আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদ্যুতের দাবীতে উত্তাল সারাদেশ এর সাথে গ্যাস ও পানির সমস্যা ঢাকাবাসির ভোগান্তি বাড়িয়েছে আরেক ধাপ

অরুণালোক বিদ্যুতের দাবীতে উত্তাল সারাদেশ এর সাথে গ্যাস ও পানির সমস্যা ঢাকাবাসির ভোগান্তি বাড়িয়েছে আরেক ধাপ তৈয়ব খান এই আছে তো এই নেই। দিনে রাতে প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ একবার আসছে আবার যাচ্ছে। এ যেন ছেলেবেলায় বইয়ে পড়া “ফুয়াদের গল্প বলা”Ñএর চড়–ই পাখির চরিত্র, ফুরুৎ আর ফুরুৎ। ফুরুৎ থামানোর দাবীতে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ কার্যালয় ঘেরাও, ভাঙচুর, মিছিল, রাজপথ অবরোধসহ বিক্ষোভ চলছে। ফুরুতের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার নওহাটায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাজশাহী অঞ্চলের সদর দপ্তরে হামলা চালায় এলাকাবাসী।

বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসীর হামলা ঠেকাতে চারজন আনসার সদস্যরা আহত হয়েছেন। নাটোর জেলার লালপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলাবাসী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিস ভাঙচুরসহ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ করে থাকে দুই ঘণ্টা। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কসবায় আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে লাকসাম উপজেলার বিক্ষুদ্ধ জনতা কুমিল্লা চাঁদপুর সড়ক অবরোধ করে।

একই দিনে লালমাই সোনাইমুড়ি সড়ক অবরুদ্ধ করে মনোহরগঞ্জের বিক্ষুব্ধ জনতা। একই ঘটনা ঘটে ময়ময়সিংহ জেলার বিভিন্ন স্থানে। স্থান ভিন্ন হলেও মানব জীবনের চালচিত্র একই রকম দেখা যায় ঝালকাঠিতে। আর ঢাকার কথা তো বলাই বাহুল্য। ঢাকায় তো শুধু বিদ্যুৎ সমস্যা হলে কথাই ছিলো না।

এখান নাগরিক জীবন আরও দুর্বিসহ। পানির জন্য হাহাকার শোনা যাচ্ছে ঢাকার এখানে সেখানে, এ যেন মরু কারবালা। ভূক্তভোগিরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে মিছিল করছে। রমজান মাস চলছে। নাগরিক সমস্ত সুবিধা বঞ্চিত ঢাকাবাসীকে অন্তত এফতারের সময় একগ্লাস পানিও হাতে তোলে দেওয়া না যায় তবে সরকার পরিচালনার নামে এরকম প্রহসনের দরকার নেই।

এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত লেখক সুকুমার রায়ের ‘ব্যাঙের রাজা’র কাহিনী মনে পড়ে যায়। ব্যাঙদের জন্য ব্যাঙের রাজারই দরকার, অন্য কিছু নয়। গ্যাসের চাপ ঠিক মত না থাকায় এক গৃহবধু এসে অভিযোগ জানিয়ে গেলেন। তিনি গতকাল ঠিকমত এফতার তৈরি করতে পারেন নি। এটা বড়ো দুঃখজনক।

বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণে পানির যোগান দিতে পারছে না ঢাকা ওয়াসা। শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে সারা দেশের। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই বলেই মনে হচ্ছে। বিদ্যুতের এই দুর্বিসহ যন্ত্রণার মাঝেই শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান। অবস্থার প্রেক্ষিতে যা মনে হচ্ছে তাতে রমজানেও ভোগান্তি কমবে না।

যদিও পাওয়ার ডিভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানের আশ্বাস পাওয়া গেছে যে পবিত্র রমজানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সহনীয় রাখতে প্রয়োজনীয় মেরামতি শেষে ঘোড়াশালে ১৮০ মেগাওয়াট, আশুগঞ্জে ১৪০ মেগাওয়াট ও বড়পুকুরিয়ায় ৯০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি ইউনিট চালু হচ্ছে। তার এ আশ্বাস যেন বাস্তবে রূপ নেয় এটা সারা দেশবাসীর চাওয়া। বাংলাদেশে দিন দিন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় যোগান কম এ কথা সবাই জানে। কিন্তু যোগান সত্যিকার অর্থেই কতটা কম তার সঠিক চিত্রটা দেশবাসীর জানা নেই।

এ বিষয়টি নিয়ে প্রচার মাধ্যমগুলোতে খোলাখুলি আলোচনা হওয়া দরকার। তাতে ভাঙচুরের মতো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কেননা জাতীয় সম্পদের ক্ষতি কোনদিনও কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। বিদ্যুতের সমস্যায় অতিষ্ঠ হয়ে যারা সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালিয়েছে তাদের ভেতর জাতীয় সম্পদ প্রীতি আছে বলে মনে হয় না। এ যেন বিড়ালের রাগ বেড়ার সাথে।

প্রতিবাদ জানানোর সুন্দর ভাষা আছে, সুন্দর উপায় আছে। আমাদের উচিত ভাঙচুর বাদ দিয়ে সে সবের চর্চা করা। পরিচিতি লেখক, কবি ও সাংবাদিক ই-মেইল ঃ ধঁৎড়হধষড়শ৭০@ুধযড়ড়.পড়স ঠিকানা ঃ স্টাফ রিপোর্টার সাপ্তাহিক ঢাকা পোস্ট (ইংরেজি), পাক্ষিক তৃতীয় বাংলা (বাংলা) ক ৫৪/১, বারিধারা নর্থ (নদ্দা), গুলশান, ঢাকা- ১২১২ বারিধারা, নদ্দা, ঢাকা মোবাইল ঃ ০১১৯১১৫৬৮৭৬ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.