আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন: রাশেদ খান মেনন

দুনিয়াতে শুধু দুই প্রকার মানুষ আছে। একদল ভাল, একদল খারাপ। এর বাইরে আর কোন বিভেদ নাই। তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশে রাশেদ খান মেনন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলীয় নেত্রী অবস্থায় কথা দিয়েছিলেন ফুলবাড়ির চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু তিনি সে কথা ভূলে গিয়ে উন্মক্তভাবে কয়লা উত্তোলন করছেন।

সমুদ্র বক্ষের গ্যাস বিদেশী কোম্পানীকে শতভাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করে জাতির স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। তিনি আরো বলেন, দেশে আজ দুটি পক্ষ অবস্থান করছে। যার একপক্ষে রয়েছে গুটি কয়েক লোক, যারা দেশের সম্পদ বিদেশে হস্তান্তর করে কিছু পেতে চায়। বিপরীত পক্ষে অবস্তান করছে ১৬ কোটি মানুষ। যারা দেশের সম্পদ দেশে রাখার জন্য মাঠে আন্দোলন করে যাচ্ছে।

তাই গুটি কয়েক লোকের কাছে জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে দিতে পারিনা। শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় সম্পদে জনগনের মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে ৭ দফা দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত মহাসমাবেশ উপস্থিত বক্তরা এসব কথা বলেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে পিএসসি ২০০৮ ও কনোকোফিলিপস এর চুক্তি বাতিল, পিএসসি ২০১১র প্রক্রিয়া বন্ধ,সুনেত্র ক্ষেত্রে জাতীয় সংস্থার মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন ,উন্মুক্ত খনি নিষিদ্ধ ও এশিয়া এনার্জি বহিষ্কারসহ ফুলবাড়ী ৬ দফা চুক্তি বাস্তবায়ন, সংসদে খনিজ সম্পদ রপ্তানি নিষিদ্ধ আইন পাস ও জাতীয় সক্ষমতা বিকাশে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করা। সামবেশে কলামিস্ট আবুল মকসুদ বলেন, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা হলে দেশের ফসলী জমির নষ্ট হয়ে যাবে। তাই মাটির নিচে সোনা, হীরা থাকলওে খাদ্য শস্যের বিনিময়ে এ পদ্ধতিতে উত্তোলন করতে দেওয়া হবেনা।

তাই ভূ-গর্ভস্থ পদ্ধতিতেই খনিজ সম্পদ উত্তোলন করতে হবে। তিনি বলেন, যারা আমাদের আন্দোলননের তথা অধিকারের বিরোধীতা করছে তারা আস্তাকুড়ে নিপতিত হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে দেশে জ্বালানীর মুল্য বৃদ্ধি করা হলেও তা আন্তর্জাতিক বাজরে স্থিতিশীল রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আইএমএফ-এর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই এটা করা হয়েছে। এছাড়াও টিপাইমুখ বাধ মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ঢাবি অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু প্রমুখ। জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জাহাঙ্গীরনগর বিশবিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহম্মদ বলেন, দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি নিয়ে সরকার জনগনের সঙ্গে মিথ্যাচার করেছে। নির্বাচনে জয়ের আগে এক কথা ও জয়লাভের পর অন্যকথা বলছে। তাদের দূর্নীতির কারনেই জনগনের টাকা দিয়ে ভূর্তুর্কি দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের তেল গ্যাস নিয়ে বিদেশীদের যে চাহিদা রয়েছে, তা পূরন করতে গেলে দেশের অস্তিত্ব থাকবে না।

তিনি আরো বলেন, নৌবন্দর নিয়ে এমনিতেই আমরা চিন্তাগ্রস্ত। অন্যদিকে নিরপত্তার জন্য বিমান বন্দরকে বিদেশীদেও হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। তাহলে আমাদের দেশেল নিরাপত্তা কোথায়? বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান বলেন, প্রত্যেক সরকারই দেশকে শোষন করার জন্য বিদেশি শোষকদের ডেকে নিয়ে আসে। এই বর্তমানে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কট উদ্যেশ্যমুলক ভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। বিদেশের সাথে সাক্ষরিত কোনো চুক্তির সচ্ছতা নেই।

সরকার গোপনে দেশের স্বার্থ বিরেধী একর পর এক চুক্তি সাক্ষরিত করে চলেছে। কিন্তু তা কখনোই মনে নেয়া হবেনা। তিনি বর্তমান সঙ্কট দুর করতে সবাইকেএক হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলার আহ্বন জানান। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, দেশের জনগনের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলে ক্ষমতায় থাকতে চাইলেও জনগন আপনাকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না। তিনি বলেন, কয়লা আমদানী করুন, তাতে ক্ষতি হবে না।

কিন্ত কয়লা উন্মুক্ত উত্তোলন করতে গিয়ে দেশের ফসলি জমি ক্ষতি করবেন না। বিপ্লবী পার্টির সাধারন সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সময় জ্বালানী নিরাপত্তা ও সমুদ্র বক্ষের গ্যাস রক্ষার পতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেননি। এছাড়াও ক্ষমতায় আসার জন্যই বিএনপির রোডমার্চ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। সমবেশে অন্যান্যেও মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক আকমল হোসেন, সিপিবির সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান, গণসংহিত আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারন সম্পাদক সাইফুল হক, মোশাররফ হোসেন নান্নু, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার প্রমুখ। সামবেশে রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সংহতি জানানো হয়।

এর আগে দুপুর ১২টা থেকে জাতীয় সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের ওপর বিভিন্ন গান ও নাটক পরিবেশন করা হয়। http://bd24live.com/3/প্রধানমন্ত্রী-বিশ্বাসঘা/ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.