আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিতাস এখন দুটি নদীর নাম (সর্বাধিক ফটো প্রকাশিত পোস্ট)

মইধ্যে রাইতে লুকাইয়া লুকাইয়া হাসতাম কিন্তু অহন আর হাসবারও পারি না, কিচ্চু হইলেই ঝারি মারে :( ওই কুটকুট কইরা হাসবি না! ভারতের সাথে ট্রানজিটচুক্তি চুক্তি বাস্তবায়নে আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রয়োগ নিজ চোখে দেখে আসছি সেই শুরু থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বসবাসের কারনে। আশুগঞ্জ থেকে ৪ ব্রীজ ও ১৫ টি কালভার্টের উপর দিয়ে ভারতীয় এ গাড়িগুলো আশুগঞ্জ থেকে ভারতের ত্রিপুরায় ঢোকে। ভারতের সাথে চুক্তির অনেক আগের থেকে চট্টগ্রাম-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এ রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। একাধিকবার প্রধান শিরোনাম হয়েও সরকারের কোন সুনজর ছিল না এ রাস্তায় মেরামত করনে। অত্যন্ত অনিরাপদ এবং প্রচুর ঝুকি নিয়ে বড় বড় গাড়ি চলাচল করতো এ রাস্তা দিয়ে।

এখনো অনেক পুল সংস্কারাবস্থায়, কিছু সংস্কার হবে কিনা সন্দিহান। আশুগঞ্জ থেকে শুরু এ রাস্তার কারনে শহরের মূল শহর থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন খাল, তিতাসের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখাগুলোর জমাট বাঁধছে। স্থানীয় পুল-কালভার্টগুলো অকেজো হওয়াতে এর বিপরীতে পাশ দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে রাস্তা। যার ফলে কিছু কিছু জায়গায় জমাট বাঁধছে পানি, কোথাও সেচ পানির সংকট, কোথাও শহরের পরিত্যক্ত আবর্জনা অপসরনে বাঁধছে জমাট। এতোসব করার পরে সরকার থেমে থাকেনি।

শেষ পর্যন্ত বাঁধ দিয়েছে তিতাসকে। দ্বিখন্ডিত করা হয়েছে নিজের দেশের মানুষের কথা না ভেবে অন্য দেশের সুখের লাভে। ঐ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর এবং প্রধান পেশা মাছ ধরা। কোড্ডায় অবস্থিত বাঁধটি প্রায় ১ বছর আগে তিতাস দ্বিখন্ডিত করার কারনে শ্যামনগর, জেলেপাড়াসহ আঁশ-পাশ এলাকার মানুষরা এখন দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিয়ে নৌকা নিয়ে চলাচল করতে পারছে না। শ্যামনগর ও জেলেপাড়ায় জেলে পরিবারের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৬টি।

কিন্তু গত ২ বছরে কমে তা হয়েছে ৮ টি এবং বর্তমানে জালের সংখ্যা ৪টি। স্থানীয় এলাকার কিছু জেলে সাথে কথা বলি। অনেকে বিচার প্রার্থনায় জানায়- এখন তিতাসে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। আগে প্রতিদিন ৩০০ টাকা রোজগার হতো, কিন্তু এখন হয়তো ১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। আশুগঞ্জ থেকে মালবাহী ভারতীয় গাড়িগুলো রাত ১২টা থেকে শুরু করে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলাচল করে।

কিছুদিন আগে গিয়ে দেখি ভারতীয় মালবাহী দুটো গাড়ি কোড্ডা বাধেঁর শেষ অংশে পড়ে আছে। অবশ্য ঐ দুটো গাড়িকে বিকেল ৫টায় ভারতীয় এলাকায় যেতে দেখেছি। নানা জায়গা বাঁধের কারনে আমার দেখা সমস্যাগুলো - ১. উত্তর-দক্ষিন, উভয়ে দিক থেকে নৌকা বা মাঝারিমানের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়াতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে মাছ ধরতে পারছেন না জেলেরা। ফলে জেলে পেশা থেকে গুটিয়ে নিয়েছে নিজেদের অনেক জেলে। ২. সরাসরি রাস্তা হয়ে যাওয়ার কারনে প্রায়ই ডাকাতি হচ্ছে আশাপাশের বেশ কিছু গ্রামে।

স্থানীয় মানুষের দাবী পুলিশফাঁড়ির। ৩. বাঁধ হয়ে যাওয়ার কারনে খাল-বিলের পানির আসা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কিছুদিন পর থেকে পানি পাওয়া যাবে না। বিপাক পড়বেন কৃষকরা। ৪. ঐ এলাকা বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় পণ্য পরিবহনের মাধ্যম ছিল বড় নৌকা, ট্রলার।

বাঁধ হয়ে যাবার কারনে বাঁধের অপর প্রান্তে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অধিক ভাড়া দিয়ে পণ্যবাহি ট্রাক দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া করা লাগছে। যার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় গ্রাম্যবাজারের আশপাশের মানুষের উপর। ৫. তিতাস তার প্রাকৃতিক নব্যতা হারাচ্ছে। নদী বহমান।

তিতাস মেঘনা থেকে শুরু করে মেঘনারই অন্য অংশে গিয়ে মিশেছে। ফলে একটা স্রোত কাজ করে এখানে। শহুরে এলাকার ব্যবহৃত ময়লা পানি মিশে ভবিষ্যতে বুড়িগঙ্গার মতো প্রাণহীন একটি নদী হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলায় কোড্ডা এলাকায় অবস্থিত তিতাস বাঁধ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, আমি চেষ্টা করেছি বিভিন্ন দিক থেকে উক্ত এলাকার বাঁধ অংশটাকে ফুঁটিয়ে তুলতে। নিচের সবগুলো ছবিই ঐ এলাকাকে নিয়ে।

বিভিন্ন দিক থেকে তোলা ছবিগুলো।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.