আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতিক্রিয়া-৩

ব্লগ লিখার মত অনেক টপিকস মাথায় আসে, কিন্তু লিখতে ইচ্ছা করে না... তবে কমেন্ট করতে ভাল লাগে... স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পেরিয়ে আমরা এখন এগিয়ে চলছি , সমৃদ্ধির পথ ধরে হেটে চলছি উন্নয়নের পথে , দেশে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ও বেড়েই (?) চলছে , মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে - এই রাজনৈতিক কথা গুলো প্রচার মাধ্যমের কল্যানে আমরা নিয়মিতই শুনছি , দেশের পরিস্থিতিও আপাতঃ দৃষ্টিতে এই কথাই বলবে, বিভিন্ন উৎসব কে সামনে রেখে বিপনী বিতানগুলোর রমরমা বানিজ্য , রাস্তায় অসংখ্য দামী দামী ব্যক্তিগত গাড়ি , নগরীর মোড়ে মোড়ে গড়ে ওঠা বহুতল অট্টালিকা সব ই তো এই কথাই বলে। কিন্তু বাতির নিচের ঘোর অন্ধকারকে আমরা কেউই খেয়াল করছি না, আমি সেরকমি কয়েকটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি- ১। ঈদুল আযহা দিয়েই শুরু করা যাক্। এই ঈদের প্রধান আকর্ষন কুরবানির পশু। সামর্থ্যবান সবাই সুবিধাজনক ভাবেই কিনছেন্, এই পশু কুরবানি করে আনন্দ ভাগাভাগি করলেও কুরবানি হয়ে যাচ্ছে ওই পশু বিক্রেতা কৃষক বা পাইকার্, বিশেষ করে তা যদি হয় দেশি জাতের পশু।

সীমান্ত পথে যে ব্যাপক হারে শুল্ক মুক্ত পশু আমদানীর সুযোগ আমাদের সরকার ও আমাদের সবচেয়ে প্রিয়(?)-পিতৃতুল্য(?)-বন্ধু রাষ্ট্রটি দিয়েছে তাতে প্রথমেই ওই অসহায় দরিদ্র কৃষকের পেটে লাথি (যেহেতু দেশী পশুর দাম বিদেশী পশুর জোয়ারে ভেসে গেলো) পড়ে। অসহায় দরিদ্র কৃষকের ঋন মুক্তি ঘটে না, হয়তো তার মেয়ের বিয়ে আটকে যায়্, তার কিছুটা সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত নিঃসত্বে গিয়েই ঠেকে। ২। এরপরেই আসা যাক ঈদুল ফিতর উদযাপনে। এই ঈদের প্রধান আকর্ষন থাকে নিত্য নতুন পোশাকের দিকে।

কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের চির প্রিয়(?)-বন্ধু(?) ও পিতৃতুল্য প্রতিবেশীর কঠোর শাসনের কাছে আমাদের পোশাক শিল্পকে চপেটাঘাত সহ্য করতে হয়্। আমাদের সবচেয়ে প্রিয় এই বন্ধু(?) উচ্চ আমদানি শুল্কে সুতা কিনার সুযোগ দিলেও পোশাকের ক্ষেত্রে আমরা (!) প্রায় শুল্ক মুক্ত আমদানির সুযোগ পেয়ে যাই। সেসাথে দেশে উৎপাদিত পোশাকের উপর কর ৫% এ উন্নীত [বিদেশী পোশাকের ক্ষেত্রে এই কর ১,৫%] হওয়ায় তা আমাদের পোশাক প্রস্তুতকারীদের কাছে মরার উপর খাড়ার মতই আশীর্বাদ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। ফলস্রুতিতে আমাদের গ্রামীন পোশাক শিল্প এখন বিলুপ্ত প্রায়্। ৩।

এইবার বলি নিত্য পণ্যের কথা। বাজারে চাল্-ডাল্, পেয়াজ্-রসুন্-আদা, সাবান্-প্রসাধনী সামগ্রীর এক বিরাট অংশই আমাদের ওই প্রিয় বন্ধু কর্তৃক স্বল্প আমদানি শুল্কে অবাধ আমদানি করার বিশেষ সুযোগ দানের ই ফসল্। তবে এক্ষেত্রে এই প্রিয় বন্ধুটি কিছু পণ্যের শুল্ক মুক্ত রফতানি সুযোগ ও দিয়েছে, যেমন ইলিশ মাছ্, চামড়া, তেল্, গ্যাস ইত্যাদি। তবে এই শুল্ক মুক্ত রফতানির বলির শিকার হচ্ছি আমরা সবাই। শুধু মাত্র বানিজ্য বৈষম্যের এই কয়েকটি খন্ড চিত্রে কি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মলিন দশা ই কি চোখে পড়ে না ? দেশটা ওই বুলি আউড়ানো স্বাধীনতার পর থেকেই কি একটা উপনিবেশে পরিনত হচ্ছে না ? ব্যাকরণ বইয়ে পড়েছি "স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করাই কঠিন্"-কথাটির প্রতি সকলের সতর্ক দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে লিখলাম্। কোন তথ্য বহুল লিংক শেয়ার করতে পারলাম না, তাই দু:খিত । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।