হৃদয়ে থাকুক বসন্ত
স্বাধীনতা পেয়েছিলাম সেই ১৯৭১ এ। আজো স্বাধীনতার মানে উপভোগ করতে শিখিনি। সীমান্তের কাঁটাতারে আজো ফেলানীদের শেষ আর্তনাদ শোনা যায়। আমার মায়ের আঁচল মাড়িয়ে ওরা ধেয়ে আসছে, ধীরে ধীরে। একদিন পুরোটুকু গ্রাস কেড়ে নেবে।
ক্ষুধার্ত শরীরে আমাদের আর প্রতিবাদ করা হবেনা। তিতাসের মরে যাওয়া দেখেছি। ওরা তিতাসের বুক বরাবর চাপিয়ে দিয়েছে, ট্রানজিটের বোঝা। তিতাস মরে যাবে। আমরা একদিন আমাদের উত্তরসূরীদের দেখাবো, এখানে একটা নদী ছিলো।
নদীটির নাম ছিলো, তিতাস। আমাদের বড় আবেগের জায়গা ছিলো। এই নদীকে ঘিরে আমার প্রিয়তমার জন্য লেখা গান ছিলো। ওরা বিশ্বাস করবেনা। বলবে, তোমরা কি করেছো? যে তোমরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলে, তারা কোথায় ছিলে? লজ্জায় মুখ লুকাবো।
এ ভীষন লজ্জা। বলবো, আমাদের কি করার ছিলো? আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানেরা বলেছিলো, আমাদের ভালো হবে। আমাদের ভাগ থাকবে। আমাদের দাবী থাকবে। আমাদের অধিকার থাকবে।
আমাদের অধিকারের কথা ওরা জানতেও চায়নি। মাঝনদীতে এঁকে দিয়েছে কলঙ্কের রেখা।
আজ তিতাস হাঁসফাঁস করে। তিলে তিলে মরে যায়। বর্ষায় আর তিতাসের ঢেউ কাউকে ভয় দেখাবেনা।
তিতাসের বুকজুড়ে রক্তখেকো মানুষের আবাসন গড়ে উঠবে। অনেক মজা হবে,তাইনা?
ছেলেবেলায় শোনা ছেলেভুলানো ছড়া মনে পড়ে-
"খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো
বর্গী এলো দেশে।
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে
খাজনা দেবো কিসে। "
বর্গীরা দেশ ছেড়েছে বহুদিন হলো। আজ তবে ওরা কারা? আমাদের সবটুকু কেড়ে নিতে চায়? আমরা কখনো কেড়ে নিতে দেয়নি।
মুখের ভাষার জন্য লড়াই করা জাতি আমরা। আমাদের অহং অনেক বেশি। আমাদের শুধু জ্বলে উঠার অপেক্ষা। সব পুড়ে ছাই হয়ে যাবে, সেই ধ্বংস স্তুপ থেকে বিজয়ী আমাদের মুখ ভেসে উঠবে। আমরা পারবো।
শুধু জ্বলে উঠার অপেক্ষা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।