আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিটনের ফ্লাট

লিখতে পারিনা তাই চেষ্টা করি। সেই হাই স্কুল লাইফের থেকে লিটন আর আমি ভালো ব্ন্ধু। পড়াশুনা, ব্যবসা, চাকুরী যে যাই করিনা কেন দুজনে পরামর্শ করে করি। ব্যবসা করে মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত লিটন। এবার বিয়ে করবে।

পাত্রি ঠিক। দূর সম্পর্কের খালাতো বোন। লিটনের বাড়ি এর মেয়ের বাড়ি পশাপাশি গ্রাম। গ্রামের বাড়িতেই থেকে ইন্টারমিডিয়েট পড়ে। বিয়েতে দাওয়াত পাইলাম আমি সহ আমাদের বন্ধুদের মধ্যে ৮/৯ জন।

আমরা প্লান করলাম আমাদের এক বন্ধু আনোয়ারের নিজস্ব মাইক্রো আছে সেটাতে করে যাবো। ঢাকা থেকে ৩ ঘন্টা জার্নি করে লক্ষিপুরে পৌছাইলাম। প্রচন্ড ক্ষুদা লেগেছে। বিয়ের আয়োজন মেয়ের বাবার বাড়িতে। খেতে বসেছি আমারা বর (লিটন) এর সাথে।

আমাদের সাথে বসেছে লিটনের সম্পর্কে শালী লাগে এমন ৪/৫টা সুন্দরী মেয়ে। মেয়েগুলো মোটা মুটি জ্বালাইতেছে যতটুকু তার থেকে বেশি ওদের কথা শুনতে হয়। ঠিক তখন আমাদের আর এক বন্ধু বকুল আমার কানের কাছে এসে বল্ল--- লিটনের আগের বিয়েতে খাবার দাবার আরো ভালো হয়েছিলো এ বিয়েতে খাবার বেশি টেস্ট হয়নি রে। কথাটা এমনভাবে বল্ল যেন পাশে থাকা মেয়েটা শুনতে পায় কিন্তু এমন ভান করেছিলো যেন আর কেউ না শুনে। আমি তো বকুলের এ ধরনের কথায় থ হয়ে গেলাম।

ঠিক তখন ও আমাকে বল্ল দোস্ত বিয়া বাড়ির আর কারও যেন কানে না যায় যে লিটনের আগে আর একটা বিয়ে ছিলো। জানলে কিন্তু এই বিয়ে ভেঙ্গে যেতে পারে। এই কথা বলার পর দেখি মেয়েটা ঘরে চলে গেলো। দশ মিনিটের ভিতর দেখি কানাঘুষা তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো। কেউ এসে ঘটক কে ডেকে বাইরে নিয়ে যায়।

কেউ এসে লিটনের বোনজামাইকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায়। আস্তে আস্তে কথা হয় কিন্তু হাতপা এমন ভাবে নাড়া চড়া করে যেন সব উলাটপালট হয়ে যায়। পরে অবশ্য সমাধান করা সম্ভব হয়। পরে অবশ্য লিটনের দুলাভাই ব্যাপরারটার সমাধান করতে পেরেছিলো তবে অনেক তেল খরচ করে। খাওয়া দাওয়া শেষ আমরা রওনা হলাম লিটনের বাড়িতে।

আজ রাতে ওদের বড়িতে থাকব। মজা করবো টুয়েন্টি নাইন খেলবো। কথা আছে লিটন ও আমাদের সাথে শরীক হবে। রাত হলো লিটন আমাদের বল্ল দোস্ত তোরা টুইন্টি নাইন খেলা আমি খুব টায়ার্ড আমি ঘুমাবো। ঠিক তখন বন্ধুদের মধ্য থেকে নানা আদিরসাত্মক কথা বের হতে লাগলো তা সহ্য করা লিটনের পক্ষে সম্ভব ছিলো না কিন্তু সেদিন পেরেছিলো কারন পুরষ মানুষ দুপ্রকার জীবিত আর বিবাহিত আর আজ থেকে আমাদে বন্ধু দ্বিতীয় প্রকার এ অন্তর্ভক্ত হলো।

ঠিক সে সময় বকুল বল্লো দোস্ত চল বাসর ঘরের দরজা বন্ধ করার আগে লিটনের বউ দেখে আসি। সবাই মিলে গেলাম কেউ ছবি তুল্লো কেউ পরিচিত হলো। ঠিক তখন বকুল বল্ল যাই বলিশ লিটনের আগের বউটা আরো সুন্দরী ছিলো। এই বলে ও বেরিয়ে গেলো সাথে সাথে আমারা ও বেরিয়ে গেলাম। পরে শুনেছি লিটন আর বাসর রাতে বিড়াল মারতে পারেনি ।

ব্যবসা ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ায় লিটন তার বউ নিয়ে রামপুরা একটি ফ্লাটে উঠলো কিন্ত ফ্লাটে বউনিয়া বেশি দিন থাকতে পারলোন ৯ মাস পর শোনা গেলো তার বউয়ের ৮ মাস তাই বউ চলে যাবে বাবার বাড়ি এ কটা দিন মায়ের কাছে থাকবে। আর এই সুযোগে "লিটন এর ফ্লাটে" আমরা নিয়মিত আড্ডা মারা টুয়েন্টি নাইন খেলা চালিয়ে গেলাম। ৭/৮ মাস পর লিটনের বউ ফুটফুটে একটা পূত্র সন্তান এর সম্মানিত জননী হয় আবার ঢাকায় চলে আসলো ফলে আমাদের আড্ডা বন্ধ হয়ে গেলো। একদিন আমরা ৪/৫জন মিলে লিটনের ছেলের জন্য একটা স্বর্ণের ব্যাচলেট করে নিয়ে গেলাম তাকে দেখেতে। সেই দিনও ভালো খাবার দাবার এর আয়েজন করল।

লিটনের বউ মানে আমাদের ভাবি ও বেশ ফ্রি হলো খাওয়া দাওয়া শেষে আমারা আড্ডা মারতে বসলাম ঠিক সে সময় বকুল বল্ল ভাবি বাড়িতে ছিলেন কত মাস? ভাবি বল্ল ৮ মাস। বকুল অনেক চিন্তা করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বল্ল ৮ মাসের মধ্যে কত কিছু ঘটে গেলো তাইনা দোস্ত? আমি তো ভাবলাম ৮ মাসে লিটন বাবা হলো ভাবি মা হলো সেটা ইন্ডিকেট করছে। আমি ও সায় দিলাম বল্লাম ঠিক তাই। ভাবি তখন জজ্ঞাসা করল কি ঘটে গেলো এই ৮ মাসে? লিটন আকাশ থেকে পড়ার ভান করে বল্ল কেন ভাবি লিটনের ফ্লাট নামের কোন নাটক দেখেন নাই। ভাবি বল্ল তা হলে থাক আপনাকে বলে লাভ নাই এই বলেও সে চালিয়ে গেলো এই আট মাসে লিটনের এই ফ্লাটে কত কিছু হলো থাক গে আজ তাহলে যাই ভাবি..........।

লিটন তখন বকুলের হাত চেপে ধরে বল্ল দোস্ত আমার জীবেনের শুরু থেকে তুই বহুত প‌্যাচ লাগাইছিস আর লাগাস না। ভাবি তখন হেসে হেসে বল্ল বকুল ভাই আর কিচুতে ই প‌্যাচ লাগবো না আপনি যা খুশি বলেন আমি আমার স্বামীকে ভালো করে চিনেছি আর সেই সাথে আপনাকে ও চিনেছি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।