আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

''অভিমানী মানুষেরা আজ মালীর ঘামে ভেজা ফুল দিবে না '' এবং "হে বিজয় " -- দুটো কবিতা

বুকে জমা ---- দীর্ঘশ্বাস কারাগারের গরাদে মাথা কুটে মরা আমার বাক স্বাধীনতা । শোষকের ভয়ে বিনীত- কাপুরুষের মতো -- জীবন যুদ্ধে পরাজিত আমরা। ______________অভিমানী মানুষেরা আজ মালীর ঘামে ভেজা ফুল দিবে না ____________ প্রশ্ন করছি নিজেকে-- আজ কত বছর পেরিয়ে গেলো? স্বাধীনতা তোমাকে তো আজও দেখিনি--- আর কত বছর পেরিয়ে যাবে, স্বাধীনতা ,তোমাকে দেখার যে বড় স্বাদ ছিলো ... ভাঙ্গা,ভাঙ্গা স্বপ্নগুলোকে জোড়া দেবার নিরন্তর চেষ্টা অন্ধকার দেয়ালে বাকস্বাধীনতার নির্বাক হাহাকার নিভে যাওয়া শিখা-অনির্বাণরা চোখের পানির সাগরে , শোষকদের জলকেলি নিভৃতে ক্রন্দনরত বিচারের বাণীরা... —— সব — একনিমিষেই চোখের পাতার নিচে ভাসছে... যেন এক দুঃস্বপ্নের মতো। স্বাধীনতা ------ কি দিয়েছো তুমি আমায়? অন্যের কাছ থেকে সার্বভৌমত্ব ? দিতে কি পেরেছো ----- জবাব কি দিতে পারবে ফেলানীর কাছে ? বুকে জমা ---- দীর্ঘশ্বাস কারাগারের গরাদে মাথা কুটে মরা আমার বাক স্বাধীনতা । শোষকের ভয়ে বিনীত- কাপুরুষের মতো -- জীবন যুদ্ধে পরাজিত আমরা।

শুধু আনুষ্ঠানিকতা স্মৃতির বেদিতে মালীর ঘামে ভেজা ফুল দেওয়া আর নিজেকে সান্তনা দেওয়া, তুমি এসেছ-- বিজয়। তুমিতো আসোনি, অভিমানী মানুষেরা এখনও তোমায় খুঁজছে --- আমিও যে তাদের দলে...। ------------------------------- ১৫ই ডিসেম্বর, ২০১২ ---------------------------------- রাত ১১.৪৫। ২য় কবিতা... ------------- হে বিজয় ---- ইতিহাস,তোমায় ভুলিনি ইতিহাসের চাকার সশব্দতা মনে করিয়ে দেয় ,দিয়েছে বিজয়--- তোমাকে ভুলিনি, ভুলেছিলাম না এবং ভুলবোও না তোমাকে , হ্যাঁ বিজয় তোমাকেই ভুলোনা আমায় হে, বিজয় ক্ষুধার্ত , দরিদ্র শিশুটির দুঃসহ নিষ্পাপ, নিস্তেজ চাহনি কেমন জানি অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে--- বুঝেনা কিংবা বুঝাতে পারব না, তোমাকে চিনাতে পারব না , বিজয়কে । দুঃখ, ত্যাগ কিংবা চোখের পানি দিয়ে তোমাকে এনেছিলাম----- এই ছোট কুঁড়েঘরের কোনায়।

যেও না ফেলে থেকোনা এসো আবার , ফিরে। তুমি কি দেখনি , ছেলে হারা সেই মায়ের কান্না । তুমি কি দেখনি , লাঙল ফেলে স্টেনগান ধরা কৃষকটিকে। তুমি কি দেখনি , হাসি মাখা কিশোরীর মুখটির নির্মম মৃত্যু । তুমি কি দেখনি , মুক্তিযোদ্ধাটির স্বপ্নিল চোখ দুটি ।

তুমি কি দেখনি , বন্দীশিবিরের সেই নিষ্পাপ শিশুটির ক্ষুধার্ত মুখ । তুমি কি দেখনি , স্বপ্নময় কিশোর ছেলেটির হাতের স্টেনগানটি । তুমি কি দেখনি , মুক্তিযোদ্ধাটির ভাঙ্গা ভাঙ্গা হাতে লেখা চিঠিটি। তুমি কি দেখনি , উন্মত্ত আগুনে পুড়তে থাকা গ্রামটিকে । তুমি কি দেখনি , আকাশে উড়তে থাকা শকুনির দলটিকে ।

তুমি কি দেখনি , উন্মত্ত হায়েনার দলটিকে । তুমি কি দেখনি , জলপাই রঙের ট্যাঙ্কটিকে । তুমি কি একবারো দেখনি , উঠোনে বসা এলোমেলো শাড়ি পড়া বউটিকে অপেক্ষায়। তুমি কি দেখনি , সেই সাতই মার্চের উত্তাল রেসকোর্সকে। তুমি কি দেখনি , ঐ বেতার কেন্দ্রের যুবক মেজরটিকে ।

তুমি কি দেখনি , নিষ্পাপ ছেলেমেয়ে দুটির বাবার জন্য নিষ্ফল, নিরন্তর অপেক্ষা। তুমি কি একবারো দেখনি , চোখের নিচে কালি পড়া অপেক্ষায় শহীদ জননীকে । তুমি কি দেখনি , তুমি কি শোনোনি, তুমি কি একটুও বোঝোনি। হে বিজয় দামী একটা বিজয় ছিনিয়ে আনা বিজয়-- না, ধরে রাখা বিজয়-- বোঝোনি, বল - একটুও কি বোঝোনি---- ? অপেক্ষায় আছি , থেকেছি এবং থাকবোও আমৃত্যু তবুও তোমাকে খুঁজে ফিরছি-- যতদিন না নিজের, একদম নিজের করে পাবো । ------------------------------- ১৫ই ডিসেম্বর, ২০১১ ---------------------------------- রাত ১১.৪৫।

বিজয় দিবস, বা স্বাধীনতা দিবস বা একুশ আসলেই মনের ভিতরে একটা তীব্র অনুভূতি তৈরী হয়। সেই, অনুভূতির থেকেই কবিতা লেখা । বিজয় দিবস আসলেই আমি ১৫ ডিসেম্বর, রাত ১১ টায় কবিতা লেখা শুরু করি । অনেকের কাছে ছেলে মানুষী মনে হলেও, এর পিছনে রয়েছে তীব্র আবেগ। বিজয় দিবস আসতে অনেক দেরী ।

তাতে কি হয়েছে, স্বাধীনতা দিবসেই ব্লগে দিয়ে দিলাম। ▄ ▄ ▄ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।