আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল্ট্রামডার্ণ তরুণী, একজন রিকশাওয়ালা এবং ল্যাম্পপোস্টের আলোয় তব্দা খাওয়া তিন যুবক

অপ্রিয় এবং অবাঞ্ছিত... উহ! মরার পড়াশোনা যে কে আবষ্কার করল! ভাল কথা, পড়াশোনা আবিষ্কার করেছে, কিন্তু পরীক্ষা কেন আবিষ্কার করল! ফাইনাল পরীক্ষার আছে আর তিন দিন। ব্যবসায় প্রশাসনের ছাত্রের পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা। জ্বালা! এমনিতেই ইস্কুল-কলেজে ব্যাং কেটে, কেমিক্যাল ঘেঁটে, পেন্ডুলাম দুলিয়ে যথেষ্ট বিরক্ত হয়েছি! যাই হোক, পদার্থবিজ্ঞানের চিপ্টা খেয়ে আমরা তিন অপদার্থ, আমি হিমু বেচারা, সবুজ পন্ডিত এবং টেকনিক্যাল কাইফ, বিষন্ন চিত্তে বাসায় যাচ্ছি। সময়ঃ সন্ধ্যার পর নতুন বউএর মত রাত। তিন বন্ধু রিকশায় করে উত্তরা আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম।

আবছা অন্ধকার আর সোডিয়াম ল্যাম্পপোস্টের আলোয় পড়াশোনার আবিষ্কারকর্তাকে গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে যাচ্ছিলাম আমরা। স্বাস্থ্যসচেতন আঙ্কেল-আন্টিরা একে একে দেখা দিতে শুরু করেছেন। হঠাত দেখা গেল জিন্স আর আঁটসাট ফতুয়ায় শরীরের ভাঁজ দেখিয়ে ওড়না ছাড়া রীতিমত উগ্র পোশাক পড়া স্বল্পবসনা এক আল্ট্রাস্মার্ট তরুণীকে। কাঁধে বিশাল ভ্যানিটি ব্যাগ, যার ভেতরে এই গরিবের ল্যাপ্টপ ধরে আরও কাঁচা বাজার রাখার জায়গা থেকে যায়। তরুণ, রক্ত গরম, সমাজ উন্নয়নবাদী, হিন্দী সিরিয়াল দেখা সহপাঠিনীদের পচিয়ে অভ্যস্ত আমরা তিন বুদ্ধিজীবি গুঞ্জন শুরু করলাম নিজেদের মধ্যে।

গুঞ্জন মানে ওই "স্মার্ট" তরুণীর সমালোচনা আর কী। বড়লোকের বখে যাওয়া মেয়ে, কাপড় না ন্যাকড়া, কাপড় কেনার টাকা নেই... হ্যান-ত্যান। আমাদের ৩০-৩৫ বছর বয়সী রিকশাওয়ালা এতক্ষণ আমাদের আলোচনা শুনছিল। মাঝখানে বলে ওঠে, "মামা, আমি উনারে চিনি। উনার পিচ্চি একটা মাইয়্যা আছে, রাজউক স্কুলে পড়ে।

প্রায়ই সময় আমি ট্রিপ নিছি। " আমরা তব্দা খেয়ে গেলাম! দেখে তো বুঝা যায় না ওই মেয়ের একটা বাবু আছে! রিকশাওয়ালা মামা আরও বল্লঃ "আমার মেয়েকে মামা আমি গরীব হলেও তিন কুচি দিয়া সালওয়ার কামিজ পড়াই। আর বড়লোক হইয়াও অগো কাপড় কেনার টেকা পায় না। চিন্তা করেন মামারা, এই মহিলা যদি এমনে শরীর দেখিয়ে ঘুরে, তার বাচ্চা মাইয়্যাটা ভবিষ্যতে ক্যামনে ঘুরবে!" আমরা তিন বন্ধু অবাক মুগ্ধতা নিয়ে প্রায় নিরক্ষর রিকশাওয়ালার দিকে তাকিয়ে থাকি। আর রিকশাওয়ালা প্যাডেল মেরে এয়ারপোর্ট রেলক্রসিঙের দিকে আমাদের নিয়ে এগোতে থাকে।

... ...................................................................................... আমার ব্যক্তিগত অভিমতঃ পোশাক মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে কিছু মানুষ ভুলে যান, এটা রুচিরও পরিচায়ক এবং যে পোশাক আমাদের দেশীয় কালচারের ভাষায় অশালীন, তা ওই পোশাক পরিধানকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই বিতর্কিত করবে। ** আমার ব্যক্তিগত ব্লগের জন্যও এক কপি সংরক্ষণ করলাম। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।