আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার অনুবাদ করা প্রথম বই বের হচ্ছে এবারের বইমেলায়

© এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের। তাই লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোন প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যবহার না করার অনুরোধ রইল... অনুবাদ করে ফেলেছিলাম বেশ আগেই। প্রুফ দেখে শেষ করতে করতেই অনেক দিন চলে গেলো। অবশেষে সকল প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে বের হতে যাচ্ছে আমার অনুবাদকৃত প্রথম বই। খুবই ভালো লাগছে, আমার একটা স্বপ্ন পুরণ হলো।

এই বইয়ের সাফল্যের উপর নির্ভর করবে, এরপরে আরো কাজ করব কিনা। ছোটবেলা থেকেই দেশি-বিদেশী বই পড়তে পড়তে বড় হয়েছি (আমার নিক দেখলেও একটা ধারণা পাবেন যে আমি আসলেই বইয়ের পোকা )। আমি পড়ার বই থেকে শুরু করে, বাজারের ফর্দ, রাস্তায় পড়ে থাকা ছেড়া পেপারের টুকরো সবই পড়ি (আমার পড়ার লিস্ট নিয়ে আরেকদিন লিখবো )। ছোটো বেলায় শুধু বাংলা্য় লিখা বই পড়তাম এবং বাংলায় অনুবাদ করা বিদেশী বই পড়তাম। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়ে মনেই হতো না যে, ভিনদেশি ভাষায় লেখা বই পড়ছি, এমন সুন্দর অনুবাদ।

বাসায় যেসব বই ছিলো বেশীর ভাগই বাংলায় ছিলো, হাতেগোণা অল্প কিছু বই ছিলো ইংরেজিতে। তখন সাহস হতো না ঐগুলা পড়ার। এরপর যখন ধীরে ধীরে ইংরেজির প্রতি ভীতি একটু কমলো তখন থেকে ইংরেজী ভাষার বইও পড়া শুরু করলাম । ইংরেজিতে পড়া আমার প্রথম বই আর কিছুই না, বিখ্যাত 'Harry Potter and the Philosopher's Stone'। এরপরে আর থেমে থাকি নি, পড়েই চলেছি।

পড়তে পড়তে মনে হলো এখন মনে হয় একটু লিখতেও পারবো। আগেও কিছু কাজ করেছিলাম ছোটোখাটো, কিন্তু পুরো বই অনুবাদ করার সাহসটা একটু বেশি হয়েই গেলো কিনা, তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এরমধ্যেই হঠাৎ একদিন বাংলাবাজার চলে গেলাম বাতিঘর প্রকাশনীর নাজিম ভাইয়ের সাথে দেখা করতে। (নাজিম ভাই তখন The Da Vinci Code অনুবাদ করে বেশ জনপ্রিয়, এরপরে নিজেই প্রকাশনী খোলেন, বাতিঘর প্রকাশনী। ) উনার সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময়ই আমি একটি বই নিয়ে যাই উনাকে দেখাবো বলে।

আমি ভেবেছিলাম, উনি হয়তো আমাকে পাত্তাই দেবেন না। কিন্তু উনার সাথে দেখা হওয়ার পর ধারনা পাল্টে গেলো। উনি আমাকে বেশ উৎসাহই দিলেন এবং পরে আবার দেখা করতে বললেন। এরপরে বেশ কিছুদিন কথা বলার পরে একটা বই থিক করা হল অনুবাদের জন্য। সেটাই অনুবাদ করলাম ।

প্রথম দিকে একেকটা পেজ অনুবাদ করতে ঘন্টা খানেক লেগে যেত, যদি পাঠক না বুঝে এই ভেবে। এরপর আস্তে আস্তে গতি বাড়ল। অবশেষে অনেক ঝক্বি ঝামেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রাথমিক অনুবাদের কাজ। এরপর টাইপিং এর জন্য পাঠানো হলো। টাইপিং করে যখন আমাকে দেয়া হল ফার্স্ট প্রুফ দেখার জন্য, দেখে মনে হল বেটা টাইপিস্ট নিজেও একজন অনুবাদক নাহলে এমন ধরনের অদ্ভুত সব ভুল করে রেখেছে, দেখে মেজাজই খারাপ হয়ে গেলো।

এরপর আরো দুইবার প্রুফ দেখলাম। তারপরে নাজিম ভাই ফাইনাল প্রুফ দেখে যেসব জায়গায় পরিবর্তন করা দরকার, করে দিলেন। তারপর থেকে অপেক্ষায় ছিলাম কবে বই আকারে বের হবে?? হঠাৎ আজকেই নাজিম ভাই ফোন করে বললেন, "তোমার বইতো রেডি, কালকে থেকেই মেলায় পাওয়া যাবে। " আমিতো তখন পারলে আকাশে উড়ে যাই, কিন্ত শেষ মুহুর্তে আর উড়লাম না, ভাবলাম বইটা কেমন হল দেখেই যাই । অনেক প্যাচাল পারলাম, আর না।

বইয়ের নাম : বয়েজ ফ্রম ব্রাজিল (The Boys from Brazil) মূল বইয়ের লেখক: ইরা লেভিন (১৯২৯-২০০৭) সারসংক্ষেপ: নাজি হন্টার ইয়াকভ লিভারম্যান হঠাৎ মাঝরাতে একটা ফোন কল পায়। ব্রাজিল থেকে এক যুবক তাকে ফোনে জানায়, এইমাত্র সে প্রাক্তন নাজিদের এক গোপন মিটিঙে আড়ি পেতে জানতে পেরেছে “এনজেল অফ ডেথ নামে” দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়কার কুখ্যাত এক প্রাক্তন নাজি নেতা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চুরানব্বইটি হত্যাকান্ড ঘটানোর প্ল্যান করেছে। লিবারম্যান প্রথমে অবিশ্বাস করলেও তার সাথে কথা বলার মাঝখানে যুবক খুন হয়ে গেলে তদন্তে নামে সে। তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে এমন এক লোহমর্ষক সত্যা যা বদলে দিবে ইতিহাসের গতি ধারাকে, পৃথিবীর বুকে আবারো ফিরিয়ে আনবে নারকীয় হিটলার যুগ। লিবারম্যান তার সমস্ত শক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে একসময় আক্ষরিক অর্থেই মুখোমুখি হয় স্বয়ং হিটলারের।

লিবারম্যান কি পারবে তার সমস্ত সত্বা দিয়ে লড়াই করে পৃথিবীকে খোদ হিটলারের হাত থেকে রক্ষা করতে? জানতে হলে পড়ুন ইরা লেভিনের পৃথিবী কাঁপানো সাসপেন্স থ্রিলার “বয়েজ ফ্রম ব্রাজিল”। হিটলারের কনসেনট্রেসান ক্যাম্পের লোহমর্ষক পরীক্ষা, অবিশ্বাস্য পটভূমি এবং দূর্দান্ত এক কল্পবৈজ্ঞানিক কাহিনীর সমন্বয়ে রচিত বইটিতে বর্নিত হয়েছে এক বিশাল ষড়যন্ত্রের পটভূমি, যা পড়ে পাঠক অবিশ্বাসে কেঁপে উঠবেন। এই বইটি থেকে সিনেমাও তৈরি করা হয় The Boys from Brazil তার বই থেকে আরও কিছু সিনেমা তৈরি করা হয়েছে। Rosemary's Baby (Director: Roman Polański) Deathtrap Sliver The Stepford Wives A Kiss Before Dying No Time for Sergeants Revenge of the Stepford Wives বইটি পাওয়া যাবে বাতিঘর প্রকাশনীর স্টলে। স্টল নং: ৭৮ (বট গাছের পাশে) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.