আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভু টু ক চা নে র ডা য় রি ✍ ঠিক সন্ধ্যায়; যখন প্যারিসে ঘণ্টা মিনিট ও সেকেন্ডের কাটা এক হয়!

⌚ এখানে গ্রীষ্মকালীন সময়ে সন্ধ্যা নামে বেশ দেরীতে। আর সন্ধ্যা বলতে যদি অন্ধকারকে বুঝি, তাহলে তো বলতে হবে এই আলোর শহর প্যারিসে কখন যে সন্ধ্যা নামে তা অনুমান করাই মুশকিল। অবশ্য আমি সন্ধ্যা বলতে বুঝি আইফেল টাওয়ারের ক্রমাগত আলোর ঝলকানি। সন্ধা শুরু হলে প্রতিঘন্টার শুরুতে এই আলোকবাতি নগরের মানুষকে উৎসবে মাতিয়ে তুলে ৫ মিনিটের জন্য। কারো কাছে দূরের কিংবা কাছের এই আলোকস্তম্ভ পরিণত হয় আলোক ফোয়ারায়।

নিভতে থাকা জ্বলতে থাকা আলোর খেলা দেখলে আমার মনে হয় এই বুঝি শহরে সন্ধ্যা নামলো! আমি যেখানে কাজ করি তার উপর থেকে প্রায় অনেকখানি প্যারিস দেখা যায়। সেই দেখাটাকে আমি বলি ল্যান্ডস্ক্যাপ ছবির প্রি-ভার্সন। এবং প্রায় প্রতিদিন আমাকে অবাক করে দিয়ে ঘড়ির কাটার মিলিত রূপ যখন রাত ১০টা হয়, আমি সবচেয়ে উপরের সেই ব্যালকনিতে থাকি! রেলিংয়ে দাঁড়িয়ে ৫ মিনিটের সেই আলোর খেলা দেখি কাঙ্খিত আইফেল টাওয়ারের শরীরে। আর ভাবি এখন না জানি কতজন তার প্রিয় মানুষটার চোখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্যটা দেখাচ্ছে! কত আনন্দ আর ভালোবাসার দ্যূতিতে আলোকিত হচ্ছে সেই সকল প্রিয় মানুষজনের চোখ; মুখ। প্যারিসবাসীরা সাধারণত যারাই এই শহরে নতুন আসে, সে হতে পারে বন্ধু, প্রেমিক/প্রেমিকা, স্বামী/স্ত্রী কিংবা আত্নার আত্নীয় অথবা পরিচিত যেকেউ।

তাদেরকে এই নগরের আলোকধারার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে থাকে অনেকটা এই রকম নাটকীয় ভাবে। তারা প্রিয়জনকে নিয়ে সেই স্থানে অপেক্ষায় থাকে আলোজ্বলা ক্ষণটির জন্য। সেই মুহূর্তটার আগে প্রিয় মানুষটার চোখের সামনে নিজের হাত রাখে। যখন আলোর ঝরণাধারা শুরু হয়ে যাবে ঠিক ওই মুহূর্তে হাতটি সরিয়ে নেয়। আমি আলোর খেলা দেখি আর ভাবি সেই মুহূর্তটার কথা।

আমার কাছে শহর আলোকিত করা সেই টাওয়ারের আলোর চেয়ে বিষ্ময়াভিভূত সেই চোখের যে আলো, সেই অবাক হয়ে যাওয়া মুখের চারপাশে ছড়িয়ে পরা আলোকধারা, অফুরন্ত প্রেম ও ভালোবাসা দ্যূতি, মায়ার মোহময়ী স্ফুলিঙ্গে উজ্জ্বল সেই অবাক মুহূর্তটাকে ভালো লাগে। আমি প্রায়ই ভাবি শুধু এমন একটি মুহূর্ত দেখার জন্য আমি প্রতিদিন সেখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো। কিন্তু হায়! তা কি হয়? আমি তো এই শহরে দাঁড়িয়ে থাকতে আসিনি! আমি হাটতে এসেছি, আমি দৌঁড়াতে এসেছি!! আমি ক্লান্ত হতে এসেছি। তবে এই জীবনের দৌঁড়-দৌঁড় খেলায় সত্যিই যদি কখনো ক্লান্ত হয়ে যাই, যদি সেই ক্লান্তিকে মুছতে কখনো জীবনানন্দের মতো করে বনলতাকে খুঁজতে হয়- আমি যাবো! পৃথিবীর সমস্থ আকাঙ্খা দু’চোখে নিয়ে আমি ঠিক কাঙ্গালের মত দাঁড়াবো সেই মহান আলোর সামনে। যাবতীয় অন্ধকার ছুড়ে ফেলে আমি আবার আলোকস্নাত হবো! © ছবিঃ সংগ্রহ।

........... লেখাটি এই ফেসবুক পেজেও প্রকাশিত হয়েছে: https://www.facebook.com/FOPCF ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।