আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারো দৌড় সালাউদ্দিনের দৌড় এবং ফখরুইল্লার সামনে মারামারি

০১১ সালের শেষ দিনেও প্রকাশ্যে কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বিএনপিতে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সামনে বিএনপির দুপক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সেক্টর কমান্ডার হামিদুল্লাহ খানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার শ্রদ্ধা জানানো ও জানাজার পরদুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম অভিমুখী রোডমার্চ সমন্বয় কমিটির বৈঠক শুরু হয় বিএনপি কার্যালয়ের ৩ তলায় কনফারেন্স রুমে। একপর্যায়ে মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সালাউদ্দিন আহমেদ প্রশ্ন তোলেনÑ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে।

সালাউদ্দিন বলেন, এ সভায় রাজধানীর সংসদ সদস্য প্রার্থীদের ডাকা হয়েছে। এখানে নবী কেন এসেছে। এ কথা বলার পরপরই সালাউদ্দিন ও নবী প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতিসহ মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সালাউদ্দিন নবীর মুখে কিল মারেন। প্রতিউত্তরে নবীও সালাউদ্দিনের দাঁড়ি ধরে টান মারেন।

উভয়ের মধ্যে প্রায় ১০ মিনিট কিল ঘুষি চলে। একপর্যায়ে মির্জা ফখরুল তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। নিবৃত্ত করার সময় তিনিও কিছুটা লাঞ্ছিতের শিকার হন। এরপর উভয়কে ধমক দিয়ে শান্ত করেন তিনি। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর নবীউল্লাহ নবীকে মহাসচিবের রুমে বসতে বলেন ফখরুল।

মারামারির পর সালাউদ্দিন ও নবীর মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। ঘটনার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, মহানগরের আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা, আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম-মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানসহ বেশ কজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। সালাউদ্দিন ও নবীর মারামারির ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম রোডমার্চ সমন্বয় কমিটির বৈঠক সংক্ষিপ্ত করা হয়। এ সময় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের কাছে খবর আসে নিচে শতাধিক নবীর অনুগত নেতাকর্মী অবস্থান করছে। দুপুর পৌনে একটার দিকে মির্জা ফখরুলসহ সালাউদ্দিন কর্যালয়ের নিচে নামার পরপরই প্রধান গেটের কিছুটা দুরে আব্দুস সালামের নেপথ্যের উস্কানিতে সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মির হোসেন মিরু ও ৫৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি জাহিদ হোসে নওয়াব ও ফিরোজসহ পল্টন থানা বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী ধর ধর বলে সালাউদ্দিনকে ধাওয়া করে।

ধাওয়া খেয়ে নিজ গাড়িতে করে সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের নিয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন সালাউদ্দিন। চলে যাওয়ার পর সালাউদ্দিনের অনুগত ২ থেকে ৩ জন নেতাকে দেখতে পেয়ে নবীর সমর্থকরা তাদের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তাদের কিল ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় ফখরুল নিচে আবারও বিক্ষুব্ধ নবীর সমর্থকদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু নবীর অনুগত বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ভারপ্রাপ্ত মহাসচিরে সামনেই সালাউদ্দিনসহ তার অনুগত শ্যামপুর থানা যুবদল নেতা আলমগীরকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করতে থাকেন।

ফখরুল তাদের নিবৃত্ত করতে না পেরে রাগ করে কার্যালয়ের ওপরে নিজ অফিস রুমে চলে যান। এরপরও নিচে থাকা নবীর সমর্থকরা বিভিন্ন স্লে­াগান দিতে দিতে যুবদল নেতা আলমগীরকে খুঁজতে থাকেন। বিক্ষুব্ধরা তার বাড়িতে হামলা করারও হুমকি দেন। এ বিষয়ে সালাউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এ ব্যাপারে নবীউল্লাহ নবী গতরাতে আমাদের সময়কে জানান, মরহুম হামিদুল্লাহ খানের জানাজা শেষে ওপরে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে সালাম জানাতে যাই।

তাকে সালাম জানিয়ে বিদায় নেওয়ার সময় তিনি আমাকে বললেন, চট্টগ্রাম রোডমার্চ নিয়ে বৈঠক হবে। নিরাপত্তার বিষয় নিয়েও কথা হবে আপনি থাকেন। মহাসচিব একথা বলার পরপরই সালাউদ্দিন বলে ওঠেন কেন নবী এখানে থাকবে। এ সময় মির্জা ফখরুল সালাউদ্দিনকে বলেন, আপনি কিন্তু বেয়াদবি করছেন। তাকে কয়েকবার চুপ থাকতে বলার পরও সে হঠাৎ করে আমার মুখে ঘুষি মেরে বসেন।

এরপর মহাসচিবের অনুরোধে আমি তার রুমে গিয়ে বসে থাকি। নবী দাবি করেন পরিকল্পিতভাবে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সালাউদ্দিন আমাকে মারধর করে। এ ঘটনার জন্য আমি তার বহিষ্কার দাবি করছি। যদি দল থেকে বহিষ্কার না করা হয়, তাহলে ডেমরা, যাত্রাবাড়ী ও শ্যামপুর এলাকায় সালাউদ্দিনকে প্রতিরোধ করা হবে এবং দলীয় কোনও কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।