আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

" সে আজ্ঞা যে ম্যাজিস্ট্রেটের আজ্ঞা নহে এবং সাপের বিষ যে বাঙ্গালীর বিষ নহে, তাহা আমিও বুঝিয়াছিলাম "..........

"জাতের কী রুপ দেখলাম না এই মাঝারে" তোমরা আমাকে চিনবে না। ছেলে বেলায় বন্ধুরা ডাকত ন্যাড়া নামে। আর ইস্কুলে নাম ছিল শরৎ । একটু বড়ো হলে নিন্দুকেরা বলত আমার লেখার হাত নাকি খুব বেশি ভাল ছিল না। ছেলে বেলার ধূসর স্মৃতির ক্যানভাসের উপর কল্পনার রঙ চড়িয়ে ১৯১৭ সালে লিখে ফেললাম শ্রীকান্ত ।

তোমরা কি পড়েছ ? খোঁজ নিলে হয়ত কোন মিউজিয়াম এ এখন ও পেতে পার। তোমরা তো এখন স্বাধীন হয়েও পরাধীন( শখ করে কিনা কে জানে?) । তখন আমরা ছিলাম সত্যিকার এর পরাধীন। তৎকালীন ব্রিটিশ দের সীমাহীন অত্যাচার আর বাঙ্গালীর পুরুষত্ব হীনতা দেখে ওই উপন্যাসে খুব রাগ আর হতাশা থেকে লিখেচিলাম এ রকম একটা লাইন , সে আজ্ঞা যে ম্যাজিস্ট্রেটের আজ্ঞা নহে এবং সাপের বিষ যে বাঙ্গালীর বিষ নহে, তাহা আমিও বুঝিয়াছিলাম । আমি একটু ভবঘুরে স্বভাবের বরাবরই।

স্বর্গে ও স্থির থাকতে পারলাম না। তাই একটু ছুটি নিয়ে মর্ত্যে তোমাদের দেখতে এলাম । কিন্তু একি দেখলাম বল তো !! অন্য দেশের সৈন্যরা তোমাদের মেরে কাঁটা তারে ঝুলিয়ে রাখে , পাথর মেরে মেরে ফেলে অথচ তোমরা কিছু কর না ! ব্লগে , ফেস বুকে আর পেপার এ সমালোচনা , ইভেন্ট আর লেখা লিখি করে ভরে ফেল। একদিন মানব বন্ধন কর। তারপর ২ দিন যেতেই ভুলে যাও সব।

তোমাদের নদী কে বিদেশী সরকার কে সুবিধা দিতে ২ টুকরা করে ফেলা হয় , তোমরা ব্লগে , ফেস বুকে আর পেপার এ সমালোচনা , ইভেন্ট আর লেখা লিখি করে ভরে ফেল। একদিন মানব বন্ধন কর। তারপর ২ দিন যেতেই ভুলে যাও সব। হরতালে বাসে আগুন দিয়ে জলজ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়! এতই বর্বর হয়ে গেছ তোমরা ? এর প্রতিবাদে তোমরা এই যুগের ইয়ও ইয়ও দেশ প্রেমিকরা ব্লগে , ফেস বুকে আর পেপার এ সমালোচনা , ইভেন্ট আর লেখা লিখি করে ভরে ফেল। একদিন মানব বন্ধন কর।

তারপর ২ দিন যেতেই ভুলে যাও সব। তোমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজ সরস্বতী কে তাড়িয়ে মহিষাসুর দখল নিয়েছে। ছাত্র পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় , ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলা হয় , গুলি করে মেরে ফেলা হয় কিন্তু অপরাধীর কিছুই হয় না। অপরাধী দেখা যায় কোন না কোন ভাবে বেঁচে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মদ্যপ কোন ছাত্র নেতা মারা গেলে তার জন্য স্মৃতি সৌধ নির্মিত হয় ! একের পর এক বোন হয় ধর্ষিতা , লাঞ্ছিতা ! ধর্ষক এর কিছুই হয় না , কিন্তু ধর্ষিতাকে করা হয় সমাজ চ্যুত , বিচার বঞ্চিত।

ছাত্র নেতারা শত তম ধর্ষণের পার্টি দেয়। এ সবের প্রতিবাদে তোমরা ব্লগে , ফেস বুকে আর পেপার এ সমালোচনা , ইভেন্ট আর লেখা লিখি করে ভরে ফেল। একদিন মানব বন্ধন কর। তারপর ২ দিন যেতেই ভুলে যাও সব। তোমাদের মন্ত্রীরা বলে , "কম করে খান" "গরু ছাগল চিনলেই ড্রাইভার" "আল্লার মাল আল্লায় নিছে" "দৌড়ে জিতলেই মন্ত্রী" "এ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা" "দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে কোন সময়ের চেয়ে এখন ভাল আছে"।

আর তোমরা তাদেরকেই ভোট দাও। তাদের ই পদ লেহন কর। আচ্ছা তাদের পায়ে কি মধু মাখান আছে ? তোমাদের মুক্তি যোদ্ধাদের রাজাকার উপাধি দিয়ে ধর্ষণ করা হয় , আর রাজাকারদের মুক্তি যোদ্ধা / দেশ প্রেমিক উপাধি দিয়ে সম্মানিত করা হয়! তোমরা এর পরেও চুপ থাক। কেউ কেউ এ সবের প্রতিবাদে ব্লগে , ফেস বুকে আর পেপার এ সমালোচনা , ইভেন্ট আর লেখা লিখি করে ভরে ফেল। একদিন মানব বন্ধন কর।

তারপর ২ দিন যেতেই ভুলে যাও সব। বিনা অপরাধে তোমাদের গুলি করে খোঁড়া করে দেয়া হয় , ছিনতাই কারী নাম দিয়ে জেলে ভরা হয় কিন্তু তোমরা এর পরেও দাঁড়িয়ে দেখ! কেউ কেউ এ সবের প্রতিবাদে ব্লগে , ফেস বুকে আর পেপার এ সমালোচনা , ইভেন্ট আর লেখা লিখি করে ভরে ফেল। একদিন মানব বন্ধন কর। তারপর ২ দিন যেতেই ভুলে যাও সব। তোমাদের প্রেসিডেন্ট অনেক গুলা খুনের আসামী কে নিরপরাধী ঘোষণা করে মাফ করে দেয় , আর বিনা অপরাধে মানুষ কেটে ১০০ টুকরা করে।

তোমরা তখন ও দাঁড়িয়ে দেখো ! কেউ কেউ সাহস করে এ সবের প্রতিবাদে ব্লগে , ফেস বুকে আর পেপার এ সমালোচনা , ইভেন্ট আর লেখা লিখি করে ভরে ফেল। একদিন মানব বন্ধন কর। তারপর ২ দিন যেতেই ভুলে যাও সব। আর কত বলব ? আর কত উদাহরন দেব তোমাদের পাপের ? হ্যাঁ পাপ ই তো , অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে। তোমরা ও অপরাধী।

তোমাদের কি অণ্ডকোষে আর বীর্য জন্মায় না? তোমাদের কি জিহ্বা আর দেন না ঈশ্বর ? তোমাদের হাতের আঙ্গুল গুলো কি আর গজায় না ? তোমাদের মায়েরা কি আর তোমাদের বুকের দুধ পান করান না? বড়ো জানতে ইচ্ছা করে। জবাব দাও ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।