আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল নিয়ে জামাতের ব্রিটিশ আইনজীবি স্টিভেন এর সমালোচনা ও তার আইনী জবাবঃ পর্ব-১

আমার এই ব্লগের কোনো লেখা বা লেখার কোনো অংশ আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া যে কোনো প্রকার মিডিয়াতেই প্রকাশ করা যাবেনা। যদি তা করা হয়, তাহলে আমি আইনগত এবং অবস্থাভেদে ব্লগের আইন/প্রসিজিওর অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে বাধ্য হব আপনারা সকলেই হয়ত অবগত আছেন যে ২০১০ সালের ২৫ শে মার্চ থেকে বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইবুনাল। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা যারা যুদ্ধাপরাধের সাথে প্রত্যক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহন করেছিলো তাদের সকলকেই এই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে একে একে দাঁড়াতে হবে। তবে বর্তমানে প্রায় ৫ জন কুখ্যাত অমানুষ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কারাগারে নিক্ষিপ্ত রয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য যে, এই যুদ্ধাপরাধের বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে জামাত সমর্থিত আইনজীবি, বি এন পি'র আইনজীবি সকলেই ইচ্ছেমতন মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন।

এর সাথে আবার যোগ হয়েছে জামাতের নিযুক্ত বিদেশী আইনজীবিরা। এদের মধ্যে ইংল্যান্ডের স্টিভেন কে কিউসি, এবং টবি ক্যাডম্যানের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। গত কিছুদিন ধরেই স্টিভেন মৌলবাদী টিভি আল জাজিরা সহ বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়াতে বাংলাদেশের শুরু হওয়া এই যুদ্ধাপরাধ বিচারের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করছেন এবং আশ্চর্য হলেও সত্য যে, তিনি এক পর্যায়ে যুক্তির ধার না ধেরে ইচ্ছেমতন একের পর এক স্টেটমেন্ট দিয়েই যাচ্ছেন। আমার এই লেখার প্রথম পর্বে আজ স্টিভেন এর স্টেটম্যান্ট ও তার আইনী প্রতিউত্তর দেয়া হবে। প্রথমেই জেনে নেই স্টিভেন কে কিউসি এর পরিচয়ঃ[/sb এই স্টিভেন কে কিউ সি সার্বিয়ার কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী স্লোবাডান মিলোসেভিচের পক্ষে ইয়াগোস্লাভিয়া ট্রায়ালে মামলা পরিচালনা করেন ।

আপনারা অবশ্যই জেনে থাকবেন এই মিলোসোভিচের নির্দেশে প্রাক্তন ইয়াগোস্লাভিয়ার একটি অংশ সার্বিয়ার মুসলমানদের উপর সৈন্যরা কি পরিমাণে গণহত্যা চালিয়েছিলো । সমগ্র পৃথিবী জানেন মিলোসোভিচের এই ঘৃণ্য অপরাধের কথা । সেই মিলোসেভিচের আইনজীবি ছিলেন এই স্টিভেন কে কিউ সি । সর্বপোরি , তার আরেকটি বড় পরিচয় হচ্ছে , আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ডিফেন্স কাউন্সিলের সদস্য হচ্ছে এই ব্যারিস্টার স্টিভেন । যদিও তিনি একজন আইনজীবি হিসেবে রিপ্রেসেন্ট করেছেন ও করে যাচ্ছেন সব খুনী , যুদ্ধাপরাধী ও অপরাধীদের তারপরেও তার মেন্টাল স্টেটটি এবং তার কথা বলবার সুত্র ও প্যাটার্ন পাঠকদের বুঝতে সুবিধার জন্যই স্টিভেনের এই পরিচয় তুলে ধরলাম ।

যেহেতু ব্যারিস্টার স্টিভেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ডিফেন্স কাউন্সিলের একজন সক্রিয় সদস্য সুতরাং তার প্রধান কাজ হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও বিভিন্ন অপরাধীর পক্ষে লড়াই করা । প্রফেশনাল কন্ডাক্ট বা প্রফেশানালিজম কথাটাও যদি বিবেচনায় ধরি , সেই ক্ষেত্রে স্টিভেনের এই অবস্থানকে সমালোচনা করা না গেলেও , স্টিভেনের মানসিক আঙ্গিকটি বুদ্ধিমান পাঠকদের বুঝে নিতে হবে এবং ইতিমধ্যে আপনারা বুঝেছেন বলেই আমার বিশ্বাস আসুন দেখি বিভিন্ন মিডিয়া মাধ্যমে তথা পত্রিকা, টিভি, রেডিও, বক্তৃতায় স্টিভেন কে কিউসি কি বলছেন- স্টিভেন এর ১ম মিথ্যাচারঃ ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে মানুষের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয় । যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার হলে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ব্যাক্তি মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে । বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালের আইন দ্বারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে নির্বাসনে পাঠাচ্ছে । বিশেষ ট্রাইবুনাল যেহেতু সাধারণ আদালতের মত নয় এবং যেহেতু এরা দুইটি আলাদা প্রক্রিয়া সেহেতু সংবিধানের মূলনীতি ব্যাহত হবে ।

আইনী উত্তরঃ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে আমাদের প্রথমেই জানতে হবে বাংলাদেশ সংবিধানের প্রথম সংশধোনীগুলো কি – বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীটি আসে ১৫ ই জুলাই ১৯৭৩ সালে । যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রটি তরান্বিত করবার জন্য বাংলাদশ সরকার এই প্রশংসনীয় ও কার্যকর উদ্যোগটি নেন এবং বাংলাদেশের সংবিধানে ৪৭(৩) অনুচ্ছেদটি সন্নিবেশিত হয় এবং এই অনুচ্ছেদের সূত্র ধরেই আরো একটি অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত হয় ৪৭(ক) । ৪৭(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- “এই সংবিধান যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারীতে সোপর্দ কিংবা দন্ডদান করিবার বিধান-সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসমঞ্জস্য বা তাহার পরিপন্থী, এই কারনে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া হবে গণ্য হইবে না কিংবা কখনও বাতিল বা বেআইনী হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না। ” আবার ৪৭(ক) তে বলা হয়েছে যে , ১) যে ব্যাক্তির ক্ষেত্রে এই সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বর্ণিত কোন আইন প্রযোজ্য হয়, সেই ব্যাক্তির ক্ষেত্রে এই সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ , ৩৫ অনুচ্ছেদের (১) ও (৩) দফা এবং ৪৪ অনুচ্ছেদের অধীনে নিশ্চয়কৃত অধিকারসমূহ প্রযোজ্য হইবে না । লক্ষ্য করে দেখুন , ব্যারিস্টার স্টিভেন কে কিউ সি কি করে “মানুষের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়” বলে মন্তব্য করেছেন এবং ইচ্ছে করেই সাধারণ মানুষকে কি করে ভুল পথে পরিচালিত করছেন ।

এখানে “মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ” বলতে চট করে একজন মানুষ হয়ত বুঝে নিবেন যে , বাংলাদেশের সকল মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে এবং সকল মৌলিক অধিকার-ই মূলত হরণ করা হচ্ছে । কিন্তু ব্যাপারটি কি আদৌ তাই ? না , তা নয় । এটি জামাত ও বি এন পি’র এই জ্ঞানপাপী আইনজীবির একটি করুন প্রোপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই নয় । ভালো করে লক্ষ্য করে দেখুন কি বলা হয়েছে ৪৭(৩) ধারাতে । খুব স্পষ্ট করে বলা হয়েছে তাদের কথা যারা জড়িত ছিলো যুদ্ধাপরাধে এবং যারা আর্মড ফোর্সের সদস্য , যুদ্ধবন্দী এবং সহায়ক বাহিনীর সদস্য ছিলো ।

এবং এটি মোটেও সব মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোয্য নয় । সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি হচ্ছে , নির্দিষ্ট করে দেয়া মৌলিক অধিকার ছাড়া যেমন ৩১, ৩৫(১) ও (৩) এবং ৪৪ অনুচ্ছেদ ব্যাতীত অন্যান্য সকল মৌলিক অধিকার বলবত রয়েছে । এখানে লক্ষ্যনীয় একটা ব্যাপার যে , বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকারের কথা মূলত বলা হয়েছে অনুচ্ছেদ ২৬ থেকে অনুচ্ছেদ ৪৭ পর্যন্ত । ভুলে গেলে চলবে না , যে , ৪৭(৩) অনুচ্ছেদ ইটসেলফ্ মৌলিক অধিকার অংশের অন্তর্ভূক্ত এবং এখানে মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে এক্সেপশনাল সিচুয়েশনের কথাই কেবল বলা হয়েছে যা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় । শুধু প্রযোজ্য নয় তাদের জন্য যারা- ১)আর্মড ফোর্সের সদস্য ছিলো, ২)যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক ছিলো , এবং ৩)সহায়ক বাহিনীর সদস্য ছিলো একটি সংবিধান যখন তার বিশেষ সিচুয়েশনের কথা এবং নির্দিষ্ট করে কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এমনটি উল্লেখ করে দেয় , সেক্ষেত্রে সংবিধানের উক্ত অনুচ্ছেদকে অসংবিধানিক বলাও এক ধরনের ধৃষ্ঠতা ।

গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানকে পরিবর্তন করবার আদেশ কিংবা সংবিধানের অপঃব্যখ্যা একে তো আইনের পরিপন্থী ,এবং তা আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর চূড়ান্ত আঘাত । যেখানে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভূক্ত ৪৭(৩) অনুচ্ছেদ স্পষ্ট করে আইন প্রণয়ন ও “সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদের সাথে অসামঞ্জস্য হলেই বাদ হবে না” বলে বলা রয়েছে সেক্ষেত্রে অসাংবিধানিক টার্মটি কোনোভাবেই ব্যাবহৃত হতে পারে না । বিশেষ কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কয়েকটি মৌলিক অধিকার সংবিধান বলে রহিত করাকে স্টিভেন কে কিউ সি যেভাবে সামগ্রিক অর্থে রূপায়িত ও অতিরঞ্জিত একটি রূপ দেবার চেষ্টা করলো তা নিতানতই নোংরা প্রোপাগান্ডা এবং বাংলদেশের সংবিধান সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞানের ফসল বলে উপরের আলোচনায় প্রমাণিত হয় । আমি সেই সাথে বিজ্ঞ আইঞ্জীবি স্টিভেন কে কিউ সি কে কয়েকটি প্রশ্ন করতে চাই, তা হলোঃ এন্টি টেরোরিজম আইনে একজন ব্যাক্তিকে শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কোনো চার্জ ছাড়া ২৮ থেকে ৪২ দিন আটক রাখার বিধান তো খোদ ইংল্যান্ডেই হয়েছে । এটা কি মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী নয় ? হিউম্যান রাইটস গ্রুপের এই সমালোচনা টি পড়ে দেখতে পারেন আপনারা ।

এছাড়াও এই খোদ ইংল্যান্ডেই তাদের বিভিন্ন আইনে নানা ধরনের দূর্বলতা রয়ে গেছে এমনকি জুডিশিয়াল রিভিউ এর ক্ষেত্রেও নানাবিধ সমালোচনা রয়েছে ও দূর্বলতা রয়েছে সেখানে স্টিভেন কে যখন হাজার দেশ পেরিয়ে অন্য দেশের ভ্যালিড আইন কে ইনভ্যালিড করবার পাঁয়তারা করেন , সেইক্ষেত্রে সরকারের উচিত ,আইনের অপব্যখ্যা ও জনমনে অষোন্তোষ সৃষ্টির দায়ে স্টিভেন কে কিউ সি’কে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো । আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সাথে আমাদের ট্রাইবুনালের একটি তুলনামূলক উদাহরণ নীচে দেয়া হলোঃ ১) এই আইনে অপরাধীকে দোষী প্রমাণের দায়ভার প্রসিকিউশনের যা বলা আছে ১৯৭৩ সালের আইনে ৬ নাম্বার চাপ্টার এর সাক্ষ্য অংশের ৫০ নাম্বার ধারায় । সুতরাং “the accused is presumed to be innocent until proven guilty” আইনের এই বিখ্যাত কথাটি সমুন্নত রয়েছে । সমগ্র আইনের কোথাও এই উক্তিটির বিরুদ্ধচারন করে কোনো ধারা নেই । এই কথা Article 14(2) of International Covenant on Civil and Political Rights,1966 (ICCPR) এও বলা আছে ।

২)Article 14 of International Covenant on Civil and Political Rights,1966 (ICCPR)এ যে অধিকারগুলোর উল্লেখ রয়েছে তা ICTA-1973 এর ক্ষেত্রেও খুব সুন্দর ভাবে রয়েছে । আসুন দেখা যাক- ক) ICCPR এর আর্টিকেল ১৪(১) এ বলা আছে ফেয়ার এবং পাব্লিক হিয়ারিং এর কথা যা কি না যোগ্য , স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে হতে হবে । ICTA-1973 এর ক্ষেত্রে, ধারা ৬(২ক) এর ক্ষেত্রেও যোগ্য, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন ট্রায়ালের কথা বলা হয়েছে । আবার ধারা ১০(৪) এ বলা রয়েছে , এই প্রসিডিংস হতে হবে পাবলিকলি এবং ট্রাইবুনাল যদি ঠিক মনে করে তবে ক্যামেরাও ব্যাবহার করা যেতে পারে । খ) ICCPR এর ১৪(৩) ধারায় বলা আছে যে, “Right to be informed poromptly and in detail in a language which he understands of the nature and cause of the charge against him” . আবার এই কথা গুলোই বলা আছে ICTA-1973 এর ১০(১)(ক) , ১০(৩) এবং ১৬(২) ধারায় ।

গ) ICCPR এর আর্টিকেল ১৪(৩)(খ) ধারায় বলা আছে যে , “Right to have adequate time and facilities for the preparation of his defence and to communicate with councel of his own choosing . একনন আমরা যদি ICTA-1973 এর দিকে নিজর দেই, তাহলে দেখব যে, এই আইনের ১৭(২) ধারায় বলা আছে , “An accused person shall have the right to conduct his own defense before the Tribunal or have the assistance of councel” ঘ) ICCPR এর ১৪(৩)(গ) ধারায় বলা আছে যে, “Right to be tried without undue delay. ঠিক আমাদের আইন ICTA-1973 এর ১১(৩) এর (ক) ও (খ) ধারায় এই কথাগুলোই আরো ব্যখ্যা করে বলা আছে। ঙ) ICCPR এর ১৪(৩)(ঘ) ধারায় বলা আছে , “Right of representation” এইদিকে আমাদের ICTA-1973 এর ১৭(২) ও ১২ ধারাতে স্পষ্ট করে এই কথাগুলো বলা আছে । চ) ICCPR এর ১৪(৩)(ঙ)ধারায় বলা আছে, “Right to produce and examine/cross examine witness”. ঠিক আমাদের ICTA-1973 এর ১০(ঙ) ধারা , ১০(চ),১০(ছ) এবং ১৭(৩) ধারাতে ঠিক ওই ICCPR বর্ণিত অধিকারগুলোর কথাই বলা রয়েছে । ছ) ICCPR এর ১৪(৩)(চ) ধারায় বিনাখরচে অনুবাদকের কথা বলা হয়েছে । যা আমাদের ICTA-1973 এর ১০(২) ও ১০(৩) ধারাতে বর্ণিত রয়েছে ।

জ) ICCPR এর ১৪(৩)(ছ) ধারায় “Right not to be compelled to testify against himself or to confess guilt” বলা হয়েছে । যা আমাদের ICTA-1973 এর ৮(৫) ও ১৮ ধারা দুইটি পড়লেই দেখা যাবে যে, এই অধিকার রক্ষিত হয়েছে । ঝ) ICCPR এর ১৪(৪) ধারায় আন্ডার এইজের ব্যাক্তির কথা বলা হয়েছে । যা বাংলাদেশের The Children Act-1974 খুব ভালো করেই রক্ষা করে । এই আইন নিয়ে ICTA-1973 তে কোনো বাঁধা নেই।

ঞ) ICCPR এর ১৪(৫) ধারায় “right to review the conviction and sentence” এর কথা বলা হয়েছে । যা আমাদের ICTA-1973 এর ২১ ধারাতে বর্ণিত রয়েছে । ট) ICCPR এর ১৪(৭) ধারায় “right not to be tried for offences which has been tried before” এর কথা বলা হয়েছে । যা আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত রয়েছে ও উক্ত অধিকার সমুন্নত রয়েছে । উপরের আলোচনায় আমরা দেখতে চেষ্টা করলাম যে , আন্তর্জাতিক ভাবে , Article 14 of International Covenant on Civil and Political Rights,1966 (ICCPR) এ বর্ণিত অধিকারগুলোই আসলে একজন মানুষের অধিকার যে কোনো ট্রায়ালে নিশ্চিত করে এবং International Bar Association যখন আমাদের ১৯৭৩ সালের আইন সম্পর্কে সমালোচনা করেছিলো তখন এই অধিকার গুলো আমাদের ১৯৭৩ সালের আইনে নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছিলো ।

আজকে এই উত্তরের মাধ্যমে ব্যারিস্টার স্টিভেন কে কিউ সি কে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলাম যে , আইন না পড়ে কথা বলতে আসা ঠিক না । উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পারলাম যে , ICTA-1973 এর মাধ্যমে মানবাধিকার সম্পূর্ণরূপে রক্ষিত হচ্ছে । চলবে- ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.