক্ষমতা গ্রহণ করিয়াছেন। পূর্ববর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত হইয়াছেন এবং এক ভাবগম্ভীর অথচ অনাড়ম্ভর অনুষ্ঠানে খন্দোকার মোশতাক আহমদ রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করিয়াছেন। দেশের আইন-শৃংখলাকারী সংস্থাসমূহ যথা: বাংলাদেশ রাইফেলস, পুলিশ এবং রক্ষীবাহিনী প্রধানগণও নতুন সরকারের প্রতি তাদের অকুন্ঠ আনুগত্য জ্ঞাপন করিয়াছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় জীবনে এই পরিবর্তনের এক বিষাদময় পটভূমি রহিয়াছে।

ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও অসংখ্য মা-বোনের পবিত্র ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা একদিন যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম সেখানে আমাদের আশা ও স্বপ্ন ছিল অপরিমেয়। কিন্তু বিগত সাড়ে তিন বছরেরও উর্ধ্বকালে দেশবাসী বাস্তব ক্ষেত্রে যাহা লাভ করিয়াছে তাহাকে এক কথায় হতাশা ও বঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের সত্যিকার আশা-আকাংখা রূপায়নে খন্দোকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে সেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব নিতে আগাইয়া আসিতে হইয়াছে। তারও কারণ ছিল। পূর্ববর্তী শাসকচক্র সাংবিধানিক পথে ক্ষমতা হস্তান্তরের সমস্ত পথ রুদ্ধ করিয়া রাখিয়া সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপকে অনিবার্য করিয়া তুলিয়াছিল।

কিন্তু ইতিহাসের গতিকে কোনদিন ক্ষমতা লিপ্সার বাধ দিয়া ঠেকাইয়া রাখা যায় না। আজকের এই ঐতিহাসিক মুহুর্তে আমাদের দায়িত্ব অনেক। বাংলাদেশের এক মহা ক্রান্তিলগ্নে জননায়ক খন্দোকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী যে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করিয়াছে তাহাকে সুসংহত করিতে হইলে জনগণের প্রতি অর্পিত ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে আমাদের সকলকে আজ ঐক্যবদ্ধভাবে আগাইয়া যাইতে হইবে। ” ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।