আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই প্রথম আমি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বাধ পেলাম । ধন্যবাদ গ্রামীণ ফোন। ধন্যবাদ মোবিক্যাশ সার্ভিস।

আল্লাহ তা'লা বলেন, "নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমাসমূহ এবং ভাগ্য নির্ধারক শরকসমূহ অপবিত্র ও শয়তানের কাজ ছাড়া কিছুই না। অতএব, এগুলো থেকে বিরত থাক যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। " সূরা আল মায়েদা - ৯০ দু'দিন ধরেও কমলাপুর ষ্টেশন থেকে চট্রগ্রাম যাওয়ার কোন টিকিটই কিনতে পারছিলাম না। দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে থাকার পরেও কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৎ ব্যক্তিগণ জানালেন ৬ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত কোন সময়ের সিটই খালি নাই। অসুস্থ গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে চিটাগাং যাওয়াটা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

বাসে ঝাকি খাওয়ার ভয়ে এবং বাথরুমের সমস্যা থাকায় ট্রেনকেই একমাত্র মাধ্যম হিসাবে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সব টিকিট শেষ !!! মানলাম ঈদের সময় সব টিকিট বুক হয়ে যায় আগেই কিন্তু এখন কিসের সমস্যা। কাউন্টারের ভিতরে দেখলাম এক ব্যক্তিকে ১২ টি টিকিট হ্যান্ডওভার করতে কোন প্রকার লাইন ছাড়াই। বুঝলাম কপালে আর টিকিট নাই, সব কালোবাজারীর হাতে চলে গেছে। ।

বিষন্ন মনে ঘরে ফিরছিলাম কারন চিটাগাং যেতেই হবে, আমার ব্যবসায়ের প্রয়োজনতো বটেই সেই সাথে আমার স্ত্রী দীর্ঘ দু'বছর পর চিটাগাং যেতে চাচ্ছে তাকে কিভাবে এভোয়েট করি; একেতো অসংখ্যবার চিটাগাং গেছি এই দু'বছরে একা একা। কিন্তু কোন বারই দু'দিনের বেশী থাকতে পারি নাই আবার চলে আসতে হয়েছে ঢাকায়। এসকল কারনে তাকে নেওয়া হতো না। যাই হোক হঠাৎ মনে পড়ল মোবাইলের মাধ্যমে টিকিট বুকিং দেওয়ার কথা। একটু আশার আলো মনের কোন জ্বেলে উঠল।

১২১ এ ফোন করে জেনে নিলাম টিকিট বুকিং সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ১২০০ নম্বরে ডায়াল করতে। এবং কাষ্টমার ম্যানেজার চমৎকার ভাবে জানিয়ে দিলেন কি করে মোবিক্যাশ এর মাধ্যমে টিকিট কিনতে হয়। যথানিয়মে রেজিষ্ট্রি করে নিলাম। সময়টা ছিল হরতালের সন্ধ্যা, ৬ তারিখ সকালে মহানগর প্রভাতীর তিনটি টিকিট পেয়ে গেলাম কিন্তু মোবাইলে টাকা রিচার্জ করতে পারছিলাম না। কারন আমাকে যে একাউন্ট নম্বরটা দেওয়া হয়েছে তা ১২ ডিজিটের এবং গ্রমিন ফোন সেন্টার ছাড়া ১২ ডিজিট রিচার্জ করা যায় না।

অনেক জায়গায় দৌড়া দৌড়িকরেও কোথাও কাষ্টমার কেয়ার সেন্টার খুঁজে পেলাম না। তাই সকালের জন্য আমাকে অপেক্ষা করতে হল। অবশেষে ৭ তারিখ সকালের দুইটা এডল্ট ও একটা চিলড্রেন নিয়ে মোট তিনটি টিকিট কিনে ফেললাম মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে কোন প্রকার লাইনে না দাঁড়িয়ে। আমি বেশ অবাক হলাম, কারন ১১ তারিখ পর্যন্ত সব টিকিই বিক্রি হয়ে গেছে বলে আমাকে জানানো হয়েছিল তাহলে এই টিকিট কোথা থেকে এলো? আমি এজ এ টেষ্ট কেস হিসাবে আরো কয়েকবার টিকিট বুকিং দিলাম এবং সহজে পেয়ে গেলাম, যেহেতু টিকিট বুকিং দিতে পয়সা লাগে না তাই আমি বিভিন্ন সময়ের ট্রেনের সিট এভেলএবেলিটি চেক করছিলাম এবং প্রত্যেক বার আমি সিট পেয়ে যাই। আমাদের দেশের সরকারী চুকুরীজীবি অসৎ কমকর্তা এবং কর্মচারীর দৌরাত্ম এতো বেড়ে গেছে যে মাটির নীচে গেলেও এদের দেখতে পাবেন যে ঘুষ দাবী করছে।

যাইহোক নিজেকে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল নাগরিক মনে হল। কোন ঝামেলা ছাড়া টিকিট কিনে ফেলাম; কিন্তু টিকিট সংগ্রহ করতে গিয়ে পড়লাম বিপাকে। সেখানে বসানো হয়েছে পুরানো আমলের এক এনালগ কর্মকর্তাকে যিনি একই সাথে ইন্ডিয়ার টিকিট দিচ্ছিলেন। কম্পিউটারের কি বোর্ড খুঁজে খুঁজে অক্ষর চেপে চেপে এক একটা টিকিট দিতে কমছেকম ২০ মিনিট পার করছিলেন। পায়ের গোঁছা ফুলে গেল শুধু টিকিটটা হাতে পেতে! যেহেতু ঘন ঘন চিটাগাং যেতে হয় এবং প্রত্যেকবার বাসেই যাই ট্রেনের টিকিটের আশা ছেড়ে দিয়ে তাই মনের কোনে একটু আশার আলো জেগে উঠেছে গ্রামীন ফোনের "মোবিক্যাশ" সার্ভিসের কল্যানে।

ধন্যবাদ গ্রামীন ফোনের "মোবিক্যাশ" সার্ভিসকে। আপনারা যারা ট্রেনে কোথাও যেতে চান তারা একদিন আগে ঘরে বসে ট্রেনের টিকিট বুকিং দিয়ে দিবেন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই। কিভাবে করবেন? নিচের ইনেসট্রেকশন ফলো করুনঃ ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুনঃ Tket Send করুন ১২০০ নম্বরে এবং অপেক্ষা করুন ফিরতি মেসেজের জন্য। আপনাকে একটা নতুন ১২ ডিজিটের একাউন্ট নম্বর এবং ৪ ডিজিটের পিন নম্বর দেওয়া হবে। এবার আপনার সিকিউরিটির জন্য পিন নম্বরটা চেঞ্জ করতে হবে এবং একটা নতুন পিন নম্বর দিতে হবে আপনার ইচ্ছা মতো।

তবে সাবধান পিন নম্বরটা যেন পর পর সংখ্যা না হয় এবং আপনাকে অবশ্যই পিন নম্বর কোথাও লিখে রাখতে হবে যেন পরবর্তীতে ভুলে না যান। নতুন পিন নম্বর দেবার জন্য নিম্ন লিখিত বাটন চাপুনঃ *777*4*পিন নম্বর (যা আপনাকে দেওয়া হয়েছে)*ভিন্ন চারটি পিন নম্বর (যা আপনি মনে রাখবেন)*পুনারয় একই নম্বর টাইপ করুন এবং# চেপে সেন্ড করুন। ফিরতি মেসেজে আপনাকে কনফারমেশন জানানো হবে। এবার আপনি *১৩১# চাপুন, আপনার সামনে নিচের অপশন আসবেঃ 1 Book Train Ticket 2 Purchase Train Ticket after Booking 3 Purchases train Ticket 4 Cricket Ticket Answer button চেপে 1 Type করে সেন্ড করুন, এবার পর্যায়ক্রমে কোথা থেকে যাত্রা শুরু করবেন, কতো তারিখে যাত্রা শুরু করবেন, কোথায় যাবেন , কিধরনের সিটের জন্য বুক দিবেন, কয়টা সিট লাগবে ইত্যাদি ফলো করে যান এবং জেনে নিন টিকিটের মূল্য কতো। প্রয়োজনে নিকটস্থ গ্রামীন ফোনের কাষ্টমার কেয়ারে গিয়ে আপনার ১২ ডিজিটের একাউন্টে পূর্ব থেকেই রিচার্জ করে নিতে পারেন।

কারন টিকিট না কিনলেও আপনি উক্ত টাকা আপনার ব্যালেন্সে ট্রানসফার করতে পারবেন। তাই ভয়ের কিছু নাই। এর পর টিকিট করফারমেশন মেসেজ আসবে এবং গ্রামীন ফোন টিকিট প্রতি ২০ টাকা কমিশন নিবে। যা আপনার সময়ের মূল্য এবং রিক্সা ভাড়ার থেকে নেহাতই সামান্য। ব্যাস হয়ে গেল নিশ্চিত টিকিট এবং পেয়ে গেলেন নিরপদ জার্নির মজা।

আবারো ধন্যবাদ জানাই "মোবিক্যাশ" কে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।