আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২০১১র বিদায় অনুষ্ঠানে একজন ছেঁকা প্রাপ্ত প্রেমিকের “মানপত্র”

জীবন আসলে চিল্লাপাল্লা ছাড়া কিছুই না। সেটাই করতে চাই, মনের সুখে, ইচ্ছা মতন। আজকের “ ২০১১ সালের বিদায়” শিরোনামে আয়োজিত এই মহতী অনুষ্ঠানে আগত মাননীয় প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, এবং অন্যান্য সকলকে বয়স ও ধর্ম অনুযায়ী সালাম, আদাব, নমস্কার, মুবারক-বাদ, ও স্নেহ জানিয়ে এই বছরে ছেঁকা প্রাপ্ত সকল প্রেমিকদের পক্ষ থেকে মানপত্র উপস্থাপন করছি, প্লে-বয় ( পরিচালক, ছেঁকা পুনর্বাসন কেন্দ্র, ঢাকা। ) বিদায়ী বন্ধু, কারো বিদায় বেলা কোন মানুষ তাকে খারাপ বলে এমনটা আমার জানা ছিল না। একটা ডাকাত মরলেও তার জানাজার সময় ভাল ভাল কথা বলাহয়।

যেমন, ঈশ, লোকটা কি ভালই না ছিল, ডাকাতি করলেও লোকটা ছিল সৎ, সবার সাথে ভাল সম্পর্ক ছিল, দোকানে টাকা বাকি রাখত না... ... ... ইত্যাদি... ... ... ইত্যাদি। কিন্তু বন্ধু, তোমার বেলায় প্রথাটা আর মানতে পারলাম না। বছর ভারে তুমি যা করেছ, তার পর তোমাকে আর ভাল বলা চলে না। ওহে কালো পেঁচা, তোমাকে এই সম্বোধনটা করতে বাধ্য হলাম, বছরের প্রথমে এতো গুলো গার্ল-ফ্রেন্ড দিয়ে শেষমেশ এতো বড় একটা ধুঁকা তুমি দিতে পারলে আমাকে? জানুয়ারিতে ৩ টা ছিল, জুন-জুলাই এর দিকে ৫ টাতে ঠেকল, নভেম্বর মাসে এসে কি যে হল!!! চেইন রিএক্সন শুরু হয়ে গেল, একে একে সব প্রেম উবে গেল, সবাই সবার কথা জেনে গেল, তার পর তাদের নিজেদের মধ্যে চুলাচুলি, কে সত্যিকারে ভালোবাসে, কে মিথ্যা এইসব নিয়ে। এর পর আর কিই বা সম্বোধন করতে পারতাম তোমাকে, বল? কুখ্যাত ২০১১, তুমি যে শুধু ব্যক্তিগত ভাবেই আমাকে প্রেমহীন করেছ শুধু তাই নয়, আমার “ছেঁকা পুনর্বাসন কেন্দ্রের” ও ব্যাপক ক্ষতি করেছ।

সারাবছর ধরে লোকজনকে প্রেমে নিমজ্জিত করে রেখেছ, যার ফলে আমার ব্যবসা এখন লাটে উঠতে বসেছে। কাস্টমারের এই খরার জন্য তুমিই একমাত্র দায়ী। হে কলঙ্কিনী, যে কলঙ্ক তুমি আমায় দিয়ে গিয়েছ সেটা যেন তোমার গাঁয়েও পড়ে। সারা জীবন যাতে তোমার সিঙ্গেল থাকতে হয় সেই কামনা রইল তোমার জন্যে। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন কবে যে আমার এই কলঙ্কের কালো রেখা মুছে, আবার ফর্মে ফিরতে পারি।

হে সর্বগ্রাসী, তোমাকে আমি চ্যালেঞ্জ করলাম, দেখে নিও ২০১২/১৩ নিশ্চয় আমার ও আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ভাল কিছু নিয়ে আসবে, অন্তত তোমার চাইতে!!! চলো একটা বাজী হয়ে যাক, তুমি যদি বাজীতে জিত তাহলে তোমাকে আমি পুরু ১ পিস মেন্টরস খাওয়াবো, আর আমি যদি জিতি তাহলে “ হোটেল রূপসী বাংলায়” কয়দিনের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে রাজী আছ বল। হৃদয় ভঙ্গকারী বন্ধু, তুমি কি জান না যে কারো হৃদয় ভাঙ্গা আর মসজিদ ভাঙ্গা সমান কাজ? বছরের শেষে এসে কেন এমন একটা পাপের ভাগী হলে বন্ধু? তাই তো তোমার বিদায় বেলাটা এতো মলিন হয়ে গেল, কিছুই দিতে পারলাম না তোমাকে। আজ যদি ৩ টা গার্ল ফ্রেন্ডও থাকতো তবু একটা তোমার জন্য সেক্রিফাইস করতে আমার বাধত না। হে ছলনাকারী, এখন তোমার কিছু সুনাম করতে ইচ্ছা করছে। প্রতিটা মুদ্রার যেমন ২ টা পিঠ থাকে, তোমার ক্ষেত্রেও কিছু ভাল দিক আছে।

যেমন, এখন আমার মাসের শেষে আর খালি পেটে ঘুরতে হয় না, কারণ কারো পেছনে আর টাকা ঢালতে হয় না। মেয়েদের সাথে রোদের মধ্যে আর ঘুরতে হয়না, তাই আমার চামড়ার রং ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে। আমার এক জুতা এখন আগের চেয়ে ৫ গুন বেশী লাস্টিং করছে। কানেও এখন আগের চাইতে অনেক ভাল শুনতে পাই। হে নতুনের অভিসারী, তুমি আমাকে নতুনের সন্ধান দিয়েছ, পুরাতনরা না গেলে হয়তো এই সুযোগটা পেতাম না।

এই লাইনে চিন্তা করলে তোমাকে আর খারাপ বলতে ইচ্ছা করে না। সবশেষে এইটুকু বলতে পারি যে, তোমার শুরুর দিকটা ভবিষ্যতে মিস করার সম্ভাবনা থাকলেও শেষের টা কখনো করবো না। *N.B. পোস্টটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে আহবান নেটওয়ার্কে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।