আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নব্বই এর দশকে উদীয়মান ও সবচেয়ে জনপ্রিয় কণ্ঠ শিল্পীদের মধ্যে মনির খান অন্যতম।

শুন আমার ভাই বোনেরা আমি একজন প্রেমের মরা আমার একটা অনুরোধ আমার লেখা গুলো কেউ দয়া করে গান হিসেবে নিবেন না ভাবলে বড় ভূল হবে। আর একটা কথা সবাই ভাববেন যে পরিবারিক পরিচিতি : নব্বই এর দশকে উদীয়মান ও সবচেয়ে জনপ্রিয় কণ্ঠ শিল্পীদের মধ্যে মনির খান অন্যতম। এই জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ১৯৭২ সালের ১ আগস্ট ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার মদনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাহাবুব আলী খাঁন পিতা একজন স্কুল শিক্ষক এবং মাতা গৃহিণী। এক বোন ও চার ভাই এর মধ্যে মনির খান দ্বিতীয় এবং ভাইদের মধ্যে প্রথম।

শিক্ষাজীবন : শিক্ষাজীবনের শুরম্ন নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে হাকিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও পরে যশোরের চৌগাছার উপজেলার নারায়নপুর বহরাম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। ১৯৮৭ সালে এখান থেকে এস, এস, সি পাশ করেন। এইচ, এস, সি পাশ করেন ১৯৯০ সালে কোটচাঁদপুর ডিগ্রী কলেজে থেকে। ১৯৯২ সালে ঐ একই কলেজ থেকে তিনি ডিগ্রী পাশ করেন।

সঙ্গীতজীবন : বাল্যকাল কেটেছে নিজ গ্রামেই। বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা, ছোটাছুটি, পুকুরে সাঁতারকাটা আর মাছ ধরা ইত্যাদি এক আনন্দঘন পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন মনির খান। এত কিছুর মধ্যেও ছোট বেলা থেকেই তার গানের প্রতি একটা সহজাত আকর্ষণ ছিল। এলাকার অনেক ওস্তাদের কাছে গান শিখেছেন। তবে সঙ্গীতের হাতেখড়ি হয় মূলত ওস্তাদ রেজা খসরুর কাছে।

পরবর্তীতে চক্রবর্তী, ইউনুস আলী মোল্লা, খন্দকার এনায়েত হোসেনসহ আরও কয়েকজন ওস্তদের কাছে তিনি গানের তালিম নিয়েছেন। বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা খন্দকার এনায়েত হোসেন ১৯৮৮ সাল থেকে কালিগঞ্জ গুঞ্জন শিল্পীগোষ্ঠি একাডেমীতে ১৫ দিন পর পর এসে গান শেখাতেন। সঙ্গীতের ভিত্তি গড়ে উঠেছে মূলত ওস্তাদে খন্দকার এনায়েত হোসেনের কাছেই। ১৯৮৯ সালে মনির খান খুলনা রেডিওতে অডিশন দিয়ে আধুনিক গানের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯১ সালের আগস্ট মাস পর্যনত্ম তিনি এখানে একজন নিয়মিত শিল্পী হিসেবে গান করেন।

১৯৯১ সালের ৫ এখান থেকে এন. ও. সি নিয়ে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকা শহরে মনির খানকে আশ্রয় দেয়ার মত কোন আত্নীয় ছিল না। তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজ গ্রামের চাচাত্ব ভাই সম্পর্কে নূরুজ্জামান খোকন। তিনি মনিরকে ঢাকায় পাঠানোর জন্য তার বাবাকে অনুরোধ করেছিলেন। মনির খান ঢাকাতে আসার পর তার প্রতিবেশী খোকন ভাই মনিরকে বড় ভাই ও পিতার মত করে আগলে রেখেছিলেন দীর্ঘদিন।

ঢাকাতে আসার পরও তিনি বেশ কিছু ওসত্মাদের কাছে গান শিখেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আবুবক্কার সিদ্দিক, মঙ্গল চন্দ্র বিশ্বাস, সালাউদ্দীন আহমেদ, অনুপ চক্রবর্তীসহ আরও অনেকে। তিনি যখন যার মধ্যে ভাল কিছু পেয়েছেন সেগুলি নিজের আয়ত্বে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। এইভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর তিনি অডিও মার্কেটে একটি স্থান নেবার কথা ভাবলেন। চিন্তা অনুযায়ী কাজ শুরু করলেন।

গান সংগ্রহ করতে দেশের অনেক বড় বড় গীতিকারদের কাছে যেতে শুরু করলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন কুটি মনসুর, আব্দুল হাই আল হাদী, লিয়াকত আলী বিশ্বাস, মিল্টন খন্দকার, মোঃ রফিকউজ্জামান, গাজী মাজহারম্নল আনোয়ারসহ আরও অনেকে। বয়স অল্প থাকাতে এত বড় বড় গীতিকারদের সান্নিধ্যে পাবার মত সাহস তার ছিল না। একদিন সাহস করেই তিনি কুটি মনসুরের কাছে গেলেন। কুটি মনসুর মনির খানের সাথে স্নেহসূলভ আচরণ করলেন।

তিনি মনিরের গান শুনে তাকে দারুনভাবে উৎসাহিত করলেন। মূলত কুটি মনসুরের উৎসাহে উৎসাহিত হয়ে মনির খান বাজারে নিজের গাওয়া গানের ক্যাসেট বের করার সিদ্ধান্ত নিলেন। জনপ্রিয় গীতিকার মিল্টন খন্দকারের সান্নিধ্য পাবার চেষ্টা করলেন। অডিও মার্কেটে তখন মিল্টন খন্দকারের গানের চাহিদা ছিল ব্যাপক। দীর্ঘদিন চেষ্টার পর তিনি মিল্টন খন্দকারের সাক্ষাৎ পেলেন।

মিল্টন খন্দকার মনিরকে তার বাসায় নিয়ে গেলেন এবং মনিরের গান শুনে খুশী হয়ে তার কণ্ঠে গাওয়া গানের একটি ক্যসেট বের করতে রাজি হলেন। ক্যাসেট বের করতে স্কুল শিক্ষক বাবার কাছ থেকে চলিস্নশ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু মিল্টন খন্দকার পুরো টাকাটা তার বাবাকে ফেরৎ দিতে বললেন। মনিরের ক্যাসেট বের করার সমস্থ দায়িত্ব নিজ কাঁধে নিলেন। ক্যাসেট বের করার উদ্দেশ্যে মনির আরও ভাল ভাবে গান চর্চার মাধ্যদিয়ে নিজেকে একজন পরিপূর্ণ শিল্পী হিসেবে তৈরী করতে চেষ্টা করলেন।

নিজেকে প্রস্তুত করতে মনিরের সময় লেগেছিল ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ পর্যনত্ম দীর্ঘ চার বছর। ১৯৯৬ সালে তার প্রথম ক্যসেট বের হয় ‘তোমার কোন দেষ নেই’ শিরোনামে। ক্যাসেটটি দারম্নন জনপ্রিয়তা পায়। ক্যাসেটটি জনপ্রিয়তা পাবার পর মনি খান রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গেলেন। এরপর মনির আর থেমে থাকেননি।

পরবর্তীতে তিনি একের পর এক বেশ কয়েকটি ক্যাসেট বের করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘তোমার কোন দোষ নেই’, ‘সুখে থাকা হলো না আমার’, ‘জোর করে ভালবাসা হয় না’, ‘অনেক ছিলো তোমাকে নিয়ে’, ‘আবার কেন পিছু ডাকো’, ‘কত সুখে আছি আমি’, ‘কেন তুমি এতটা পাষান’, ‘সে তো আর ফিরে এলো না’, ‘এ কূল আর ও কূল হারালাম দু’কূল’ ইত্যাদি। ২০০৪ সাল পর্যনত্ম তার মোট একক ক্যাসেটের সংখ্যা প্রায় ২০টি। প্রায় ৭০টির মত মিশ্র ও ডুয়েট ক্যসেটে তার গান রয়েছে। মনির খানের মোট গানের সংখ্যা সহশ্রাধিক।

প্রায় প্রতিটি ক্যসেটেই তিনি সফলতা পেয়েছেন। উল্লেখ্য যে, মনির খানের উত্থানের পেছনে ‘তোমার কোন দোষ নেই’ ক্যাসেটটির যে জনপ্রিয়তা তার একক কৃতিত্বের দাবিদার মিল্টন খন্দকার। সম্মাননা : ২০০৪ সালে মনির খান প্রেমের তাজমহল ছবিতে কণ্ঠ দিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। এ গানের কথা ও সূর ছিল আহম্মেদ ইমতিয়াজ বুলবুল-এর। সাথে কনক চাঁপাও পেয়েছেন এ পুরষ্কার এত অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারের মত এত বড় প্রাপ্তি তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

এছাড়াও তিনি আরও বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। ‘বাচসাচ’ পুরস্কার পেয়েছেন পর পর দুইবার। বাংলাদেশ টেলিভিশন রিপোটার্স এওয়ার্ড পেয়েছেন পর পর তিন বছর। বাংলাদেশ কালচারাল রিপোটার্স এওয়ার্ড পেয়েছেন পর পর তিন বছর। এমনই আরও বহু সংগঠন তাকে পুরস্কৃত করেছে।

মনির খান আনসার ভিডিপিতে চাকরি করেন। ২০০৪ সালের ২৬ ফেরম্নয়ারী ৫০ লক্ষ অনসারের প্রধান মেজর জেনারেল মনজুরম্নল আলম মনির খানকে তার কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কৃত করেন। জাতীয় পুরস্কারের মতই এটিও তার জীবনের একটি বড় পাওয়া। বিবাহিতজীবন : মনির খানের ব্যক্তিগতজীবন শুরু হয় ২০০১ সালে কিশোরগঞ্জের মেয়ে তাহামিনা আক্তার ইতির সাথে। তিনি এক মাত্র কন্যা সন্তান মুসফিকা আক্তার (মৌনতা) এর পিতা।

ইতি তোমার ভালবাসার ভিখারী মামুন খাঁন ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.