আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার মোবাইল ও মাইয়াগো ডিস্টার্ব দেওনের কাহিনী (ঈষৎ লুল)

কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! মোবাইল হাতে পাবার পর কি কি আকাম করছি আজ কেন যেন বারবার মনে পড়তেছে। ১/ একবার ভাবলাম, সারাদিন কথা কই, টয়লেটে নয় কেন? গেলাম মোবাইল নিয়ে বড়টা করতে। ব্যস, মোক্ষম মুহূর্তে মোবাইল পড়ে গেল প্যানের মধ্যে। ফার্স্ট মোবাইল, বয়স হইছে মাত্র ১০ দিন, সেইটা প্যানের মধ্যে পড়লে বাসায় কি বলবে? আর...ইয়ে মানে...যে নাম্বারে কথা কই সেইটাই বা পামু কেমনে? সুতরাং চোখ বুইজা ডান হাত দিয়া নাক টিপা বাম হাত ঢুকাইয়া দিলাম প্যানের মধ্যে...বের কইরা আনলাম মোবাইল! আমার প্রথম NOKIA 1600! অতঃপর ঐ মোবাইলের রিঙ্গার নষ্ট হইয়া গেল...স্ক্রিনের দিকে তাকাইলে বুঝা যায় ভিতরে পানি জইমা আছে...বুঝেনই তো কিসের পানি...রিং আর বাজে না...ঐ মোবাইল চালাইলাম আরও তিন মাস! ২/ ফার্স্ট ইয়ার। ৪ নাম্বার রুম।

হাতে অনেক নাম্বার। ভাবলাম, ডিসটার্ব দিই। ফোন দিলাম শেরে বাংলা কৃষি ভার্সিটির এক মাইয়ারে। এক পর্যায়ে মাইয়ারে কইলাম, একুশে বইমেলায় সন্ধানীর স্টলে আইসেন, যত্নের সাথে ঢুকাইয়া দিমু। মাইয়া আঁতকে উইঠা কয়, কি ঢুকাইয়া দিবেন? কইলাম, ব্লাড ট্রান্সফিউশনের সুঁই ঢুকামু।

ক্যান আপনি কি ভাবছিলেন? ৩/ ২০১০ সালের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার দিন। আমি তখন ফার্স্ট ইয়ার। কলাভবনে ভর্তি পরীক্ষার সিট পড়ছে। গেছি কলাভবনে ভাব মারতে। লগে পোলাপাইন।

যথারীতি এক মাইয়া বাইর হইয়া আইল। বন্ধু কুদ্দুস কইল, আপুমনি কয়টা হইছে? মাইয়া কয়, আশিটা। কুদ্দুস কয়, সমস্যা নাই, চান্স হইয়া যাইব। জুওলজি পারছ তো? হুম পারছি। গুড।

আর সাধারণ জ্ঞান? পারছি। ভালো। কোন সমস্যা হইলে আমারে কইবা। এই নাও আমার নাম্বার। ঠিক এই মুহূর্তে বেরসিকের মত আপুমনি কইয়া উঠল, তুমার কয়টা হইছে?? ৪/ তিন নাম্বার ঘটনার আগের রাত।

হঠাৎ গভীর রাইতে ফোন পাইলাম। "হ্যালো ছালে বাই, আমি তো ফরিদপুর থেইকা পরীক্ষা দিমু, তা আপ্নে নাকি কুসচেন পাইয়া ডিএমসিতে চান্স পাইছেন, আমারে কি দেয়া যাবে? কত টেকা?" বুঝলাম, আমাগো কেউ। খুঁজতে খুঁজতে চলে গেলাম আরেক ব্লকে। দেখি একগাদা ফাজিল পুলাপাইন একের পর এক পুলারে ফোন দিয়া ডিসটার্ব দিতাছে। আমার মুবাইলে ছিল ১৬০ টাকা।

ছেলেদের ফোন দিয়া পোলাপাইন বিরক্ত। ঠিক হইল, মাইয়াগো ডিস্টার্ব করা হইব এইবার। এক হালা লুইচ্চা প্রায় ১০ টা ডিএমসির আমাদের ব্যাচের মাইয়াগো নম্বর দিল। ব্যস, আমরা ফোন দেয়া শুরু করলাম। "হ্যালো, অমুক আপু, আমি তো অমুক এলাকা থেইকা পরীক্ষা দিমু...প্রসপেক্টাস দেইখা আপনার নাম্বার নিছি...তা আপনি নাকি কুসচেন পাইয়া চান্স পাইছেন...?" আমরা আমার একই নাম্বার থেকে বরিশালের জরিনার নাম্বারে ফোন দিলাম, বললাম আমিও বরিশালের ছেলে, জরিনা ফাইজলামি বুঝে কেটে দিল।

একটু পরে একই নাম্বার থেকে রাজশাহীর সখিনার নাম্বারে ফোন দিয়ে বললাম আমি রাজশাহীর ছেলে, সখিনাও কেটে দিল। ওদের পাশের রুমের খুলনার মর্জিনারে ফোন দিয়া বললাম আমি খুলনার ছেলে, মর্জিনাও খট কইরা রাইখা দিল। কিন্তু আমাদের অধ্যাবসায় বৃথা গেল না। পাবনার আকলিমা ফোন ধরে অনেকক্ষণ গেজাইল, আমাদের এক পোলাও বানাইয়া বানাইয়া নাম রেজিস্ট্রেশন নাম্বার রোল নাম্বার কতকিছু কইল। পরের দিন যখন ভাব টাব মাইরা কলাভবন থেইকা ব্যাক করতেছি তখন আকলিমা কল দিল।

"হ্যালো রফিক!" মধুর কণ্ঠ শুইনা আমার মনে পড়ল এই নামটাই বানায়া বানায়া গতকাল ওরে বলা হইছিল। কইলাম, "জী আপু বলেন"। "তোমার পরীক্ষা কেমন হইছে?" "ভালা"। "আচ্ছা তোমার গলা গতরাতে একরকম আর আজকে অন্যরকম লাগতেছে ক্যান?" "ইয়ে মানে...পরীক্ষা দিয়া কেমন গলা বইসা গেছে"। ব্যস, এরপর আকলিমারে ট্যাকল দিতে আমার আরও একশ টাকা গেছিল।

পরের দিন ক্লাসে গিয়া ব্যাপক ভয় ভয়ে ছিলাম, আকলিমা ফোন দিলে তো আমি ধরা পইড়া যামু, কারণ অ্যানাটমি ডিসেকশনে যেভাবে বসায় তাতে আকলিমা আমার চেয়ে মাত্র দশ হাত দূরে বইসা আছে! ফোন দিলে আমি শেষ! যাউকগা, এর পরে আর কাউরে ফোনে ডিসটার্ব দেই নাই। ফেসবুকে দিছি, বাট সেই গল্প আরেকদিন কমু। আইজকা যাইগা। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.