আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল্লাহকে কেন তার নিজের নাম ছাড়া ভগবান বা গড নামে ডাকা যাবেনা

► ভগবানের পরিচয়ঃ --> হিন্দু সম্প্রদায় শ্রী কৃষ্ণকে ভগবান নামে অভিহিত করে। ভগবান প্রয়োজনে পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নরূপে পিতার ঔরসে মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করে। শ্রীকৃষ্ণ বলেন, “হে অর্জ্জুন ! যে যে সময়ে ধর্ম্মের পতন আর পাপের প্রাদুর্ভাব হয়,সেই সেই সময়ে আমি জন্ম লইয়া থাকি। এইভাবে পাপীদের বিনাশ করিতে (শাস্তি দিতে)আর সৎ লোকদের বাঁচাইতে এবং ধর্ম্মকে আবার প্রতিষ্ঠিত করিতে যুগে যুগে আমি জন্মগ্রহণ করি। ” [/sb(গীতা, ৪র্থ অধ্যায় জ্ঞানযোগঃ ৭-৮)।

ভগবান একবার রাম নাম ধারণ করে রাজা দসরথের ঔরসে জন্মগ্রহণ করেছিল। --> ভগবান কে দর্শন করা সম্ভব। শ্রীকৃষ্ণ বলেন, “অনন্য ভক্তি দ্বারা আমি প্রত্যক্ষ করতে, জানতে ও প্রবেশের জন্য সুলভ। ” (গীতা, ১১ অধ্যায় বিশ্বরূপ দর্শনযোগঃ ৫৪) --> ভগবান এর স্ত্রীলিঙ্গ ভগবতি। ► God এর পরিচয়ঃ --> God হল খ্রিস্টানদের মতে সৃষ্টিকর্তার নাম যার একটি সন্তান আছে নাম যিশু।

বাইবেল এ আছে, যিশুর জন্মের আগ মুহর্তে এক দেবদূত এসে মেরি কে বলে, তার সন্তানের পরিচয় হবে গডের সন্তান হিসেবে। “...So the holy one to be born will be called the Son of God” (লুক- ১:৩৫) । --> God এর স্ত্রীলিঙ্গ Goddess. এর বহুবচন Gods. ► আল্লাহর পরিচয়ঃ --> আল্লাহর কোন জন্ম নেই, মৃত্যুও নেই যেমন আছে হিন্দুদের ভগবানের। গডের মত তাঁর কোন সন্তানও নেই। পবিত্র কোরআনে তিনি নিজের পরিচয় দিয়েছেন- “বল তিনিই আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়।

আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষি নন। তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি"। (সূরা ইখলাসঃ ১-৩) । --> ভগবানকে যেমন দর্শন করা যেতে পারে, আল্লাহকে কখনো কেউ দর্শন করতে পারেনা। আল্লাহ বলেন- “দৃষ্টিশক্তি তাঁকে (আল্লাহকে) দেখতে অক্ষম কিন্তু তিনি দৃষ্টিকে আয়ত্ব করে নেন"।

(সুরাঃ আন’আমঃ১০৩) । --> আল্লাহ এমন ১টা শব্দ যার কোন অনুবাদ, লিঙ্গান্তর বা বহুবচন হতে পারেনা। সুতরাং কখনই আল্লাহকে তার নিজের ও অন্য গুনবাচক নাম ছাড়া অন্যভাবে ডাকা যাবেনা। আল্লাহ বলেন, “আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব সুন্দর সুন্দর নাম। সুতরাং সেই নাম ধরেই তাকে ডাক।

আর তাদেরকে বর্জন কর যারা তার নাম বিকৃত করে। ” (সূরা আল-আরাফঃ ১৮০) ► অনেকে প্রশ্ন করেন, আল্লাহকে যদি কেউ দেখতে নাই পায়, তাহলে মেরাজে রাসুল (সঃ) তো আল্লাহকে দেখেছেন। আবার অনেকে বলেন, আল্লাহ্ শব্দটা তো এসেছে প্রাচীন এক আরবীয় দেবতার নাম থেকে এবং মক্কা বিজয়ের আগে কাবায় যে ৩৬০টি মূর্তি ছিল তার একটির নাম ছিল আল্লাহ। প্রথমত, অনেকে বলে থাকে যে মিরাজে নবী (সঃ) এর সামনে থেকে আল্লাহ তার নুরের পর্দা সরিয়ে দেন এবং নবী (সঃ) আল্লাহ্‌কে দর্শন করে। এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও জাল কথা।

(সুত্রঃ জঈফ ও জাল হাদিস- আল্লামা নাসিরুদ্দিন আলবানি)। মেরাজে আল্লাহ্‌কে রাসুল (সঃ) দেখেননি। আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, “যে বলল মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ্‌কে দেখেছে, সে মিথ্যা বলল। ” (সহিহ বুখারি, হাদিস নং- ৬৮৩২)। দ্বিতীয়ত, আল্লাহ নামটি সত্যি অনেক প্রাচীন নাম।

কারন দুনিয়ার প্রথম মানুষ- আদম (আঃ) ও হাওয়াকে আল্লাহ-ই এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তারা আসার পর তাদের সন্তাদেরকে সেই একক সৃষ্টিকর্তা “আল্লাহ”-র পরিচয় শিক্ষা দেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে শয়তানের প্ররোচনায় বিভিন্ন ধর্ম সৃষ্টি হয়। ধর্ম ভিন্ন হলেও তারা জানত সৃষ্টিকর্তা মানেই তার নাম আল্লাহ। তাই তারা যাকেই তাদের উপাস্য মনে করত, তাকেই আল্লাহ নামে ডাকতো।

সময়ের প্রেক্ষিতে সাথে তারা আল্লাহর অংশীদারও বানায়। এরপর মানুষ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পরলে স্থানভেদে “আল্লাহ” নামটি বিকৃত হয়ে বিভিন্ন হয়ে যায়। প্রাচীন সিমেটিক, কালদানীয় ও সুরইয়ানী ভাষায় “আল্লাহ” শব্দটি “আলাহিয়া”, প্রাচীন হিব্রু ভাষাতে “উলুহ” নামে ডাকা হত। কিন্তু ভাষাগোষ্ঠীর প্রত্যেকটি শাখাতেই সামান্য রূপান্তর ভেদে আল্লাহ কথাটি এক, অদ্বিতীয়, অনন্ত উপাস্য সত্তার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দেখা যায় আরবের যারা মূর্তিপূজক ছিল তারাও আল্লাহকে বিশ্বাস করতো।

মুখে তারা আল্লাহর নাম বেশ শ্রদ্ধার সাথেই উচ্চারণ করতো। কিন্তু তাদের বিশ্বাস ছিল, আল্লাহর কাছে পৌঁছানোর মাধ্যম হলো এসব মূর্তি। কিন্তু, ইসলাম ও কুরআন যে আল্লাহর পরিচয় আমাদের দেয়, সেটাই হল প্রকৃত আল্লাহর পরিচয় যা সেই অতি প্রাচীনকালে হযরত আদম (আঃ) তাদের সন্তাদের দিয়েছেন। তৃতীয়ত, আমরা সবাই কিভাবে নামাজ পরব, কিভাবে খাব, কাজ করবো সব কিছুতেই রাসুল (সঃ) এর সুন্নাহ অনুসরন করি। তো, রাসুল (সঃ) কি কখনো আল্লাহ্‌কে গড বা ভগবান বলে ডেকেছেন এমন হাদিস কেউ দেখাতে পারবে? যদি হাদিসে থাকতো তাহলে আমরাও আল্লাহ্‌কে গড, ভগবান বলতাম।

যেখানে রাসুল (সঃ) যা বলেননি, আমরা কেন তা বলব ► ইসলামে ধূমপানের বিধান জানতে হলে, আমার এর আগের ব্লগ- Click This Link ► তাবলীগ যেভাবে মুসলমানদের ধ্বংস করছে- http://www.somewhereinblog.net/blog/taraki/29530105 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.