আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাউন্টেন ডিউতে শ্যাওলা : মাউন্টেন ডিউ খাই ভয়কে জয় করি

আমি উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলতে চাই মাউন্টেন ডিউ এর বিজ্ঞাপনটার কথা আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই, মাউন্টেন ডিউ খাও আর ভয়কে করো জয়। মুখরোচক এমন বিজ্ঞাপন দেখে আপনি ডিউ খেয়ে হয়তো এখন আর ভয়কে জয় করার দুঃসাহস দেখাতে পারছেন না। উল্টো ডিউ খেয়ে ডাক্তারের কাছে ছুটতে হতে পারে। যেমনটা ডিউ খেতে গিয়ে রীতিমত ভয় পেয়ে পরিবর্তন ডটকম অফিসে ছুটে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র। তারা ক্যাম্পাসেরই একটি দোকান থেকে কিনেছিলেন মাউন্টেন ডিউ এর দুটো বোতল।

একজন খুলে খেয়েও ফেলেন। অন্যজন লক্ষ্য করে দেখেন কাঁচের বোতলে কালো একদলা শ্যাওলা জাতীয় একটা বস্তু ঘুরপাক খাচ্ছে। ততক্ষণাৎ তারা ডিউ খাওয়া বাদ দিয়ে ছুটে আসেন পরিবর্তন অফিসে। তরুন শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, একটি প্রথম সারির ব্যাভারেজ কোম্পানির পানীয়তে যদি এমন শ্যাওলা পাওয়া যায়, অন্য কোম্পানির অবস্থা তাহলে কতোটা ভয়াবহ। এটা খেলে কী হতে পারতো আমরা কল্পনা করতে পারছি না।

গত ২৮ জুন মুন্সীগঞ্জে স্পিড এনার্জি ড্রিংস খেয়ে হযরত আলী নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। জানা গেছে, বাংলাদেশের বাজারে মাউন্টেন ডিউ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সকম বেভারেজ লিমিটেড। আমেরিকার পেপসিকো’র লাইসেন্সে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে বিশ্বখ্যাত এ পানীয় বাজারে বিক্রি করছে। তবে বোতলের গায়ে কোনও প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র উৎপাদন তারিখ আর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা লেখা রয়েছে।

অনেক সময় কোনো বোতলের গায়ে তাও থাকে না। পরিবর্তন ডটকমের কাছে শ্যাওলা ভাসমান মাউন্টেন ডিউ এর সেই বোতলটি সংরক্ষিত আছে। যার মেয়াদ এখনো পাঁচ মাস বাকি। বিএসটিআই’র ‘স্পেসিফিকেশন ফর বেভারেজ ওয়াটার’ এর নিয়ম হলো মাউন্টেন ডিউ এর মতো কার্বনেটেড পানীয় কী ধরণের রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহারে তৈরি করা হয়েছে তা পার্সেন্টেজসহ উল্লেখ করতে হবে। কিন্তু মাউন্টেন ডিউ এক্ষেত্রে একদম উদাসীন।

কাচেঁর বোতলেতো কিছুই নেই এমনকি পেট (প্লাস্টিক) বোতলেও স্পষ্টভাবে রাসায়নিক উপাদানের পরিমান সংক্রান্ত তথ্য লেখা নেই। যার ফলে আমরা কি খাচ্ছি তা নিয়ে থাকছে বড় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন। বিএসটিআই নির্দেশিত মান অনুযায়ী এসব পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে হাইজেনিক পরিবেশও মানা হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন দোকানে-গুদাম, পাড়া-মহল্লার এসব মালামাল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কয়েক মাস ধরেও পড়ে থাকে বলে দোকানদাররা জানান। মাউন্টেন ডিউতে মিলল শ্যাওলা!মাউন্টেন ডিউয়ের অপর ক্রেতা বলেন, “আমি মনে করি, এভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি এসব পানীয়ের ব্যাপারে সকলকে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সাবধান করা উচিত।

সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যঝুকির মধ্যে ফেলে এসব ব্যবসা বন্ধ করা উচিত। আমরা কী খাচ্ছি বা কি কি রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে এসব তৈরি করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। বিএসটিআই এর নীতিমালা পুরোপুরি মেনে খাওয়ার পণ্যের সরবরাহ করতে হবে। অবশ্যই ভোক্তা সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। ” জানা গেছে, তথ্য গোপন করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি এসব পানীয় বিক্রির ফলে ভোক্তা অধিকার আইন যেমন লঙ্ঘন হচ্ছে তেমনি ভোক্তা জানতে পারছে না এগুলো পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক হচ্ছে কী না।

বিএসটিআই এর নির্দেশনা অনুযায়ী মাউন্টেন ডিউয়ের বোতলের গায়ে বিদেশের যে কোম্পানি থেকে আমদানি হচ্ছে এবং দেশীয় যে কোম্পানিটি আমদানী করছে তার দুটোই থাকার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অথচ মাউন্টেন ডিউ এর কাঁচের বোতল বা প্লাস্টিকের বোতলে দেশীয় আদানীকারক ট্রান্সকম বেভারেজ লিমিটেডের কথাই শুধু লেখা রয়েছে। প্রকৃত প্রতিষ্ঠান ‘পেপসিকো’র নাম কোথাও উল্লেখ নেই। এতে করে পানীয়টির প্রকৃত নির্মাতা কে তা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা সন্দেহের। জানা গেছে, মাউন্টেন ডিউতে বারবার একই বোতল ব্যবহার করা হয়, আর সেটা যে স্বাস্থ্যসম্মত (হাইজেনিক) নয় তা বোতলের ভেতরে শ্যাওলা পাওয়াই প্রমাণ করছে।

বোতলের গায়ে প্রস্তুতিকাল এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের সময় এতো ছোট করে লেখা থাকে যে তা দেখতে ক্রেতাদের কষ্ট করতে হয়। সেখানে নেই ফ্যাক্টরির নির্দিষ্ট এবং স্পষ্ট ঠিকানাও। ডিউয়ের মতো বাজারের অন্যান্য এনার্জি ড্রিংকগুলোর মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.