আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জায়গাটার নাম মনসা মুড়া

আমি বাংলায় মাতি উল্লাশে, করি বাংলায় হাহাকার আমি সব দেখে শুনে রেগে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার অফিসের কাজে প্রায়ই সপ্তাহ দুয়েকের জন্য চাঁদপুরের মতলব আসা লাগে। হাতে কিছু সময় পাওয়ায় একটু আসে পাশে ঊকিঝুকি মারার ইচ্ছা হল। প্রথমে চিন্তা ছিলো কুমিল্লার ময়নামতি যাব। এখান থেকে মাত্র ২ ঘন্টার পথ। কিন্তু সমস্যা হল ৫ জনের মধ্যে ৩ জন ই ময়নামতি আগেই গেছে এবং তাদের অভিজ্ঞতা তেমন একটা ভালো প্রভাব ফেললো না প্রথম চিন্তার উপর।

ময়নামতি ক্যানসেল। ২য় স্থান হলো লক্ষ্মীপুর থেকে ভোলা। পুরোটাই নৌভ্রমণ। এমন একটা চাকুরীরত দায়ীত্তে এখানে আছি যে অনেক লোভনীয় হওয়া সত্ত্বেও ২য় চিন্তায় দু গ্লাস পানি ঢালতে হলো। কিন্তু এতো গুলা পাঙ্খা পোলা কিভাবে ঘরে বসে ছুটি গুলা নষ্ট করি? ওকে, অনেক মতবিনিময়ের পর ঠিক করলাম নতুন একটা জায়গা, মানুষ হইলাম চারজন।

জায়গাটার নাম মনসা মুড়া। নামের সাথে স্থানের ও মিল আছে। মতলব বাজার থেকে সিএনজি করে কচুয়া। আগেই বলে রাখি, ঢাকার সিএনজি ওয়ালারা যদি এখানকার ভাড়া সম্পর্কে জানে তাহলে নিশ্চিত সবাই তাদের বাহন গুলো এখানেই নিয়ে আসবে। অনেক মুলামুলির পর মাত্র ২০ কিলোর ভাড়া ৪০০ টাকা নিলো তারপরও চেহারায় কেমন যেন একটা পুরা লস হইয়া গেসে ভাব।

গ্রামের মধ্যবর্তি পাকা সড়ক বিষয়ে নতুন করে তেমন বলার কিছুই নেই। সম্মোহিত করার মত পরিবেশ। সিএনজিতে আমরা চারজন এবং এক চাচা ড্রাইভার। চাচার মাথা মোচড়ানো ধাঁধার উত্তর দিতে দিতে কখনযে কচুয়া পৌছে গেলাম টের পেলাম না। ওখানে যেয়ে আর এক সিএনজি যে কিনা দোয়াটি গ্রামে নিয়ে যাবে আমাদের।

তার অতিউৎসাহিত প্রচেষ্টায় রওনা দেয়ার আগে কচুয়ার সবচেয়ে বেস্ট চা খাওয়ার সুযোগ হল সাথে ছিল কিছু একটা শক্ত পিঠার মত যেটার নাম আমাদের মধ্যে একজন ই বলতে পারবে। নতুন পাইলট সাহেব নামিয়ে দিলেন শুকনো খালের উপর আধভাঙা একটা সাঁকোর নিচে দিয়ে বয়ে যাওয়া একটা মেঠোপথের সামনে। তাকেও মোটা মুটি ছয় কিলোর জন্য দিতে হয়েছে 150 টাকা সাথে এক কাপ স্বস্বীকৃত বেস্ট চা। অবশ্য ওখান থেকেই তার আঙুলের ডগা বরাবর তাকিয়ে দেখে নিতে পেরেছি আমাদের গন্তব্য। রাস্তার ধারেই পুরোপোক্ত পাকা গমক্ষেত, দু চারটা ছবি না তুললে কি চলে।

আগের রাতের নৌভ্রমণের আধা শেষ হওয়া ব্যাটারি ই আমাদের সম্বল তাই একটু সাবধানে ক্লিক করতে হবে। প্রায় 20 মি. হাটার পর পৌছলাম মনসা মুড়ায়। মনসা মুড়া সম্পর্কে যা জেনেছি তা হল # মনসা মুড়া, দোয়াটি, কচুয়া, চাঁদপুর। # মাঠের মাঝে ১৩টি বাঁশঝাড় আছে এবং উক্ত ঝাড়ের চতুর্দিকে অনেক সাপের গর্ত রয়েছে। # কচুয়া উপজেলার ৪ নং সহদেবপুর ইউনিয়নের দোয়াটি গ্রামে মনসা মুড়া অবস্থিত।

একদা এক ব্যক্তি মনসা বাঁশঝাঁড় থেকে বাঁশ কেটে নেয়ার পর বার বার স্বপ্নে দেখে যে, উক্ত বাঁশ ফেরৎ না দিলে তার বংশের কোন লোক বাঁচবে না। তারপর বাঁশ ফেরৎ না দেওয়ায় তার নাকে মুখে রক্ত বের হয়ে সে মারা যায়। পরে তার বংশধরগণ উক্ত বাঁশ ফেরৎ দিয়ে আসে। আরেকটি উলেস্নখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে মনসামুড়া থেকে সাপ ধরবার জন্য স্থানীয় কিছু লোকজন এক সাপুড়ে বহরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। যখন সাপুড়ে তার বীণা বাজানো আরম্ভ করে তখন বাঁশের পাতায় পাতায় ছোট ছোট সাপ গর্ত থেকে উঠে আসে।

সাপুড়ে একটি সাপ ধরে পাতিলে রাখার সময় উক্ত সাপের কামড়ে তার মৃত্যু ঘটে এবং অসংখ্য সাপ তার নৌকার দিকে যেতে আরম্ভ করলে সাপুড়ের দল সাপটি ছেড়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। তারপর থেকে কোন সাপুড়েরা উক্ত স্থানে সাপ ধরতে আসেনা এবং কোনলোক বাঁশের একটি কঞ্চিও কাটেনা। আরো একটা বিষয় লক্ষ করলাম, এই মুড়ার পাশে একটা টমেটো ক্ষেত আছে সেখান থেকেও কেউ টমেটো নেয় না। এখানে প্রশ্ন করতে পারেন ”তাহলে এখানে ক্ষেত করার দরকার কি ছিল?” উত্তর একটাই: কেডায় জানে??। — at Kachua,chandpur. ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.