আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাত আছে ভাত ?...থাকলে অমর্তের মৃত লাশটাকে খেতে দাও...চিতায় পুড়ছে পেটের ক্ষুধা...খেতে না পেয়ে আরেকটি আত্নহত্যা...

...আচ্ছা বলেনতো বন্ধুরা দু:খি মার সামর্থ্য থাকলে কি প্রিয় সন্তানকে দিনের পর দিন উপোস করিয়ে রাখতে পারে। জেএসসি পরীক্ষার্থী অমর্ত তা বুঝল না । মায়ের কাছে ভাত চেয়ে না পেয়ে সে আতœহত্যা করল। নিজের গলাটা দড়ির ফাঁসিতে ঝুলাল। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের মলাইশ গ্রামের ছেলে অমর্ত।

মঙ্গলবার জেএসসি পরীক্ষা শেষে বিকেলে বাড়ী ফিরে মা মমতা রানীর কাছে ভাত চায়। টানাপোড়েনের সংসারে তখনও ভাতের জোগাড় হয়নি। ওদিকে তার বাবা মাঠে ধান বোনার কাজ করছিল। পেটের ক্ষুধায় প্রচন্ড ক্ষেপে যায় অমর্ত। প্রলাপ করে দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে।

রাগবে না কেন বলেন সকালে ও যে কিছু না খেয়ে পরীক্ষার হলে গিয়েছিল ছেলেটি... বিকেল শেষে সন্ধ্যা আসে , আসে না শুধু অমর্ত। শুরু হয় মার খোঁজাখুঁজি। ভাতের জোগাড় করে রাতে কেরোসিনের বাতি ও হারিকেন দিয়ে ক্ষুধার্ত ছেলেকে চারিদিকে খুঁজতে থাকেন মা মমতা । রাত ৯ টা । ঘরের পাশে খালের পারের গাছে ঝুলছে অমর্তের লাশ।

ক্ষুধার রাজ্যে ইতিহাসের নির্মম সাক্ষী হন মা মমতা রাণী ! ছেলের মৃতদেহ দেখে বাকরুদ্ধ মা মুর্ছা যান। জন্মদাতা পিতা অনেকটা নির্বাক। তিন ভাইয়ের চিৎকারে গাঁয়ের মানুষ ছুটে আসে। স্বান্তনা দেয়। কিন্তু তারা কেউতো ক্ষুধার সময় অমর্তদের ভাত দেয়নি।

শোকের মাতম চলছে। এ নির্মম আত্মহননে কোন শান্তনা জানা নেই অমর্তের সহপাঠীদের । শিক্ষকরা চোখ মুছলেন। আজ বুধবার ছিল অমর্তের বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষা। কেন্দ্রে পরীক্ষা চলছে।

কিন্তু অমর্ত লাশ হয়ে পড়ে আছে বাড়িতে। এটাই নিয়তি, এখন চিতায় পুড়ে ছাই হচ্ছে অমর্তের ক্ষুধা । আর কোন দিন ভাতের জন্য মার সাথে রাগারাগি করবে না ছেলেটি। যে আসনটিতে বসে প্রথম দিনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল অমর্ত। সেই আসনটির দিকে তাকিয়ে কজন সহপাঠীর চোখ ছলছল করে উঠে।

আমরা কি অমর্তের এই করুণ মৃত্যুতে কাঁদব? আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র কি করবে ? অমর্ত , সোনাবরুরা মরে গেলে কার কি ? আসুন ২০১১ তে আবার আমরা আওয়াজ তুলি “ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিত্র খাব” ভাত দে...বক্তৃতা বন্ধ কর...!ভাত দে...আশ্বাস বন্ধ কর... ভাত দে...হাসি বন্ধ কর... ভাত দে...স্লোগান বন্ধ কর...ভাত খাব ভাত...আমাকে ভাত দে... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।