আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তামিমকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি!

রাতে হোটেল পেনিন সুলায় নিজের কক্ষে উসাস ভঙ্গিতে বসে আছেন তামিম ইকবাল। হতাশায় মুহ্যমান। ভেতরে দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে, কষ্টগুলো দেখাতে পারছেন না। কে আসছেন কে যাচ্ছেন ওদিকেও মন নেই। ভাবছেন দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার প্রাপ্য ছিলো গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি।

খেলার আগের রাতে কেন কাঁদেন তামিম? কোন দুঃসংবাদ না তো? তারচেয়েও বেশি কিছু ঘটে গেছে তামিমের জীবনে। মাত্র তো দুটো ম্যাচে রান করতে পারেননি তামিম। এতেই দল থেকে তাকে ছুঁড়ে ফেলার উদ্ভট চিন্তা করতে পারলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল! হোটেল থেকেও তাকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন সিরাজকে। ভেতরের কান্না চোখের জল হয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে। হাউমাউ করে কাঁদতে পারলে ভালো হতো।

ঘরের ভেতরে অনেক মানুষ থাকায় পারলেন না। ভেজা চোখ মুছতে মুছতে লাজুক হাসছিলেন। আসলে নিজেকে সামলে নেওয়ার একটা বৃথা চেষ্টা। তাঁকে যারা সান্ত¡না দিতে এসেছিলেন তাদের দুই একজনকেও চোখ মুছতে দেখা যায়। এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।

শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষ হওয়ার পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে, এনায়েত হোসেন, প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ল এবং নির্বাচক হাবিবুল বাশার বিসিবি সভাপতির অফিসে যান। মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও যোগ হন তাদরে সঙ্গে। দলের পারফরমেন্স নিয়ে আলোচনার জন্যই এই চারজনকে ডেকেছেন বিসিবি সভাপতি। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন চেয়ারটা টেনে যেই বসেছেন, অমনি মোস্তফা কামাল তাঁকে নির্দেশ দিলেন,“তামিমকে আমি দলে দেখতে চাই না। ওকে বাদ দেন।

তার জায়গায় জাতীয় লিগে যারা ভালো খেলছে তাদের মধ্য থেকে একজনকে নিয়ে নেন। তামিমকে হোটেলেও রাখবো না। ” ভাষাগত কারণে স্টুয়ার্ট ল বিসিবি সভাপতির কোন কথাই বুঝতে পারছিলেন না। পরে তাঁকে ইংরেজিতে তর্জমা করে দেওয়া হলে আপিত্ত করেন,“না, না তামিম খেলবে। তাকে বাদ দেওয়া যাবে না।

” ঘটনার হুবহু বর্ণনা পাওয়া গেছে যারা উপস্থিত থেকে সভাপতির কথায় বিব্রত হয়েছেন, তাদের একজনের কাছ থেকে। রাতটা কোন মতে কাটে, রোববার সকালেই এককান দুইকান হয়ে বিসিবি সভাপতির কথাগুলো ছড়িয়ে পড়ে। তামিম জানতে পান সোমবার দুপুরে হোটেল থেকে মাঠে আসার পথে। কষ্ট চেপে রেখে সবার আগে টানা একঘণ্টা নিবিড় অনুশীলন করেন। এরপর সাজঘরে গিয়ে আর মাঠে ফেরেননি।

ম্যানেজার জাহিদ রাজ্জাক মাসুমকে জানিয়েদেন তৃতীয় ওয়ানডে খেলবেন না। নির্বাচকরা তাঁকে বোঝাতে চেষ্টা করেন। অনেক জোরাজুরির পর খেলতে রাজি হন তামিম। বলেন,“যদি আমাকে একাদশে রাখা হয় তাহলে খেলবো এবং হোটেল থেকে বের করে দেওয়ার জবাব দেবো ব্যাট দিয়ে। ” ওহ বলা হয়নি।

ওই রাতে বিসিবি সভাপতি মোস্তফা কামালের সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা বলেছেন তামিম। একটা প্রশ্নও করেছিলেন, কামাল ভাই আপনি আমাকে দল থেকে বাদ দিতে বলেছেন? হোটেল থেকে আমাকে বের করে দেওয়ার কথা কে বলেছে, আপনি? মোস্তফা কামাল তামিমকে উত্তর দিয়েছেন,“না, আমি তো ওসব বলিনি। আমি বলবো কেন? নির্বাচকরা দল নির্বাচন করে। আমি কোন হস্তক্ষেপ করি না। ” (এই তথ্য পাওয়া গেছে তামিমের ফোনের সময় যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের কাছ থেকে।

) ঘটনা ফাঁস এবং খবর প্রকাশ হওয়ায় বেজায় ক্ষেপেছেন বিসিবি সভাপতি। ওই সভায় যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে জেরাও করছেন। বিসিবি সভাপতি এবং অন্যান্য পরিচালকদের অনুমান ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন সিরাজ একটি পত্রিকাকে ঘটনাটি বলে দিয়েছেন। অবশ্য এনায়েত হোসেন অস্বীকার করেননি বা হ্যাঁও বলেননি। কৌশলে উত্তর দিয়েছেন,“ওখানে তো আমি একা উপস্থিত ছিলাম না।

জালাল সাহেব তো আগে থেকে সভাপতির সঙ্গে ছিলেন। আমি, বাশার এবং ল তিনজনে পরে গিয়েছি। আমার ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে কেন? অন্য কেউও তো বলতে পারে। ” জালাল ইউনুসও ঘটনা ফাঁস করেননি বলে দাবি করেছেন। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে জাতীয় দলের মধ্যে কোন সমস্যা হলে তা সমাধানের দায়িত্ব ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের।

কিন্তু এনায়েত হোসেন ওসবে কান দেন না। বেশিরভাগ সময় তিনি বিদেশে থাকায় উদ্ভুত পরিস্থিতি সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল না। খেলোয়াড় এবং কোচের সঙ্গেও কখনো বসেন না বলে অভিযোগ করেছেন সিবিবি সভাপতির ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা। সেজন্যই সভাপতি বিরক্ত হয়ে এনায়েত হোসেনকে ওই কথা বলেছেন বলে দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তার। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য মোস্তফা কামালের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তর দেননি।

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষ হলে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। ukbdnews থেকে শেয়ার করা। লিনক..। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.