আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা সবাই রাজা আমাদেরই রাজুর রাজত্বে!

নরসিংদীর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের পর তার সঙ্গে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর বিরোধিতার নানা কলঙ্কময় কাহিনী এখন নরসিংদীবাসীর মুখে মুখে। মন্ত্রী নরসিংদী-৫ রায়পুরার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। লোকমান হত্যাকাণ্ড নিয়ে নরসিংদীতে প্রতিবাদের উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সরকারের উচ্চমহল থেকেও রাজুর বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হয়। এতে রাষ্ট্রীয় উচ্চক্ষমতার একটি গোয়েন্দা সংস্থা ব্যাপক অনুসন্ধান শেষে মন্ত্রী রাজুর বিরুদ্ধে মদ, নারীসহ বহুবিধ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি জরুরি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। এতে মন্ত্রীর তিন বছরের আমলনামাসহ অতীত-বর্তমানের নানা চিত্র ফুটে উঠেছে।

ওই গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে: "রাজিউদ্দিন রাজু (বর্তমান মন্ত্রী) ২০০০ সালে যখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সে সময় তিনি রায়পুরার মরজাল ইউনিয়নের বাসিন্দা ফুটবলার সন্তোষ সাহার সুন্দরী স্ত্রীকে নিয়ে এক ঘরে একত্রে ছিলেন। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ওই বাড়ি ঘেরাও করে। পরে আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতায় বিষয়টি বেশি দূর গড়ায়নি। তিনি নরসিংদীর রাঙামাটি এলাকায় সিরাজ ফকিরের বাড়ির উল্টোদিকে এক বাড়িতে প্রায়শই ফ্লাগ ছাড়া গাড়ি নিয়ে আসেন এবং সেখানে বেশ সময় অতিবাহিত করেন। সেখানে মণি (২৮) ও সুপ্তি (৩২) নামে দুই বোনের সঙ্গে তার কয়েক বছর ধরে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়।

এমনও তথ্য লোকমুখে শোনা গেছে, মণিকে তিনি তিন মাসের গর্ভবতী অবস্থায় একটি ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন বুঝতে পারেন তার স্ত্রী বিয়ের আগে থেকেই গর্ভবতী তখন তিনি মণিকে তালাক দেন। মণি এখন রাঙামাটি এলাকায় তার ছেলে নিয়ে বসবাস করছেন। তিনি বর্তমানে নরসিংদীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সুন্দরী ছাত্রী কিংবা টিচারদের সঙ্গে অন্তরঙ্গতা গড়ে তোলেন এবং তাদের সার্কিট হাউসে কারণে-অকারণে আমন্ত্রণ জানান বা দেখা করতে বলেন। নরসিংদীর ভেলানগরে আজিজ বিল্ডিংয়ের পাশে অবস্থিত বিটিএম ইংলিশ স্কুলের এক অনুষ্ঠান চলাকালে এক সুন্দরী উপস্থাপিকাকে পছন্দ করে স্টেজের বাইরে ডেকে পাঠান এবং তার সঙ্গে অনেকক্ষণ আলাপ করেন।

মেয়েটির বয়স আনুমানিক ২৬-২৭, নাম জানা যায়নি। তাকে তিনি সার্কিট হাউসে দেখা করতে বলেন। সেই মেয়েটি পরে তার ভাইকে বিষয়টি জানান এবং তিনি আর সার্কিট হাউসে যাননি। নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ২০০৯ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি ওই কলেজের রেজিস্ট্রার ইসরাত জাহানের সঙ্গে সংখ্য গড়ে তোলেন। তাকে সার্কিট হাউসে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন।

তিনি প্রায়শই মন্ত্রীর সঙ্গে সার্কিক হাউসে দেখা করেন। জানা যায় তিনি এখন বিভিন্ন তদ্বিরের কাজ করেন এবং ঢাকায় সংসদ ভবনেও মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে থাকেন। নরসিংদী গভর্নমেন্ট মহিলা কলেজের শিক্ষিকা তৈয়বাকে ([২৫] বাসা দাসপাড়া, পুরাতন জজকোর্টের পেছনে, মোবাইল ০১৯১১৩৮৩৩০৬১) কলেজের অনুষ্ঠানে পছন্দ হলে তাকে সার্কিট হাউসে দেখা করতে বলেন। তৈয়বাও মন্ত্রীর সঙ্গে মাঝে মাঝে দেখা করেন এবং বিভিন্ন তদ্বিরের কাজ করেন বলে জানা যায়। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে উপজেলা নির্বাচনের আগের দিন তিনি রায়পুরা এসে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেন।

তিনি তার পছন্দের প্রার্থীর জন্য এলাকায় আসেন। রাতে চলে যাওয়ার সময় তার গাড়িতে একজন সুন্দরী মেয়ে ওঠেন (নাম জানা যায়নি)। তাকে নিয়ে তিনি অন্য কোথাও সময় কাটান বলেন জানা যায়। উপজেলা নির্বাচনে তিনি সার্কিট হাউসে সদর ইউএনও শারমিন জাহানের সঙ্গে অনৈতিক কাজের চেষ্টা করলে ইউএনও কোনো রকমে ছুটে বাথরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যার হুমকি দেন। পরে সার্কিট হাউসের ভেতরেই বিষয়টি ফয়সালা হয় এবং শারমিন জাহান চলে যান।

উল্লেখ্য, ইউএনও হওয়া সত্ত্বেও মন্ত্রীর নির্দেশে তাকে রায়পুরার বিভিন্ন সফরে মন্ত্রীর সঙ্গী হতে হতো। উল্লেখ্য, শারমিন জাহান ২০০৯ সালের ৩ মে সদর ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। চলি্লশের কাছাকাছি বয়সী ওই মহিলা অবিবাহিত। বর্তমানে নরসিংদীর ভারপ্রাপ্ত এনডিসি হিসেবে কর্মরত সুন্দরী বিসিএস ক্যাডার মহিলা রেনিসা রডরিক্সের সঙ্গে মন্ত্রীর খুব সখ্য গড়ে উঠেছে। জানা যায়, সার্কিট হাউসে এনডিসি মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে থাকেন এবং মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হন।

তাকে নিয়েও মুখরোচক আলোচনা শোনা যায়। অর্থাৎ মন্ত্রী সুন্দরী নারীদের প্রতি দুর্বল। তিনি প্রায়শই তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন এবং সুযোগ বুঝে অনৈতিক সম্পর্ক গড়েন। তিনি নিয়মিত মদ্যপান করেন বলে জানা যায়। তা ছাড়া উপজেলা নির্বাচনের সময় নরসিংদীর বিভিন্ন উপজেলায় নিজ প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য তিনি বেশ প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।

ফলে এ কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি হয়, যা ভবিষ্যৎ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবে। রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুকে সব সময় নারীদের বিষয়ে সহায়তা করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাজি সাত্তার, রাধানগর ইউপি চেয়ারম্যান সাদেক প্রমুখ। এখানে আরও উল্লেখ্য, নরসিংদীর স্কুল-কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে `আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে`_ এই গানটি কিছুটা পরিবর্তন করে `আমরা সবাই রাজা আমাদেরই রাজুর রাজত্বে` হিসেবে শিল্পীদের গাইতে বাধ্য করা হয়, যা নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। " ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.