আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্রোতের বিপরীতে মেঘদল

জীবনকে এমন ভাবে সাজান যেন আপনার ব্যক্তিগত ডায়েরীটা কখনো লুকাতে না হয়। বাংলাদেশের সংগীত জগতে ভিন্ন স্বাদের যে গুটিকয়েকটি ব্যান্ড শ্রোতাদের মনোযোগ কেড়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম মেঘদল। সবসময় প্রচলিত ধারার বাইরে বেরিয়ে এসে গান করার চেষ্টা তাদের মধ্যে। ‘লালনের দেশে’র মতো গানটি করতে পেরে তারা গর্বিত। ‘দ্রোহের মন্ত্রে ভালোবাসা’র পর গত বছর মুক্তি পায় তাদের দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘শহরবন্দী’।

ব্যান্ডটির জানা অজানা নানা গল্প। শুরুর গল্প মেঘদল ২০০২ সাল থেকে তাদের যাত্রা শুরু করে। তবে বলা যায়, ২০০০ সাল থেকেই এর জন্ম প্রক্রিয়ার শুরু। তখন থেকেই কয়েকজন তরুণ একসঙ্গে গান করতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর চারুকলার বিভিন্ন কনসার্টে পারফর্ম করতেন তারা।

গাইতেন নিজেদের গান এবং অন্যদের গান। বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন তারা। তবে মেঘদল গঠিত হওয়ার পেছনের গল্পটি মূলত একটি আড্ডার কিংবা বলা যেতে পারে একটি কম্পোজিশনের। ‘ওম’ কম্পোজিশনটি দিয়ে মূলত শুরু হয় মেঘদলের যাত্রা। ২০০২ সালের দিকে মেঘদলের মেজবাউর রহমান সুমন, শিবু কুমার শীল, ব্ল্যাকের জাহান ও রম্য, চিন্ময়, টুটুল একসঙ্গে অ্যানিমেশনের কাজ করতেন আজিজ মার্কেটের ৪০, গ্র্যাফিকাল ইকোতে।

আর সারাদিন আড্ডা দিতেন টুকু মামার চায়ের দোকানে। আজিজ মার্কেটে তারা প্রতিদিন সকাল সাতটা-আটটার মধ্যে হাজির হয়ে যেতেন। তাদের ভাষায়, ‘আমাদের সেই ‘পারলৌকিক কামরা’র নাম আমরা দিয়েছিলাম ‘এথেন্স’। সেখানেই আমরা রেওয়াজ করতাম গিটার, খোল এবং হারমোনিয়াম নিয়ে। ’ সেই রেওয়াজের অংশ হিসেবেই একদিন শিবু ‘ওম’ গানটি গাইতে শুরু করলেন।

পরে সেই থিম থেকেই আস্তে আস্তে সবাই মিলে পুরো গানটির কম্পোজিশন করে ফেলেন। এরমধ্যেই তারা অনুভব করলেন, তাদের একটি গানের দল করা প্রয়োজন। জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখে চারুকলার একটি কনসার্টকে বেছে নিলেন তাদের নতুন ব্যান্ডের আত্মপ্রকাশের মঞ্চ হিসেবে। একমাস টানা অনুশীলন চললো। ব্যান্ডের নাম দেয়া হলো মেঘদল ।

ফরাসি কিংবদন্তী কবি বোঁদলেয়ারের কাছ থেকে ধার করা হয় এই নামটি (আমি ভালোবাসি আশ্চর্য মেঘদল/ কবিতা-অচেনা মানুষ; শার্ল বোঁদলেয়ার)। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে বাজারে আসে মেঘদলের প্রথম অ্যালবাম ‘দ্রোহের মন্ত্রে ভালোবাসা’। এমন না যে, বাজারে এসেই তাদের অ্যালবাম একেবারে হুলুস্থুল ফেলে দিয়েছিলো। আর এমনটা তারা প্রত্যাশাও করেননি। প্রচলিত ধারার বাইরে বেরিয়ে এসে একটা ব্যান্ডের অ্যালবাম করতে চেয়েছিলেন তারা ।

আর সবাই যে চারুকলার ছাত্র, সেই ছোঁয়াও রাখার চেষ্টা করেছেন অ্যালবামে। তাদের ভাষায়, ‘যেহেতু আমরা প্রচলিত ধারার বাইরে বেরিয়ে এসে গান করি, তাই আমাদের শ্রোতাশ্রেণীও তৈরি হলো প্রচলিত ধারার বাইরে। এই শ্রেণীর শ্রোতারা ভিন্ন কিছু শুনতে চায়, নতুন কিছু শুনতে চায়। এরা পিঙ্ক ফ্লয়েড শোনে, মহিনের ঘোড়াগুলি শোনে। ’ এরপর ২০০৭ সালে ‘নিয়ন আলোয় স্বাগতম’ শিরোনামের একটি মিক্সড অ্যালবামে তাদের একটি গান প্রকাশিত হয়।

‘নেফারতিতি’ শিরোনামের গানটি বেশ আলোচিতও হয়। সর্বশেষ ২০০৯ সালে মুক্তি পায় তাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘শহরবন্দী’। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.