আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চেরাগের জ্বিন....

সাপের শরীর হয়ে আঁধারের গাছ/ কুয়াশার বন্যায় ডুবো দেবী মাছ! .......... .............. চেজি কে ডাকবো কিনা ভাবছি। অতীত বর্তমান ভূত ভবিষ্যত জানতে হলে তো চেজিই পারফেক্ট। ও আমার খুব অনুগত! ছোট্ট আ্যন্টিক্স কালারের চেরাগ টা কোলের উপর নিয়ে আস্তে আস্তে ডান হাতের তর্জনী দিয়ে পেটের অংশের কাছটাতে বুলিয়ে দিলাম। গত বার্থডেতে যখন ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রথমবার চকলেটের সাথে এই চেরাগটা ছোট দাদু পাঠালো। আমি তো খুশিতে লাফিয়েছিলাম।

কেন যেন আমার কোনো বন্ধু নেই। গল্পের বই আর পড়ার বই, সারাক্ষন বইয়ের ভেতর নাক ডুবিয়ে থাকি বলে আম্মু বলে আমার নাকি দিন দিন নাকটা চাইনিজদের মত হয়ে যাচ্ছে। আমি খুব রাগ করি। কিন্তু বলিনা কিছু। আম্মুকে আমার ভিলেন মনে হয় তো তাই চুপ করে থাকি।

বাবা তো আর সারাক্ষন বাসায় থাকেনা। আমার বাবা হিরো। বাবার অনেক ছবি আছে। পাখি মেরে হাতে ঝুলিয়ে, ঘাড়ে নিয়ে কত রকম করে তোলা ছবি! কদিন ধরে আমি বেশ লুকিয়ে লুকিয়ে উপন্যাস পড়া শুরু করেছি। ঝামেলা আছে আম্মু টের পেয়ে গেলে আমাকে আস্ত রাখবেনা।

আচ্ছা এখনো কি আমি বাচ্চা নাকি! ক্লাসে রাইসা, মিতি , নুশা ওরা কত রকম ফিশফিশ করে বড়দের গল্প বলে! আমি কাছে গেলেই চুপ করে যায় আর মুখ টিপে হেসে এ ওর দিকে তাকায়। আমি অবশ্য অনেক কিছুই শুনে ফেলেছি,এমন কত কি জানি আমি । তবে ভান করি কিছুই জানিনা। গল্পের বইয়ের চরিত্ররা আমার সারাক্ষনের সঙ্গী! চেরাগের জ্বিন দরজার বাইরে টোকা দিয়ে বলল ম্যাম আসবো? চেজির এই ম্যানারটা আমার আবার খুব পছন্দ! সে তো চেরাগের মধ্যে থেকেই বের হয়ে সামনে আসতে পারে। ইনফ্যাক্ট তাই হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু না সে তা করবেনা। রক স্টাইলের একটা মাথা চাপা হ্যাট! খুলে হাতে নিয়ে হোটেলের ওয়েটারের মত ঋজু একটা ভঙ্গি করে অভিবাদন জানালো। কতবার যে বলেছি এসব ঢং এর দরকার নাই। সে চোখ টিপে একটা হাসি দিল। বুঝলাম দুষ্টুমি করে সে মজা পায়! চেজি শোনো! আজ সকালে যখন ম্যাথ ম্যাম ক্লাসে ঢুকছিল তখন নুশা তড়িঘড়ি করে একটা পুরোনো কাগজ তার ব্যাগে ঢুকালো।

সেটা কি আমি দেখতে চাইতে পারি? নাকি তুমি বলবে প্রাইভেসি লংঘনের অপরাধে আমার শাস্তি হওয়া উচিত! চেজি ঠোঁট চিপে কিছুক্ষন পায়চারী করলো ঘরের এ মাথা থেকে ও মাথা। আমি বসে বসে দেখলাম। তারপর ধপ করে থেমে গেল, ম্যাম ওটা কেন দেখতে চান? আপনি কি সন্দেহ করছেন? আমি আমতা আমতা করে বললাম না মানে ইয়ে ওর রেজাল্ট শিট হতে পারে বোঝোই তো চেজি। ও যদি আমার থেকে ভাল রেজাল্ট করে আর আমি দেখে ইন্পায়ারড হই তাহলে আম্মু কত খুশি হবে। তাইনা বলো! মুখটাকে যথাসম্ভব করুন করার চেষ্টা করলাম।

বুঝলাম এই ভুকিচুকি ধরার মত ব্রেইন চেজির হবেনা। মান্ধাতা আমলের জ্বিন! পড়ালেখার ব্যাপার কি আর মাথায় ঢুকবে! মাই গড! চেজি হাসলে যে কি সুন্দর লাগে! এক গাল হেসে চেজি বলল ম্যাম আমি কিন্তু আপনার মনের ভেতর ঢুকতে পারি। আমি জিবে কামড় দিলাম! এমন মানুষের মত বিহেভ করে আমি মাঝে মাঝে ভুলেই যাই যে ও চেরাগের জ্বিন! ................. প্রিয় শরৎ, এখন একটি চিঠি লেখার সময় হয়েছে আমাদের। লেখাটি আমি লিখতে পারি তোমার জন্য। এমন ভাবে লিখতে পারি পৃথিবীর সবার জন্য উন্মুক্ত করা যায় আবার শুধু তোমার দু চোখের জন্য লেখা যায় একটি চিঠি।

আমি জানি তুমি শুধু তোমার জন্য চিঠি চাইবে। গোপন খুব গোপন একটি চিঠি। শুধু আমাদের কথা থাকবে। সত্যি বলতে কি তোমাকে ভাবলে আমার বৃষ্টির সেই বিকেল মনে পড়ে। তোমার রেজাল্ট হয়েছে।

এক ছাতার নিচে তুমি আর আমি। পেছনে আমার আরো দুটো বান্ধবি। আরেক ছাতার নিচে। আমরা খেতে যাচ্ছিলাম। কিছু একটা খাব বলে সে উত্তেজনা নয়, বরং এক সাথে থাকাটায়, সময় কাটানোটায় তখন ছিল আনন্দের।

একটা ঝাপড়া হোটেলে ঢুকে আমার মনে নেই নিমকি কিমবা কিছু একটা খেয়েছেলাম। শুধু মনে আছে বৃষ্টির ছাঁটে ভিজে যাব বলে দুজনে খুব কাছাকাছি এক ছাতার নিচে। এরপর পাবলিক লাইব্রেরী! তোমাকে ভাবলে আমার আরেকটি রাতের কথা মনে আসে জানো? সেদিন জোছনা ছিল। ভীষন আর তুমুল জোছনায় তুমি আর আমি উঠোনে বসে আছি। সেজমাদের বাইরের উঠোনটাতে তখন একটা রূপকথার গাড়ি।

জানো? সে গাড়িতে চড়ে দিব্যি বেড়িয়ে আসা যায় অন্যরকম একটা দেশ থেকে। ভুঁই চাঁপার গন্ধ আর বকুল বিছানো কোনো পথ! তোমার বাড়ি থেকে আম্মা বারবার ডাকছিল। আমার ফিরতে ইচ্ছে করছিল না। তখন আমরা অযথা কথা বলতাম। অযথা হাসতাম।

কি আনন্দময় ছিল সময়ক্ষেপন। আসলে তোমার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলোকে জীবনের শ্রেষ্ঠসময় বলতে আমার একটুও দ্বিধা নেই। তোমার ব্যাপারে আমার জেলাসি ছিল দেখার মত। তপনের সাথে তোমার সময় কাটানো যেমন আমি সহ্য করতে পারতাম না, তেমনি কোনো মেয়ের কথা তোমার মুখে সহ্য করাও ছিল আমার জন্য কঠিন। শুধু তুমি বলছো বলেই ভাল লাগতো আমার।

তোমাকে ব্যস্ত রাখা ছিল আমার আনন্দ। লিলি আপুর বাসায় গিয়ে তোমার গলা জড়িয়ে বনহুরের গল্প শুনছি। তুমি কি জানতে এই মুগ্ধতা আমার বালিকা বেলার প্রেম? কেমন অসম একটা সম্পর্ক! আমি জানি আমি এখন এসব অন্য নাম দিলেও তখন বড় শুদ্ধ ছিল সে আনন্দেরা। তুমি ছিলে এমন একজন যার কথা বলতে আমার ভাল লাগতো। ভাবতে ভাল লাগতো।

আর এ নিয়ে অন্যেরা আমাকে কথা শোনাতে ছাড়তনা। কিছুক্ষন পর পর তোমার হুম.. তারপর বলো কেমন আছো, কি যে অদ্ভুত একটা আবেশ তৈরি করতো। তুমি হাত নেড়ে নেড়ে বলতে আর আমি মুগ্ধ হতাম। তোমার সব কিছুকেই আমার বড় মায়াময় মনে হত। তোমার মনে আছে একবার আমাকে একটা পাখির গল্প লিখে দিলে।

সে কি জেদ আমার। না লিখেতেই হবে। আচ্ছা যাও লিখে দেব। তারপর একটা আঁকটানা বাংলা খাতায় লিখে দিলে গল্পটা। এত ছোট কেন গল্প এ নিয়ে আমার আফসোস ছিল লোক দেখানো।

আমিতো তখন আনন্দে ভেসেছি। তারপর সে খাতাটা আমি কবে হারিয়ে ফেললাম বলোতো? কেন হারালাম! আমার এখন বড় ইচ্ছে করে হারানো সে পাখি গুলোর মধ্যে সে সময়টাকে ছুঁয়ে দিতে। তারপর বাঁশের তলায় আমরা একটা নাটক করলাম। কি নিয়ে নাটক ছিল মনে নেই, শুধু মনে আছে আমি তোমার বৌ হয়েছিলাম নাটকে। হা হা এ নিয়ে খুব লজ্জা করছিল আমার জানো? যেন আমি খুব বুঝি বৌ মানে কি! প্রতি মাসের দস্যু বনহুর পড়াটা নেশা ছিল, কিভাবে এ নেশা হল? তুমি যে গল্প শোনাতে।

একসময় বনহুরের প্রেমে পড়লাম। বনহুর আসতো তোমার রূপে। কত বন জংগল পেরিয়ে বীরের মত ঘোড়ায় চেপে সে আসতো! কদিন আগে লেখা কটা লাইন শোনো-- ''ভালবেসে বুঝেছি ভালবাসা আছে অথবা ঢেউএর মত নোনা ফেনার মত সমুদ্র ভালবাসা হয়ে গেছে। '' কত হাজারটা স্মৃতি আমার তোমাকে নিয়ে। একবার মনিদের বাইরেটাতে ক্রিকেট খেলছিলাম।

তুমি কি নিষ্ঠুরের মত আমাকে আঘাত করলে। বললে ব্যট দিয়ে স্ট্যাম্প ছুঁয়ে দিলে নাকি আউট। আমি জেদ করে ছুঁয়ে দিলাম। তুমি জোর করে আমাকে ফেরত পাঠালে। আমার অভিমানে কান্নায় মরে যেতে ইচ্ছে করেছিল সেদিন।

বড় তুচ্ছ ইচ্ছে গুলো মাঝে মাঝে ভীষন নাড়া দিয়ে যায় জানো? তুমি তখন আমার যন্ত্রনায় বিরক্ত! আমি যে কি ভীষন জ্বালাতাম তোমাকে। ভাবলেই এখন লজ্জা লাগে। একবার সাইকেলে চেপে তোমার নানুবাড়ি থেকে ফিরছিলাম। আমি তোমার বুকের কাছে। ঢালু পথটাতে সাইকেলের হ্যান্ডেল আমার গলায় চেপে বসলো।

আমি কিন্তু নামিয়ে দিতে বলেছিলাম, তুমি ছিলে বীরপুরুষ! এত ব্যাথায় আমার কান্না আসেনি জানো?তবে বাড়ি ফিরে আম্মা কি বলবে! আম্মার সামনে যখন আসলাম। ভয়ে কেঁদে দিয়েছিলাম, তোমাকে এখন ওরা যে বকবে! ''সে ছেলেটি নদী ছিল। তার শুরু আর শেষে রমনীয় তোলপাড়! তোমাকে এখন একটু্ও দেখিনি। অথচ নদী আমার চেনা। অনেক কালের আপন ।

এই ছেলেটি জেনে থাকুক, সারা রাত আমি ঘুমুতে পারিনি! এক দীর্ঘ জীবন শেষে ছেলেটি জানবে আমি ভাল ছিলাম। অথচ জানবেনা তার সমস্ত শরীরে একটি কবিতা অপদেবতার মত সেঁটে ছিল। '' তারপর বলো কেমন আছো? তোমার মত করে হাত নেড়ে বলতে ইচ্ছে করছে। জানি তুমি উত্তরে বলবে ভাল আছো। আজকাল বড্ড ভাল থাকো তুমি এ ভাল থাকাটা অভ্যেস।

এ ভাল থাকাটা ভালমতন রপ্ত করেছো তুমি। একেকটি স্বপ্নের মত তোমাকে বলতে ইচ্ছে করে -- ''অপ্সরাদের ফুল ফুটে থাক। আমলকি ডাল পাতায় থাকুক একেকটা শীত। ফিরে এলে তোমার চোখে, জানোতো সে শান্তি সমর্পন? একদিন হাত ধরে বেরিয়ে পড়বে কিনা বল! মুক্তি ফল আনতে আমাদের ঢের মুহূর্ত বাকি। তোমার অসুখ স্বপ্ন দেখার।

তবু ঝোছনার এক ঝড়ে তৈরি থাকো যদি , তোমাকে উড়িয়ে নেব। আমিও কি আর ভাল আছি!'' কত কি যে লিখতে ইচ্ছে করছে। কতদিন তোমাকে লিখিনা বলো! আমার তেরোতম জন্মদিনে তুমি উইশ করলে বেঁচে থাকতে থাকতে যেন বোর হয়ে যায় আমি । এত দীর্ঘ জীবন বেঁচে কি হবে বলতো? ইতি তোমার সুদূরতমা (এ নামে তুমি আর কাউকে ডাকবেনা। কখনো ডাকবেনা কোনোদিন!) ইশ! কেমন কান্নাটাই না আসছে।

এভাবেও লেখে মানুষ! ভাবছি এই সুদূরতমা কে? যে মুগ্ধ প্রেম ছিল একসময় সেটা কখন কাটলো। তাদের ভেতরে সম্পর্ক টা কি! মাঝখানে এত সময় চলে গেছে। এর মধ্যে কি হল ? ঘটনা কি! সব কিছু সব সব কিছু জানতে ইচ্ছে করছে। ওহ আম্মু! আসছিইই.. চেজি তুমি চিঠিটা লুকিয়ে রাখো। আমি লাঞ্চ সেরেই আসছি।

................. -তোমার এক্সামের কি খবর? মাছ নাও। -আম্মু প্লিজ! আমার ডালটা বেশি মজা লাগছে। উম..হু.. সামনের থার্সডে থেকে টেস্ট শুরু। রুটিন দিয়েছে আজ। -এখন গল্পের বইটই একটু কম পড়ো।

এরকম বড় পরীক্ষা এবারই জীবনে প্রথম। বোঝার চেষ্টা করো। বড় হচ্ছো। -কি হল? উঠছো যে? শেষ করো। -আম্মু আর পারছিনা।

পেট ভরে গেছে। প্লিজ মম -কেন?আবার ফাস্টফুড খেয়েছো? তোমাকে বলেছিনা বাইরের খাবার না খেতে। -ওহ ! আবার শুরু করলা! কিচ্ছু খাইনি বাইরে। সত্যি! চেজি আছো? মুখ বাড়িয়ে এদিক ওদিকে তাকিয়েও চেজিকে দেখতে না পেয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। শুধু মুখেই বলে আমি নাকি ওর বস।

আদতে কাজে তো তা প্রমান হয়না। এই যে বললাম আমি লাঞ্চ করেই আসছি। এর মধ্যেই কি তার চেরাগস্থানের কথা মনে পড়ে গেল! একটা ঘরকুনো জ্বিন! হুহ... জানালা থেকে লাফ দিয়ে ঘরের উপর ধপ করে পড়লো চেজি! ওহ! ম্যাম বাইরে যা গরম! ঘাড়ের সাথে লাগানো ক্যাটকেটে একটা হলুদ রুমাল। একটু আগেও তার গেটাপ ছিল ওয়েটার দের মত এখন পুরাই পাংকু লাগছে। সাড়ে আট তলার এ ফ্ল্যাটে জানালা দিয়ে রুমের মধ্যে ধপ করে পড়ার কোনো মানে নেই।

এটা চেজির ঢং! জানে আমি খেপে আছি। ও নিশ্চিত চেরাগের ভেতর ঢুকে ঘুমিয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ মনে পড়তেই বেরিয়ে এসেছে। এসেই ঢং শুরু করেছে! আমি চোখ পাকিয়ে বললাম, চেজি চিঠিটা কোথায়? চেজি সঁড়সঁড় করে নাক টেনে বলল নুশার ডায়রীর মধ্যেই ঢুকিয়ে রেখে আসলাম। একটু আগে ও কাঁদো কাঁদো হয়ে চিঠিটা খুঁজছিল তো।

সারা শরীর রাগে জ্বলছে। এতো মাতব্বর! -তো চিঠিটার একটা জেরক্স তো রাখতে পারতা। এত দারুন একটা লাভ লেটার! তুমি কি চেজি? আমি না তোমার বস? তুমি তো আমার কথা একটাও শোনোনা। দেখি খিক খিক করে শেয়ালের মত শব্দ করে হাসছে। ওহ অসহ্য! চেজি! তুমি আমার চোখের সামনে থেকে দূর হও এক্ষুনি! আচ্ছা শোনো চিঠিটা পাবার পর শরৎ কি করেছিল? আর নুশার কাছে চিঠিটা কিভাবে এল চেজি?তুমি কিছু জানতে পারো কোনভাবে? ভাব নিয়ে টেবিলের উপর পা তুলে পাংকু চেজিটা দেখি মিটমিট করে হাসছে।

হোয়াট! টেল মি সামথিং? সুইট চেজি... নুশার আব্বু কে তার কোনো এক মেয়ে বন্ধু চিঠিটা দিতে বলেছিল শরৎকে। দেয়নি । নিজের কাছেই রেখে দিয়েছে। কি আর বলব ম্যাম! এ পৃথিবীর ছেলেরা এত ক্যালাস আর জেলাস না! একটা কোন কাজ যদি ঠিকমত করে। -আচ্ছা চেজি এমন ও তো হতে পারে নুশার আব্বুর চিঠিই ওটা! ছি ছি নুশা কি দুষ্টু! ওর বাবার লাভ লেটার লুকিয়ে স্কুলে এনেছে! -ম্যাম আপনি ভুলে যাচ্ছেন নুশার বাবার নাম তো শরৎ না।

-তুমি এসব বুঝবেনা চেজি। মানুষরা এরকম করে। কেউ যাতে টের না পায় এ জন্য তারা নিজেদের দেয়া নামে প্রেমিককে ডাকে। এটা আমি একটা গল্পের বইতে পড়েছি। .................... -আচ্ছা চেজি তোমার কি মনে হয়না প্রেম মানেই দারুন একটা ব্যাপার! আমাকে কেউ কখনো বলেনি আমার চোখ খুব সুন্দর।

অথচ আমার খুব শুনতে ইচ্ছে করে কেউ বলুক আমার চোখের দিকে তাকালে তার গভীর জলের সমুদ্রের কথা মনে হয়! -ম্যাম আপনার কি মনে হয়না আপনি ভুল কথা বলছেন? চোখতো ছোট একটা পাতার মত সাইজের। -ওহ চেজি! তুমি না কিচ্ছু বোঝোনা। তুমি ঐ গানটা শোনোনি? 'চোখটা এত পোড়ায় কেন ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও সমুদ্র কি তোমার ছেলে আদর দিয়ে চোখে মাখাও!' চেজি তুমি কি পারো কোনো একটা প্রেম এনে দিতে আমাকে। -প্রেম তো এ্যবস্ট্রাক্ট ম্যাম। আমি আপনাকে বৈষয়িক যে কোন ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি।

আপনি যদি আপনার চোখটাকে সমুদ্র বলেন আমি একটা জাহাজ বানিয়ে দিতে পারি। চোখের এ পার থেকে ওপারে যাবার জন্য। আর চোখের মধ্যে দু একটা দ্বীপ! জাহাজ চালাতে গিয়ে ক্লান্ত হলে ধরুন বসে বিশ্রাম নিলেন। -চেজি! এই মুহূর্তে চেজিকে আমার ভস্ম করে দিতে ইচ্ছে করছে। দেখি চোখের সামনে চেজির শরীর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।

আর আস্তে আস্তে সে মিলিয়ে গেল। আম্মু রুমে এসেছে! লাইট অফ করে কাঁথাটাকে তুলে ভালমত ঢেকে রেখে বাইরে যাওয়ার সাথে সাথে আমি তাকালাম। চেজি আসছেনা। ও কি রাগ করলো! তাতে কি! আমি ওর বস। যদি একবার রাগ করে তাকে ভস্ম করে দি তাতেই কি হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে হবে নাকি! হুহ... .......... অ:ট: এটা একটা ফ্যান্টাসী টাইপের লেখা! উদার মনের পাঠকদের জন্য।

যারা সবকিছুকেই সত্য বলে মানতে পারে। গল্পটাকে গল্পের মত সত্যি বলে ভাবে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।