শেষ বারের মতো সতর্ক করছি... দুই প্রফেসর বাজারে গেলেন মাছ কিনতে। দুজনেই নতুন চাকরিত যোগদান করেছেন। ব্যচেলর লাইফ এখনো ছাড়তে পারেন নাই। থাকেন একই সাথে। বিয়ে করবেন এমন মনস্থির করেছেন।
কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। রাস্তায় বের হওয়ার জন্য তাই একটু প্রস্তুতি নিয়ে বের হন। আগের মতো তো আর বাউন্ডুলে পোষাক পড়ে বের হওয়া যায়না। টি শার্ট পড়া স্যারদের দেখতে কেমন লাগবে? আর যখন স্যার স্লাকুম,স্যার স্লাকুম অথবা আদাব স্যার, আদাব স্যার রব উঠে। ভালই তো লাগে।
এই সালাম আদাব উপভোগ করার জন্যও চলা ফেরায় কিছুটা সংযত হতে হয়েছে। সময় সময় শার্টপ্যান্ট ইস্ত্রি করে আনতে হয়। আজকাল শার্ট ইং করে না পড়লে কেমন যেন লাগে।
লন্ডির দোকান থেকে ইস্ত্রি করা জামা কাপড় নিয়েই তাই মাছ বাজারে ঘুড়ছেন। মাছ পছন্দ হয় তো দাম পছন্দ হয়না।
দাম পছন্দ হলে মাছ কিছুটা পঁচা নিতে হয়। মহা ঝামেলা। নতুন চাকরি পকেটের অবস্থাও খুব একটা সুবিধার নয়। শেষ পর্যন্ত তারা একটা টাকিমাছের দোকানেই দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে সিদ্ধান্ত নিলেন। টাকি মাছই কিনবেন।
দুই হালি টাকি মাছ। একজন আর একজনকে বলছে, লাফালাফি করা টাকিমাছ দেখার মজাই আলাদা। মাছ নিয়ে বাসায় ফিরলেন। কলেজের অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ জামা কাপড় গুলো ট্রাংকে রেখে মাছ কাটতে বসলেন। এ-কী মাছতো একহালি তিনটা? আর একটা গেল কোথায়?
জেলে আমাদের ঠকিয়েছে।
বল্ল দুই হালী অথচ এখন দেখি একটা কম?
আরে না। লাফালাফিতে আমরা মনেহয় ঠিক মতো গুনতেই পারিনাই। দুই হালি তিনটাই ছিল।
রান্না পর্ব। খাওয়া পর্ব।
তার পর প্রতিদিনের মতোই নিজের কাজ নিয়ে পড়ে থাকা।
একদিন পরে তাদের রুমে কিসের যেন গন্ধ । ইদুর পঁচা গন্ধ মনে হয়?
হতে পারে। চকির নিচে দেখে, বইয়ের সেল্ফের নিচে। চার দিকে।
নাহ কোথাও নেই। দুজনই খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত। পাওয়া গেলনা। রাত্রে গন্ধের তিব্রতা আরো বাড়লো। এবার আর থাকায় যায়না।
ছোট একটা রুম অথচ গন্ধটা কোথা থেকে আসছে তারা খুঁজেই পেলনা। কোন ভাবে কষ্টে আরো এক রাত কাটলো। সকালেইকলেজের অনুষ্ঠান। সিদ্ধান্ত নিল। ফিরে এসে আবার তন্ন তন্ন করে খুঁজতে হবে।
জীবিত হোক মৃত হোক ইদুর খুঁজে বের করতেই হবে।
ইস্ত্রি করা জামা কাপড়ের জন্য ট্রাঙ্ক খুলতেই....। আর থাকা গেলনা। গন্ধটা এটার ভিতর থেকেই আসছে। কোন ভাবে উপর থেকে ইস্ত্রি করা জামার শপিং ব্যাগটা খুলতেই দেখা গেল।
সাদা শার্টের কলারে সেই টাকিমাছ।
যা হোক জেলেরা তাহলে আমাদের ঠকায় নাই। জেলের কাছে জিততে পারলেও স্বাধের সাদা শার্টটা ফেলে দিতে হলো।
গতকাল এই প্রফেসরদের সাথে বসে চা খাচ্ছি। সেই দুজনের একজন আমাদের আড্ডায় নিয়মিত থাকেন।
তিন এক ফাঁকে এই গল্পটা শুনিয়ে দিলেন আমাদের। আমার এত স্বাধের শার্টটার জন্য এখনো মায়া হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।