আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগের কবিরা এবং সাধারন ব্লগার।[ফান পোষ্ট]

শেষ বারের মতো সতর্ক করছি... ব্লগে কবিতার ছড়া ছড়ি। কখনো কখনো প্রথম পাতা ভরে কবিতা দেখা যায়। এর মাঝে অল্প কিছু আছেন যারা কবিতা পড়েন এবং কবিতা চার্চা করেন। আমরাও মুগ্ধ হয়ে তাদের কবিতা পড়ি। কিন্তু এদের সংখ্যা খুবই কম।

বেশি সংখ্যাকরাই আমাদের চরম ভুগায়। পত্রিকার সম্পাদক এবং ব্লগারের মধ্যে কথা হচ্ছে। সম্পাদক মশায় সবার কাছেই লেখা চেয়ে বেড়ান। কাউকে একটু হুমরাচোমরা মনে হলেই তার কাছ থেকে লেখা বের করে নেন। দুজনের আলাপ আলোচনার মাঝেই সম্পাদক মশায় বলতে থাকেন।

আমার পত্রিকার পরবর্তি সংখ্যার জন্য আপনাকে একটি উপন্যাস ধারাবাহিক লিখতে হবে। ব্লগার: আমিতো কখনো উপন্যান লিখি নাই। কি ভাবে লিখতে হয় তাও জানি না। সম্পাদক: একটু চেষ্টা করুন। আমি আপনাকে হেল্প করবো।

ব্লগার: না আমার পক্ষে উপন্যান লেখা সম্ভব নয়। সম্পাদক: ঠিক আছে একটা প্রবন্ধ লিখে দিবেন। ব্লগার: আরে না আমি প্রবন্ধ লিখতে পারি না। এসব বিষয়ে আমার পূর্বের কোন অভিজ্ঞতা নেই। সম্পাদক: তাহলে একটা ছোট গল্প।

ব্লগার: আরে না। আমি এইসব লেখা লেখি পারি না। আগে কিছু আবোল তাবোল ব্লগ লিখতাম। এখন তাও লিখিনা। কলম ধরলে কালি বের হতে চায় না।

সম্পাদক দমার পাত্র নয়। ছাগল পাগলের কাছ থেকেও তিনি লেখা বের করে নিতে পারেন। মসজিদের ঈমাম, মুয়াজ্জিনের কাছ থেকেও তিনি নাকি লেখা বের করে নেন। অতএব এই ক্ষেত্রে তার সুনাম ক্ষুন্ন হতে দিতে পারেন না। সম্পাদক: ভাই আপনাকে কিছু একটা লিখতেই হবে।

ব্লগার: আমি কোন কিছুই লিখতে পারি না। আপনি যদি বেশি কিছু করতে চান তবে আমার একটা ছবি তুলে পত্রিকার কলামের জায়গায় ছাপিয়ে দিন। সম্পাদক নিরাশ হলে না। তিনি নিরাশ হতে জানেন না। বললেন।

ঠিক আছে আপনি যদি কিছুই না পারেন। তবে নিশ্চয় কবিতা লিখতে পারেন? আপনি একটা কবিতাই দেন। ব্লগে কবিতা পড়তে পড়তে আমার ধারনা এমনই হয়েছে। আমি কয়েক বার কমেন্ট করে দেখেছি। এই ব্লগের কবিরা অনেকেই নিজের কবিতা ছাড়া অন্য কোন কবিতা পড়েন না।

পড়ার প্রয়োজনীয়তাও বোধ করেন না। আমাদের সাথে আবৃত্তি করতো একজন। তার নাম নাজমুল। সে সব সময় তার নিজের কবিতাই পড়তো। এবং অন্যকে তার কবিতা পড়তে বলতো।

আমরা তার উপর চরম বিরক্ত। কিন্তু এই বিরক্ত বোঝার মতো কান্ডজ্ঞান তার ছিলনা। এমন করে প্রায়ই স্যারকে তার কবিতা আবৃত্তি করে শোনাতে বলতো। এবং নিজেই নিজের কবিতার প্রসংসা করতো। আমাদের স্যার তার ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য একদিন নাজমুলের কাছে জানতে চাইলো।

তার বাসায় কয়টা কবিতার বই আছে। উত্তর এল,একটিও নেই। কয়েকটি কবিতার বই এর নাম বলতে বলায় একটিও পারে না। এসএসসি পাশ করে কিছু দিন কলেজে গিয়েছে। তার পর আর লেখা পড়া হয়নি।

হয়তো এই কবিতা প্রীতির জন্য কাজ কর্মও গোল্লায় উঠেছে। তা অবশ্য আমাদের জানা হয় নাই। তার কবিতার দৌড় স্কুলের ক্লাসে পড়া কবিতাতেই সীমাবদ্ধ। স্যার তাকে পরামর্শ দিল। তুমি যদি অন্যের কবিতা না পড় তবে অন্য লোকে তোমার কবিতা কেন পড়বে? তার উত্তরে সে জানাল।

সবাই তো আর কবিতা লিখতে পারে না। যারা লিখতে পারে না তারা পড়বে। সে তো লিখতে পারে । সে হলো কবি। কিছুদিন পরে আমি তাকে বুঝাতে সক্ষম হলাম।

যে কবি হওয়ার জন্য আবৃত্তি জানার কোন প্রয়োজন নেই। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত কবি ভাল আবৃত্তি করতে জানতো না। আমার কথা তার মনে ধরেছে। এবং তার পর থেকে আবৃত্তির ক্লাসে তাকে আর দেখা যায়নি। আর একটি ছেলে আমাদের ক্লাসে এমন ভাবেই আসতো।

সেও নিজেকে কবি বলে পরিচয় দিত। তার ছড়া মাঝে মাঝে ভালই লাগতো। সেও সবারে তার কবিতা পড়ানোর জন্য হন্য হয়ে থাকতো। কারনে অকারনে তার কবিতার খাতাটা বের করে পড়তে বলতো। এবং নিজে পড়ে অন্যকে শোনাত।

ধীরে ধীরে এই প্রবনতা প্রকট আকারে ধারন করে। তাকে যতই বোঝানোর চেষ্টা করি। সে কোন কথাই শুনবে না। সে তার কবিতা দিয়ে সবার উপর বিরক্তি করবেই। কিছু দিন পরেই সে কবিতার পাশা পাশি গান লেখা শুরো করলো।

এবং সুযোগ পেলেই গেয়ে শুনাত। এই তো আরো বিপদ। আগে তো তার ডাইরিটা উল্টা পাল্টা করলেই খুশি হতো। আজ কাল একটা গান শুনতেই হয়। আমি খুব চিন্তা করে তাকে পরামর্শ দিলাম।

তোমার কন্ঠ খুবই ভাল। তুমি গান শেখনা কেন? তুমার গলাতো দারুন। পেছনের কয়েকজন আমার কথায় তাল দিল। হ্যাঁ তোমার গান শেখা উচিত। নিজের গান নিজেই যদি গাইতে পার তবে রবীন্দ্র নাথ নজরুলের মতোই তুমি বিখ্যাত হতে আর কয়দিন লাগবে।

আমাদের পরামর্শ তার পছন্দ হলো। একমাস পরেই সে আবৃত্তি বিভাগ ছেড়ে সঙ্গিতে ভর্তি হলো। আমরা বাঁচলাম। কিন্তু সঙ্গিতের ছেলেমেয়েদের অবস্থা কি হলো সেই খবর আর নেই নি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.