আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীরে বেশ্যা বানায়া 'যৌন অবদমন'এর নিদান হবেনারে.......

হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোনজন, কান্ডারি বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা'র বাইবেলের পুরানা নিয়ম (ওল্ড টেস্টামেন্ট) এর ‘বাদশাহনামা’ নামক সহিফা মোতাবেক ইশেবল (আংরেজি যেজেবল) ছিলেন উত্তর ইজরাইলের রাজা আহাবএর স্ত্রী, সুবাদে ইজরাইল রাজ্যের মহারানী। কিন্তু রানী ইশেবল ইহুদি কন্যা ছিলেন না, ছিলেন পার্শ্ববর্তী ফোয়েনিশিয়ান রাজ্য টায়ারএর রাজকন্যা, রাজা ইথবালএর কন্যা। বাইবেল যতনা পুরুষের, পুরুষ নবি অথবা পুরুষ রাজা’র, ততটা নারীর না। একিসাথে কওয়া যায়যে ৯০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের (বাইবেল মুতাবেক রাজা আহাবের শাসনকাল) বনি ইজরাইলী সমাজে নারীর শাসন বা দিকদারী মাইনা নেয়া সহজ ছিলনা। পুরা ইব্রাহিমী ধর্মেই ইশ্বরের প্রতিনিধী মাত্রই পুরুষ পোলা, রাসুল, পুরোহিত, খলিফা থেইকা বাদশাহ সকলেই পুরুষ।

ইব্রাহিমী পুরুষতান্ত্রীক সমাজে নারীর রাজনৈতিক অথবা ধর্মীয় নেতৃত্ব গ্রহণযোগ্য ছিলনা, এখনো নাই। কিন্তু ইশেবল টায়ারের কণ্যা, যেইখানে ধর্ম অথবা রাজ্যশাসন এই দুইয়েই নারীর ক্ষমতা এবং অধিকার ইজরাইল রাজ্যের চেয়ে অনেক বেশী, বিশেষ কইরা ধর্মীয় পুরোত তন্ত্রে নারীর ছিল পোক্ত অবস্থান। ইশেবল ছিলেন দেবতা বাল’এর অনুসারী, নারী পুরোহিত। নিজের জীবন কালে রাজা আহাব নানান যুদ্ধ ফ্যাসাদে কাটায়া দেন, রাজ্যের ভিতরের অন্তর্কলহও নেহায়েত কম ছিলনা। ইশেবল সেইসময় আহাবের অন্যতম উপদেষ্টা হিসাবে আবির্ভুত হন, হইয়া উঠেন রাজ্যের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি।

ইশেবলএর প্রধান শত্রু নবী ইলিয়াস (আংরেজি এলিজাহ) মোতাবেক এই রানী ছিলেন রাজ্যক্ষমতার পেছনের আসল ক্ষমতা। বাইবেলে ইশেবলের কোন বৈধ রাজকীয় ক্ষমতা বা পদের উল্লেখ না থাকলেও সাম্প্রতিক ‘ইশেবল এর সীল’ আবিস্কার থেইকা এও বুঝা যায়যে ইশেবল রানী পদাধিকারবলে রাজ্য শাসনের বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তার উপরে আবার তিনি ইজরাইলে ‘বাল’ দেবতার নামে একাধিক ইবাদতখানা স্থাপন করেন এবং নিজ ধর্মের প্রচার প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন। তার প্রচেষ্টায় সেই সময়ে ইজরাইলে বাল দেবতার জনপ্রিয়তা ইয়াহওয়েহ (জেহোভা) নামক দেবতার জনপ্রিয়তা ছাড়ায়া যায়। উল্লেখ্য, আদী ইহুদিরা ইশ্বর বুঝাইতে ইলোহিম, ইয়াহওয়েহএর মতোই বাল শব্দের ব্যবহার করে এই প্রমান পাওয়া যায়।

উদাহরণ, নবী দাউদএর কিতাব ‘যবুর’এ একাধিক স্থানে ইশ্বরকে ‘বাল’ নামে ডাকা হয়। ‘বাল’ শব্দের অর্থ বুৎপত্তিগতভাবে ‘প্রভু’। তবে পরবর্তিযুগের ইহুদি পুস্তকগুলাতে বাল এবং ইলোহিম/ইয়াহওয়েহএর স্পষ্ট আলাদা দেবত্ব পরিস্কার করা হয়। এর পিছনের কারন খুজতে গেলে ইহুদি ধর্মের বিবর্তনের ইতিহাস আলোচনা করতে হবে, যা আপাতত বাদ রাখা যাউক। যাই হউক, ‘নবী’ টাইটেল ব্যাবহার করা ইহুদীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ পুরোহিত শ্রেণী এবং তাদের প্রধান নেতা নবী ইলিয়াস ইশেবল’এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ও জনমত গইড়া তুলেন।

সেইসময় দেশজুড়ে খড়ার জন্যে তারা বাল দেবতার ইবাদত এবং ইয়াহওয়েহ থেইকা দূরে সরে যাওয়ারে দায়ি করেন। শুরুতে এই বিরোধীতা ধর্মীয় প্রতিদ্বন্দীতার পর্যায়ে থাকলেও এক পর্যায়ে তা রাজনৈতিক প্রতিদ্দ্বন্দীতায় পরিনত হয়। ইলিয়াস’এর অভিযোগ মোতাবেক ইয়াহওয়েহ’এর পুরোহীত নবীদের হত্যা করা হইতাছিল এবং মাত্র ১০০ জন তখন টিকা ছিল। এরপরে ইলিয়াস এবং তার অনুসারীরা প্রায় সারে চারশ ‘বাল’ দেবতার পুরোহিতকে হত্যা করার পরে ইশেবল পত্রমারফত প্রতিশোধ ঘোষনা করেন ইলিয়াসএর বিরুদ্ধে যে ইলিয়াসকে তিনি পরেরদিনই হত্যা করবেন। ইলিয়াস এই সময় জীবন বাচাইতে আত্মগোপন করেন।

তবে শেষ হাসি ইলিয়াসই হাসেন। রামোথ গিলিয়দ পুনরুদ্ধারের যুদ্ধে রাজা আহাব নিহত হন। তার জায়গায় ক্ষমতা গ্রহণ করেন তার পুত্র যিহোরাম। কিন্তু ইলিয়াস’এর অনুসারী সেনাপতি যেহু’র নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে যিহোরাম নিহত হন। যিহোরামকে হত্যার পরে যেহু সদলবদলে রানী ইশেবলের প্রাসাদে হানা দেন।

ইশেবলএর পক্ষে তখন আর কেউ নাই। কিন্তু ইশেবল পলায়ন করা বা জীবন ভিক্ষা চাওয়ার ধার কাছ দিয়া যান নাই। তিনি পুরাপুরি রানীর সাজে সজ্জিত হইয়া যেহু’কে মোকাবিলা করেন এবং জিজ্ঞাসা করেন, “এই কি শান্তি, যিমরি? নিজের মালিকের হত্যাকারী”। উল্লেখ্য যিমরি শব্দটা এইখানে বাংলা ‘মিরজাফর’ শব্দের মতো, যিমরি ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি নিজ রাজার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা এবং তাকে হত্যা করার জন্যে কুখ্যাত ছিলেন। ক্রোধে পাগল হওয়া যেহুর নির্দেশে ইশেবলকে প্রাসাদের জানালা দিয়ে নিচে ছুড়ে ফেলে হত্যা করা হয়।

‘বাদশানামা’য় খুব গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে যে ইশেবলকে দাফন করতে গেলে কিছু হাড্ডি ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নাই, কারন তার লাশ দীর্ঘসময় কুকুরের খাদ্য হিসাবে পরেছিল। ইশেবলের এতবড় কাহিনী এইখানে বর্ণনা করলাম বটে, কিন্তু আসল বিষয়টাতেই এখনো আসি নাই। ইব্রাহিমী ধর্মগুলাতে বিশেষ করে ইহুদী এবং মধ্যযুগীয় খ্রীষ্টান ধর্মে হাজার বছর ধরেই ইশেবল শব্দটা দুশ্চরিত্রা, ছলনাময়ী, বেশ্যা, ডাইনী ইত্যাদি শব্দের সমার্থক। এমনকি এই আধুনিক যুগে আইসা ৬০/৭০ এর দশকে আম্রিকার কালো চামড়ার বেশ্যাদের ডাকনাম ছিল ইশেবল। এর শুরু অবশ্য খোদ বাইবেল থিকাই।

বাইবেলে ইশেবলরে ছলনাময়ী, বেশ্যা, ডাইনি এই সবগুলা নামেই কমবেশী ডাকা হইছে। খোদ ‘বাদশানামা’ অথবা অন্যকোন পুস্তকেই যেইখানে একবারের জন্যেও ইশেবলরে দুশ্চরিত্রা বানানির মতো কোন ঘটনার বর্ণনা নাই, যেইখানে প্রথম থেইকা শেষ পর্যন্ত একবারও নিজের স্বামীর সাথে তারে কোন বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখা যায়নাই, সেইখানে ইশেবল’রে এইভাবে বেশ্যা বানানিতে ইব্রাহিমী ধর্মপুস্তকের লেখকদের উদ্দেশ্য কি ছিল? অন্যায়ভাবে রাজা আহাব’রে এক ব্যক্তির আঙ্গুর ক্ষেত অধিগ্রহণের কুবুদ্ধি দিছিলেন এমন একটা ঘটনা পাওয়া যায় বটে, কিন্তু ইশেবলএর চরীত্র বিশ্লেষন ‘যৌন’ নৈতকতা সম্পর্কৃত শব্দের অধিক ব্যবহারের কারন খুজে দেখা দরকার। এইখানে পুরুষতান্ত্রিকতার সাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্টই শুধু প্রবল এইটা আমার মনে হয়না। বরং ‘যৌন অবদমন’এর হাইপোথিসিস আমার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়। ইশেবল শুধুমাত্র ইলিয়াসের তাত্ত্বিক বা ধর্মীয় প্রতিদ্দ্বন্দীই ছিলেন না, ছিলেন ইলিয়াস অথবা সংশ্লিষ্টদের যৌন অবদমন সৃষ্ট ‘রাজনৈতিক ক্রোধ’এর স্বিকারও বটে।

বাদশানামায় বর্ণীত ইলিয়াস এবং সমসাময়িক নবীরা সন্যাসব্রত পালন করতেন বলে দেখা যায়। এই সন্যাসব্রত ভারতীয় সন্যাসব্রতের মতো না, যৌনতার ক্রম অবদমনের কোন সাধন পদ্ধতিও এই সন্যাসএ অনুসরণ করা হইতো বলে জানা যায়না। সুতরাং এইসব সন্যাসী নবীদের নানান উপদেশ, আদেশ, নির্দেশ তা ধর্মীয় বা রাজনৈতিক যাই হউক না কেন তাতে যৌন অবদমনের ছাপ খুইজা পাওয়া যাওয়া অস্বাভাবিক না। ঘর সংসার ত্যাগী ইলিয়াস এর ‘অবদমিত যৌনতা’র সামনে বিত্ত্ব, বৈভব, সৌন্দর্য আর রাজনৈতিক ক্ষমতায় ক্ষমতাধর একজন নারী যখন একিসাথে ধর্মীয় প্রতিদ্বন্দী হয়া উঠেন, তখন এই অবদমিত যৌনতা থেইকা তৈরি হওয়া ক্রোধ সমালোচনা থেইকা যৌনতারে দূরে রাখতে অপারগ হয়। সমালোচনায় দরকার ছারাই তখন উইঠা আসে নানান যৌন নৈতিক শব্দ, সেক্সিস্ট গালি।

বেশ্যা, খানকি ইত্যাদি শব্দের মাধ্যমে নারী প্রতিপক্ষকে ধর্ষন কইরা যৌন অবদমনের সামান্য নিদান লাভের সুযোগ হয়। কিন্তু আসল নিদান লাভ হয়কি? সেই প্রশ্নের উত্তর পাওনের আগে গত শতকের একজন প্রখ্যাত মুসলিম মনিষীরে লইয়া একটু আলাপ করা দরকার। ইনি মিশরিয় লেখক, ইসলামীস্ট তাত্ত্বিক, কবি এবং ৫০/৬০ এর দশকে মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা “সাইদ কুতুব”। সাইদ কুতুব সেইসময়ে মিশরে একজন জ্ঞানি লোক ছিলেন সন্দেহ নাই। জীবনের শুরুর ভাগে তিনি সেক্যুলার শাসন পদ্ধতির প্রতি আস্থা রাখলেও পরে একসময় পুরাপুরি ইসলামী শরিয়াপন্থী হিসাবে বিখ্যাত এবং কুখ্যাত দুইই হয়া উঠেন।

এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রাখে তার আম্রিকা ভ্রমণ। আম্রিকায় নারীগো স্বাধীন জীবনযাপন, চলাফিরা, যৌনসঙ্গী নির্বাচন ইত্যাদিতে ব্যাপক আহত হন সাইদ। গোটা মার্কিন জীবনযাপন পদ্ধতিরই সমালোচনা করেন সাইদ। কিন্তু আম্রিকান নারী বিষয়ক তার মন্তব্যগুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার কিছু এই ধরণের সমালোচনার বিশ্লেষন করা যাউক।

যেমন, আম্রিকান নারীদের পোষাক পরিচ্ছদ নিয়া তিনি বলেন যে- “আম্রিকান মেয়েরা নিজেদের শরীরের কমনিয়তা সম্বন্ধে ভালোভাবেই ধারনা রাখে। সে জানে তার চেহারা, তার চোখের ইশারা, তার তৃষিত ঠোট কামনায় ভরপুর। সে জানে যে তার গোলগাল স্তন, ভরাট নিতম্ব, সুঠাম উরু আর চিকন পা কমনিয়তায় ভরপুর। এবং এসবের কিছুই সে লুকায় না, বরং দেখায়”। উপরের মন্তব্য মূলত আম্রিকান নারীদের পোষাক পরিচ্ছদ বিষয়ক চরিত্রহীনতা প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে লেখা, কিন্তু এই সমালোচনামূলক মন্তব্যেও কুতুবের অবদমিত যৌন আকাঙ্খা বেশ পরিস্কার ভাবেই ধরা পরে।

পোষাকের বর্ণ্না দিতে গিয়া শরীরের পারফেকশনের যেই বর্ণনা তিনি দিছেন তাতে কারো এইটা বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা না। তাও যদি কারো কাছে পরিস্কার না হয়, সেইক্ষেত্রে নিচে আরেকটা মন্তব্য পড়া যাউক- “একটা মেয়ে(আম্রিকান) যখন তোমার দিকে তাকায় তখন প্রথম দর্শনে তারে তোমার কাছে মোহনীয় পরী অথবা জলপরী(মারমেইড) মনে হবে, কিন্তু সে যতই তোমার কাছে আসবে তার ভেতরের প্রবৃত্তির চিৎকারই শুধু তুমি শুনতে পাবে, তার জ্বলন্ত শরীরের ঘ্রান তুমি পাবে, পারফিউমের ঘ্রান না, মাংসের ঘ্রান, শুধুই মাংস। সুস্বাদু মাংস, সন্দেহ নাই, কিন্তু দিনশেষে মাংসমাত্র”। উল্লেখ্য, সাইদ কুতুব তার রাজনৈতিক ইসলাম প্রচারের মিশনে নাইমা যেই ত্যাগি জীবন পার করেন তাতে তিনি কোনদিন বিবাহ করতে পারেন নাই। আম্রিকান নারীর স্বাধীনতার সমালোচনা করতে গিয়া মুগ্ধতা, কামনা আর ঘৃনা, বিদ্বেষএর যে দ্বন্দে তিনি পরেন তা নিঃসন্দেহে যৌন অবদমনের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক প্রকাশ।

মাতৃতান্ত্রিক পৌরহিত্ব ক্ষতম, নারী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে পরাস্থ করা, জ্ঞানী এবং স্বাধীন নারীদের উইচক্রাফটের অযুহাতে হত্যা করা, এহেন নানান ক্ষেত্রেই যৌন অবদমনের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক প্রকাশের ভুরি ভুরি কাহিনী ইতিহাসের পাতায় পাতায় ভরা। যৌন অবদমিত পুরুষ হয়তো এই প্রক্রিয়ায় নিজের অবদমনের নিদান খুজার চেষ্টা করেন, কিন্তু সফল হন কি? উত্তর পাইতে সাইদ কুতুবুএর জীবনের শেষভাগ আলোচনা করা যাইতে পারে। আম্রিকা থিকা ফিরার কয়েক বছর পরই তিনি এতটাই শরিয়াকেন্দ্রীক ইসলামিস্ট হয়া উঠেন যে বিধর্মীদের হত্যা করার শরিয়তী বিধানের পক্ষে যুক্তি দিয়া লেখালেখী শুরু করেন, হয়া উঠেন আধুনিক ইসলামী জঙ্গীবাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক। উল্লেখ্য যে, আল কায়েদার মিশরিয় ফ্র্যাকশনের বেশিরভাগই সাইদ কুতুবের ভাবাদর্শে গড়ে উঠেছেন এককালে, আল কায়েদা নেতা আইমান আল জাওয়াহিরী ছিলেন সাইদ কুতুবএর ছোট ভাই মুহাম্মদ কুতুবের শিষ্য। যৌন অবদমনের পুরুষতান্ত্রিক নিদানএর এই প্রক্রিয়াযে দিনশেষে প্রতিক্রিয়াশীলতা ছাড়া আর কিছু সৃষ্টি করতে পারেনা সেইটা বুঝদার ব্যক্তিমাত্রই একমত হবেন।

বুঝদার ব্যক্তিমাত্র আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্যও এতক্ষনে বুইঝা ফালাইছেন। প্রশ্ন উঠতে পারে যে, উপরের আলোচনা থেইকা যদি কিছু সারবস্তু পাওয়া যায় তাইলে কিভাবে বুঝবেন যে আপনে প্রবল যৌন অবদমনের শিকার হয়া একজন যৌন বিকারগ্রস্থে পরিণত হইছেন যার নীতিবাক্যও দিনশেষে প্রতিক্রিয়াশীলতারে উস্কায়া দেয়ার চেয়ে বেশিকিছু করতে পারবেনা। উত্তরঃ ১। কোন সংগঠনের ভলান্টিয়ার ওয়ার্কে ধরার মতো অনেক ক্ষুত থাকা সত্ত্বেও যখন আপনের সমালোচনার মূল বিষয়বস্তু হয় ঐ সংগঠনের টিনএজ মাইয়াগো পোষাক আশাক। টাকা পয়সার উত্তলোন এবং তার ব্যবহারের সচ্ছতা নিয়া আলোচনার চেয়ে যখন টাইট জিন্স আর হলুদ টিশার্ট যখন আপনের সমালোচনার আসল বস্তু হয়।

২। আপনের সমাজের একজন সম্মানিত নারীর নগ্ন দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হইছে এইটার সমালোচনা করতে গিয়া যখন দায়ি প্রতিষ্ঠানের মালিক আরেক নারীরে সমালোচনা এবং গালাগালির নামে কাপর চোপড় খুইলা নগ্ন করতে কিংবা ‘পরিমল’ নামের আড়ালে নিজের অল্টার ইগো দিয়া ধর্ষন করতে পিছপা হন না। সেই সাথে সাথে গুগলে সেই ভিডিও খুজনের কথা বাদই দিলাম। ৩। বাংলাদেশের নারীদের বর্তমান সময়কার পোষাক নিয়া সমালোচনা করতে গিয়া বিভিন্ন সেমি পর্ণো সাইটে ঘুইড়া ঘুইড়া বিভিন্ন গোপন ক্যামেরায় তোলা মেয়েদের ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি অথবা কোন মডেল কণ্যার আবেদনময়ী কোন ছবি যেগুলা আপনি সংগ্রহে রাখছেন এবং দেখে দেখে আপনি হস্তমৈথুন করেন সেগুলা নিয়া জাতির বিবেক সুলভ পোস্ট দেয়া।

৪। জনৈক বুদ্ধিজীবীর কোন লেখা ইসলাম বিদ্বেষী মনে হওয়ায় তার আম্রিকা প্রবাসী কন্যার ফেসবুক থেইকা ছবি সংগ্রহ কইরা সেই মেয়েরে বেশ্যা, দুশ্চরিত্রা ইত্যাদি ভুষনে অভিহিত কইরা তার বাপেরে একহাত দেইখা নেয়া। এর বেশি উদাহরণ দিতে চাইনা। উপরের বিষয়গুলা যদি আপনের চরিত্রের সাথে মিলা যায় তাইলে আপনে প্রবল ‘যৌন অবদমনে’ ভুইগা রীতিমত যৌন বিকারগ্রস্থ মানুষে পরিণত হইছেন। এই অবস্থায় এইসকল কাজকাম কইরা নিদান পাইবেন না।

বয়স ঠিকঠাক থাকলে বিয়া কইরা দেখতে পারেন, তবে অবশ্যই তার আগে একবার মনরোগ বিশেষজ্ঞের সরণাপন্ন হইবেন। কিন্তু তারচেয়েও বড় কথা হইল যে নিজের শুভবুদ্ধি উদয় করার চেষ্টা করেন। কোন ব্যক্তি, বস্তু, ব্যবস্থা বা যেকোন কিছুর সমালোচনা করতে গিয়া যারে তারে যখন তখন বেশ্যা, খানকি ইত্যাদি বানায়া দিবেন এই ধরণের নোঙরামী ভালোনা। জগতে সবাই আপনের মন মতো চলবেনা, অনেক নারীই আপনের চেয়ে যোগ্যতা এবং ক্ষমতায় আগায়া থাকতে পারে, অনেক নারী আছে যারে আপনে প্রবলভাবে কামনা করলেও কোনদিনই পাইবেন না। এইটা তাগো যোগ্যতা আর আপনের ব্যর্থতা।

নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে অপরের চরিত্রহানী করা থেইকা বিরত হন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।