আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনটা ভীষন ভাল...টিকেট কেটে আনলাম আমার প্রিয় স্বদেশী মুভির।

লেখাপড়া শেষ করেছি ঢাবি থেকে। আজ কাজ করি একটা বেসরকারি ফার্মে । কাজের শেষে নাই কাজ তাই খই ভাজ । ব্লগে খই ভাজি। ৩৮ বছর!! এতদিন অপেক্ষা!! আমার বাবাটাও মারা গেল স্বপ্ন পুরন হবার আগেই।

অবশ্য বাবা এখন স্বর্গে বসে ভাববেন, আমার স্বপ্ন পুরন না হলে কি হবে আমার ছেলে-মেয়ে-নাতিদের স্বপ্নতো পুরন হল। হুম ৩৮ বছর পর আমার বাবার স্বপ্ন পুরন হতে চলেছে। বাবা বলেছিল দেখবি তোকে একদিন আর কষ্ট করে ভারত যেতে হবেনা, এখানেই চলে আসবে ভারত। হ্যা বন্ধু-বান্ধবীগন আজকে স্বপ্ন পুরনের টিকেট কেটে আনলাম। অনেক কষ্ট করে পেলাম টিকেট।

কারন ব্যাপক চাহিদা। ভারতীয় জিনিস বলে কথা। আর সেই জিনিস হল আমার প্রিয় দেশ ভারতের আসন্ন মুক্তি পাওয়া সিনেমা দেখার টিকেট। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার বিজয়ের মাস ডিসেম্বরকে সেলিব্রেট করতে বাংলাদেশের একমাত্র মুক্তিযোদ্ধের সার্টিফিকেট ব্যবসায়ী এবং লাইসেন্সধারী মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষের দল বালীগ সরকার এর তথ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্য অনেক বিখ্যাত ভারতীয় মুভি আমদানি করেছে। আর সেই সুত্র ধরে মহান ডিসেম্বরের ২৩ তারিখে টালিগঞ্জের জিৎ অভিনীত "জোর" মুভি ১২ টি সিনেমা হলে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সহকারে ৩৮ বছর পর দেশের প্রেক্ষাগৃহে আবার মুক্তি পাবে ভারতীয় চলচ্চিত্র।

এই আনন্দে আজকে আমি বাসায় এসে উলঙ্গ হয়ে চিত হয়ে ফ্যান ছেড়ে বুকের নিচে ভারতীয় সিনেমা দেখার টিকেট নিয়ে ঘুম দিয়ে এখন উঠে ব্লগে আনন্দের সংবাদ জানাচ্ছি। জয় বাবার স্বপ্ন পুরন। জয় হিন্দ। আসুন আমরা ভারতীয়দের কাছ থেকে অন্তত দেশপ্রেম শিখি । ভারতীয়দের তাদের দেশপ্রেমের জন্য , দেশের স্বার্থ উদ্ধার করার সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর আত্নপ্রত্যয় দেখে আমি আমাদের নিয়ে ভাবি।

যে দেশে বাংলাদেশের কোন চ্যানেলই চলার অনুমতি পায়না সেদেশের চ্যানেল-সিনেমা সব অনুমোদন পেয়ে যাচ্ছে একে একে। একটি দেশে জন্ম থেকে বড় হলাম । অথচ আমার সামজ আর দেশে প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই । ভারতীয় ছবি আমাদের প্রেক্ষাগ্রহে মুক্তি পাচ্ছে এমন খবর আমাকে মোটেও বিচলিত করেনি । এ দেশের কোন মানুষকে কি করে? বাংলাদেশের গন্তব্য আসলে কোথায়? ইতিহাসের পাতায় সময়ের ব্যবধানে হারিয়ে যাওয়া কোন রাষ্ট্রের তালিকায় নয়তো? দেশপ্রেমিকরা কোথায় ? প্রতিবাদ হবে, সমালোচনা হবে।

কিন্তু নিজের দেশের সংস্কৃতি ধ্বংস করার এ প্রক্রিয়া বন্ধ হবে না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছে তারা আর যাই হোক দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে বলে মনে হয় না। এদের কাছে দেশ বড় না এদের ব্যবসা বড়। এরা মুক্তিযদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির নামে প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিনিয়ত করছে ধর্ষন। যেখানে আমাদের একটি চ্যানেল ও ভারতে প্রচারের অনুমতি দেয় না তাদের নিজেদের স্বার্থের কথা এবং তাদের সংস্কৃতির ক্ষতি হবে বলে সেখানে আমাদের দেশের মানুষ তারতীয় চ্যানেলে বুদ হয়ে থাকে সারাক্ষন।

আমাদের প্রতিটি ঘরে ঘরে ভারতীয় অপসংস্কৃতির ছোয়ায় আচ্ছন্ন, এমন কি আমাদের শিশুরা পর্যন্ত ভারতীয় বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতি মোহবিস্ট হয়ে থাকে। এটা বাংলাদেশের জন্য শুধু লজ্জারই নয় চরম হতাশার। বাকি আছে আমাদের রুগ্ন প্রায় চলচ্চিত্র এখন তাকেও ধ্বংস করার পরিকল্পনা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্তের প্রতি চরম ঘৃনা জানাচ্ছি। আসুন আমরা সবাই দেশীয় সংস্কৃতিকে ভালবাসি,আর এ ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই।

**আর যদি সেই শক্তি না থাকে তাহলে নিচের লাইনগুলো সকাল বিকাল ঝপতে থাকুন এবং অবশ্যই আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগে মুখস্থ করে ফেলুন। কারন বলা যায়না আগামী বিজয় দিবসে এই সঙ্গীত যে গাইতে হবেনা। জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা! পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মরাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ(বাংলাদেশ) বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গা উচ্ছলজলধিতরঙ্গ তব শুভ নামে জাগে, তব শুভ আশিষ মাগে, গাহে তব জয়গাথা। জনগণমঙ্গলদায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা! জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে। ।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।