আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অর্থোপার্জনে নারীর বাহিরে গমন : লাভ-ক্ষতি

বর্তমান যুগ অর্থনৈতিক যুগ, অর্থের প্রয়োজন আজ যেন পূর্বাপেক্ষা অনেক গুণ বেশি বেড়ে গেছে। অর্থ ছাড়া এ যুগের জীবন ধারণ তো দূরের কথা শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণও যেন সম্ভব নয় - এমনি এক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে জীবন ও সমাজের সর্বক্ষেত্রে। তাই পরিবারের একজন লোকের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা, এক ব্যক্তির উপার্জনে গোটা পরিবারের সব রকমের প্রয়োজন পূরণ করা আজ যেন সুদূরপরাহত ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। আজকের লোকদের মনোভাব এমনি। তারা মনে করে, জীবন বড় কঠিন, সংকটময়, সমস্যা সংকুল।

তাই একজন পুরুষের উপার্জনের উপর নির্ভর না করে ঘরের মেয়েদের- স্ত্রীদের উচিত অর্থোপার্জনের জন্য বাইরে বেরিয়ে পড়া। এতে করে একদিকে পারিবারিক প্রয়োজন পূরণের ব্যাপারে স্বামীর সাথে সহযোগিতা করা হবে, জীবন যাত্রার মান উন্নত হবে। অন্যথায় বেচারা স্বামীর একার পক্ষে সংসার সুষ্ঠভাবে চালিয়ে নেয়া কিছুতেই সম্ভব হবে না। আর অন্যদিকে নারীরাও কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয় পড়ে নিজেদের কর্মক্ষমতার বিকাশ সাধনের সুযোগ পাবে। এ হচ্ছে আধুনিক সমাজের মনস্তত্ত্ব।

এর আবেদন যে খুবই তীব্র আকর্ষণীয় ও অপ্রত্যাখ্যানীয়, তাতে সন্দেহ নেই। এরই ফলে আজ দেখা যাচ্ছে, দলে দলে মেয়েরা ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ছে। অফিসে, ব্যবসাকেন্দ্রে, হাসপাতালে, উড়োজাহাজে, রেড়িও, টিভি স্টেশনে- সর্বত্রই আজ নারীদের প্রচন্ড ভীড়। এ সম্পর্কে দুটো প্রশ্ন অত্যন্ত মৌলিক, একটি পারিবারিক-সামাজিক ও নৈতিক আর দ্বিতীয়টি নিতান্তই অর্থনৈতিক। নারী সমাজ আজ যে ঘর ছেড়ে অর্থোপার্জন কেন্দ্রসমূহে ভীড় জমাচ্ছে, তার বাস্তব ফলটা যে কী হচ্ছে তা আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে।

পরিবারের মেয়েরা নিজেদের শিশু সন্তানকে ঘরে রেখে দিয়ে কিংবা চাকর-চাকরানীর হাতে সপে দিয়ে অফিসে, বিপণীতে উপস্থিত হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে দিন রাতের প্রায় সময়ই শিশু সন্তানরা মায়ের স্নেহ বঞ্চিত থাকতে বাধ্য হচ্ছে। আর তারা প্রকৃত পক্ষে লালিত পালিত হচ্ছে, চাকর চাকরানীর হতে। ধাত্রী আর চাকর চাকরানীরা যে সন্তানের মা নয়, মায়ের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করাও তাদের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়- এ কথা যুক্তি দিয়ে বোঝাবার প্রয়োজন পড়ে না অথচ ছোট ছোট মানব শিশুদের পক্ষে মানুষ হিসেবে লালিত-পালিত হওয়ার সবচাইতে বেশি প্রয়োজনীয় হচ্ছে মায়ের স্নেহ-দরদ ও বাৎসল্যপর্ণ ক্রোড়। অপরদিকে স্বামী ও উপার্জনের জন্য বের হয়ে যাচ্ছে, যাচ্ছে স্ত্রীও।

স্বামী এক অফিসে, স্ত্রী অপর অফিসে, স্বামী এক কারখানা, স্ত্রী অপর কারখানায়। স্বামী এক দোকানে, স্ত্রী অপর এক দোকানে। স্বামী এক জায়গায় ভিন মেয়েদের সঙ্গে পাশাপাশি বসে কাজ করছে, আর স্ত্রী অপর এক স্থানে ভিন পুরুষের সঙ্গে মিলিত হয়ে রুজী- রোজগারে ব্যস্ত হয়ে আছে। জীবনে একটি বৃহত্তম ক্ষেত্রে স্বামী আর স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এর ফলে স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনের বন্ধনে ফাটল ধরা ছেদ আসা যে অতি স্বাভাবিক তা বলে বোঝাবার অপেক্ষা রাখে না।

এতে করে না স্বামীত্ব রক্ষা পায়, না থাকে স্ত্রীর বিশ্বস্ততা। উভয়ই অর্থনৈতিক প্রয়োজনের দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ, আত্মনির্ভশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজস্ব পদও সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আত্মচিন্তায় মশগুল। প্রত্যেকেরই মনস্তত্ত্ব সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ভাবধারায় চালিত ও প্রতিফলিত হতে থাকে স্বাভাবিকভাবেই। অত:পর বাকী থাকে শুধু যৌন মিলনের প্রয়োজন পূরণ করার কাজটুকু। কিন্তু অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভের পর এ সাধারণ কাজে পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল হওয়া কতটুকু সম্ভব- বিশেষত বাইরে যখন সুযোগ সুবিধার কোন অভাব নেই।

বস্তুত এরূপ অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক আকর্ষণ ক্ষীণ হয়ে আসতে বাধ্য। অত:পর এমন অবস্থা দেখা দেবে, যখন পরিচয়ের ক্ষেত্রে তারা পরস্পর স্বামী- স্ত্রী হলেও কার্যত তারা এক ঘরে রাত্রি যাপনকারী দুই নারী পুরুষ মাত্র। আর শেষ পর্যন্ত চুড়ান্তভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া তাদের ক্ষেত্রে বিচিত্র কিছু নয়। পারিবারিক শান্তি-শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি, নির্লিপ্ততা, গভীর প্রেম- ভালোবাসা শূন্য হয়ে বাস্তব ক্ষেত্রে অর্থোপার্জনের যন্ত্র বিশেষে পরিণত হয়ে পড়ে। এ ধরণের জীবন যাপনের এ এক অতি স্বাভাবিক পরণতি ছাড়া আর কিছু নয়।

একথা সুস্পষ্ট যে, যৌন মিলনের স্বাদ যদিও নারী পুরুষ উভয়েই ভোগ করে, কিন্তু তার বাস্তব পরিণাম ভোগ করতে হয় কেবলমাত্র স্ত্রীকেই। স্ত্রীর গর্ভেই সন্তান সঞ্চারিত হয়। দশ মাস দশ দিন পর্যন্ত বহু কষ্ট ও যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ তাকেই পোহাতে হয় । আর এ সন্তানের জন্য স্রস্টার তৈরী খাদ্য সন্তান জন্মের সময় থেকে কেবলমাত্র তারই স্তনে এসে হয় পুঞ্জীভূত। কিন্তু পুরুষ এমন কিছু থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।

শুক্রকীট প্রবিষ্ট করানোর পর মানব সৃষ্টির ব্যাপারে পুরুষকে আর কোন দায়িত্বই পালন করতে হয় না। এ এক স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ব্যাপার, যৌন মিলনকারী কোন নারীই এ থেকে রেহাই পেতে পারে না। (হ্যাঁ স্বাভাবিকও প্রাকৃতিক এ নিয়মকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আধুনিক যুগে অনেক উপকরণ ব্যবহার করছে মানুষ যা কোন ধর্মই সমর্থন করেনা) এখন এহেন নারীকে যদি পরিবারের জন্যে উপার্জনের কাজেও নেমে যেতে হয়, তাহলে তা কতখানি কষ্টদায়ক, কত মর্মান্তিক এবং নারী সমাজের প্রতি কত সাংঘাতিক জুলুম, তা পুরুষরা না বুঝলেও অন্তত নারী সমাজের তা উপলদ্ধি করা উচিত। পারিবারিক জীবনের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ দুটো। একটি হচ্ছে পরিবারের অর্থনৈতিক প্রয়োজন পূরণ, আর আপরটি হচ্ছে মানব বংশের ভবিষ্যৎ রক্ষা।

দ্বিতীয় কাজটি যে প্রধানত নারীকেই করতে হয় এবং এ ব্যাপারে পুরুষের করণীয় খুবই সামান্য আর তাতেও কষ্ট কিছুই নেই, আছে আনন্দ-সুখ ও বিনোদন। তা হলে যে নারীকে মানব বংশের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য এতো দু:খ কস্ট ভোগ করতে হচ্ছে, তাকেই কেন আবার অর্থনৈতিক প্রয়োজন পূরণেরও দায়িত্ব বহন করতে হবে? এটা কোন ধরনের ইনসাফ! দুটো কাজের একটি কাজ যে স্বাভাবিক নিয়মে একজনের উপর বর্তিয়েছে ঠিক সেই স্বাভাবিক নিয়মেই কি অপর কাজটি অপর জনের উপর বর্তাবে না? নারীরাই বা এ দু ধরনের কাজের বোঝা নিজেদের কাঁধে টেনে নিতে ও বয়ে বেড়াতে রাযী হচ্ছে কেন? ইসলাম বে ইনসাফী পছন্দ করে না। তাই ইসলামের পারিবারিক ব্যবস্থায় গোটা পরিবারের অর্থনৈতিক প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব একমাত্র পুরুষের। দুটো কাজ দুইজনের মধ্যে যে স্বাভাবিক নিয়মে বন্টিত হয়ে আছে ইসলাম সে স্বাভাবিক বন্টনকেই মেনে নিয়েছে। শুধু মেনেই নেয়নি, বরং সে বন্টনকে স্বাভাবিক বন্টন হিসাবে স্বীকার করে নেয়ায়ই বিশ্বমানবতার চিরকল্যাণ নিহিত বলে ঘোষণাও করেছে।

ইসলামের দৃষ্টিতে নারী মহাসম্মানিত মানুষ। তাদের নারীত্ব হচ্ছে সবচেয়ে মূল্যবান। আল্লাহ তাআলা তাদের এ সম্মান ও মর্যাদা নিহিত রেখেছেন তাদের কাছে অর্পিত বিশেষ আমানতকে সঠিকভাবে রক্ষার কাজে। এতেই তাদের কল্যাণ, গোটা মানবতার কল্যাণ ও সৌভাগ্য। নারীর কাছে অর্পিত এ আমানত সে রক্ষা করতে পারে কোন পুরুষের স্ত্রী হয়ে, গৃহকর্ত্রী হয়ে, মা হয়ে।

এ ক্ষেত্রেই তার প্রকৃত ও স্বাভাবিক বিকাশ সম্ভব। নারী যদি সফল স্ত্রী হতে পারে, তবেই সে হতে পারে মানব সমাজের সর্বাধিক মূল্যবান ও সম্মানীয় সম্পদ। তখন তার মাধ্যমে একটা ঘর ও সংসারই শুধু প্রতিষ্ঠিত ও ফুলে ফলে সুশোভিত হবে না, গোটা মানব সমাজও হবে উপকৃত। অনুরূপভাবে নারী যদি মা হতে পারে, তবে তার স্থান হবে সমাজ-মানবের শীর্ষস্থানে। তখন তার খেদমত করা, তার কথা মান্য করার উপরই নির্ভরশীল হবে ছেলে সন্তানদের জান্নাত লাভ।

নারীকে এ সম্মান ও সৌভাগ্যের পবিত্র পরিবেশ থেকে টেনে বের করলে তার মারাত্মক অকল্যাণই সাধিত হবে, কোন কল্যাণই তার হবে না তাতে। তবে একথাও নয় যে, নারীরা আয়ের কোন কাজই করতে পারবে না। পারবে, কিন্তু স্ত্রী হিসেবে তার সব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার পর। তাকে উপেক্ষা করে, পরিহার করে নয়। ঘরের মধ্যে থেকেও নারীরা আয় করতে পারে এবং তা করে স্বামীর দুর্বহ বোঝাকে পারে অনেকখানি হালকা বা লাঘব করতে।

কিন্তু এটা তার দায়িত্ব নয়, এ হবে তার স্বামী -প্রীতির অপূর্ব দৃষ্টান্ত। কিন্তু স্মরণ করতে হবে যে, সফল স্ত্রী হওয়াই নারী জীবনের আসল সাফল্য। সে যদি ঘরে থেকে ঘরের ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠরূপে চালাতে পারে, সন্তান লালন পালন, সন্তানদের প্রাথমিক শিক্ষাদান, সামান্য ও সাধারণ রোগের চিকিৎসার প্রয়োজনও পূরণ করতে পারে, তবে স্বামী প্রীতি আর স্বামীর সাথে সহযোগিতা এর চাইতে বড় কিছু হতে পারে না। স্বামী যদি স্ত্রীর দিক দিয়ে পূর্ণ পরিতৃপ্ত হতে পারে, ঘরের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কে হতে পারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত, তাহলে সে বুকভরা উদ্দীপনা আর আনন্দ সহকারে দ্বিগুণ কাজ করতে পারবে। স্বামীর পৃষ্ঠপোষকতা এর চাইতে বড় আর কি হতে পারে।

নারী স্ত্রী হয়ে কেবল মাত্র সন্তান উৎপাদনের নির্জিব কারখানাই হয় না, সে হয় সব প্রেম-ভালবাসা ও স্নেহ মমতার প্রধান উৎস। স্বামী ও পুত্র কন্যা সমৃদ্ধ একটি পরিবারের কেন্দ্রস্থল। বাইরের ধন-ঐশ্বর্যের ঝংকার অতিশয় সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের চাকচিক্য গৃহাভ্যন্তরস্থ এ নিবিড় সুখ ও শান্তির তুলনায় একেবারেই তুচ্ছ, অতিশয় হীন ও নগণ্য। এ দুয়ের মাঝে কোন তুলনাই হতে পারে না। আজকের দিনে যেসব নারী গৃহকেন্দ্র থেকে নির্মূল হয়ে বাইরে বের হয়ে পড়েছে, আর ছিন্ন পত্রের মতো বায়ূর দোলায় এদিক সেদিক উড়ে চলেছে, আর যার তার কাছে হচ্ছে ধর্ষিতা, লাঞ্ছিতা- তারা কি পেয়েছে, কোথাও নারীত্বের অতুলনীয় সম্মান? পেয়েছে কি মনের সুখ ও শান্তি? যে টুপি অল্প মূল্যের হয়েও মাথায় চড়ে শোভাবর্ধন করতে পারে, তা যদি স্থানচ্যুত হয়ে যায়, তবে ধূলায় লুন্ঠিত ও পদদলিত হওয়া ছাড়া তার আর কি গতি হতে পারে? যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৩ সালে প্রায় ৯৪ হাজার নারী সম্ভ্রমহানির শিকার হয়েছেন।

বৃটেনেও নারীরা যৌন ও শারীরিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ২০০৮ সালে প্রকাশিত জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বৃটেনে নারী ও কন্যারা যৌন ও শারীরিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এই দেশটিতে অবৈধ গর্ভধারণ ও গর্ভপাত নারীদের মধ্যে হতাশা, মানসিক রোগ এবং আত্মহত্যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দিন দিন ওখানে কুমারী মাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতিসংঘ পতিতাবৃত্তিতে জার্মান মহিলাদের অপব্যবহারের মাত্রায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ফ্রান্সে এক তৃতীয়াংশ গর্ভধারণের ঘটনাই অবৈধ। বস্তুত বিশ্বমানবতার বৃহত্তম কল্যাণ ও খেদমতের কাজ নারী নিজ গৃহাভ্যন্তরে থেকেই সম্পন্ন করতে পারে। স্বামীর সুখ দু:খের অকৃত্রিম সাথী হওয়া, স্বামীর হতাশাগ্রস্থ হৃদয়কে আশা আকাঙ্খায় ভরে দেয়া এবং ভবিষ্যৎ মানব সমাজকে সুষ্ঠরূপে গড়ে তোলার কাজ একজন নারীর পক্ষে এ ঘরের মধ্যে অবস্থান করেই সম্ভব। আর প্রকৃত বিচারে এই হচ্ছে নারীর সবচাইতে বড় কাজ। এতে না আছে কোন অসম্মান, না আছে লজ্জা ও লাঞ্ছনার কোন ব্যাপার।

আর সত্যি কথা এই যে, বিশ্বমানবতার এতদাপেক্ষা বড় কোন খেদমতের কথা চিন্তাই করা যায় না। এ কালের সে সব নারী এ কাজ করতে রাযী নয়, আর যেসব পুরুষ নারীদের এ কাজ থেকে ছাড়িয়ে অফিসে কারখানায় আর হোটেল রেস্তোরায় নিয়ে যায়, তাদের চিন্তা করা উচিত, তাদের মায়েরাও যদি এ কাজ করতে রাযী হত, তাহলে এ নারী ও পুরুষদের দুনিয়ায় আসা ও বেচে‌‌‌‌‌ থাকাই হত সম্পূর্ণ অসম্ভব। তাই ইসলাম নারীদের উপর আয়- রোজগারের দায়িত্ব দেয়নি। দেয়নি পরিবার লালন পালন ও ভরণ- পোষনের কর্তব্য। তা সত্ত্বেও যে নারী গৃহকেন্দ্র অস্বীকার করে বাইরে বের হয়ে আসে, মনে করতে হবে তার শুধু রুচিই বিকৃত হয়নি, সুস্থ মানসিকতা থেকেও সে বঞ্চিতা।

সামাজিক ও জাতীয় কাজে কর্মে নারীর ব্যবহার রহস্যজনক। এ ধরনের কোন কাজে নারী বিনিয়োগের প্রশ্ন আসতে পারে তখন, যখন সমাজের পুরুষ শক্তিকে পূণমাত্রায় কাজে লাগানো সম্ভব হয়েছে। তার পূর্বে পুরুষ শক্তিকে বেকার করে রেখে নারী নিয়োগ করা হলে, না বেকার সমস্যা সমাধান হতে পারে, না পারে নতুন দাম্পত্য জীবনের সূচনা, নতুন ঘর সংসার ও পরিবারের ভিত্তি স্থাপিত করতে। কেননা সাধারণত কোন সভ্য সমাজেই নারীরা রোজগার করে পুরুষদের খাওয়ায় না, পুরুষরাই রবং নারীদের উপর ঘর-সংসারের কাজ কর্ম ও লালন পালনের ভার দিয়ে তাদের যাবতীয় অর্থনৈতিক প্রয়োজন পুরণের দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকে। বিশেষত পুরুষরা যদি বাইরের সমাজের কাজ না করবে, জরুরী রোজগারের কাজে না লাগবে, তাহলে কারা করবেটা কি! স্ত্রীর রোজগারে যেসব পুরুষ বসে বসে খায়, তারা নিষ্কর্ম থেকে থেকে কর্মশক্তির অপচয় করে।

এভাবে জাতির পুরষ শক্তির অপচয় করার মত আত্মঘাতী নীতি আর কিছু হতে পারে না। অথচ এসব কাজে নারীর পরিবর্তে পুরুষকে নিয়োগ করা হলে একদিকে যেমন জাতির বৃহত্তম কর্মশক্তির সঠিক প্রয়োগ হবে, বেকার সমস্যার সমাধান হবে, তেমনি হবে নতুন দম্পতি ও নতুন ঘর- সংসার পরিবার প্রতিষ্ঠা। এক একজন পুরুষের উপার্জনে খেয়ে পরে সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে বাচতে পারবে বহু নর নারী ও শিশু। এতে করে পুরুষদের কর্মশক্তির যেমন হবে সুষ্ঠু প্রয়োগ, তেমনি নারীরাও পাবে তাদের স্বভাব প্রকৃতি ও রুচি মেজাজের সাথে সমাঞ্ছস্যপূর্ণ কাজ। এভাবেই নারী আর পুরুষরা বাস্তবভাবে হতে পারে সমাজ সংকটের সমাধানে সমান দায়িত্বপ্রাপ্ত।

যে সমাজ এরূপ ভারসাম্য স্থাপিত হয়, সে সমাজ যে অত্যন্ত সুষ্ঠভাবে ও দ্রুতগতিতে মঞ্জিলে মকসুদে ধাবিত হতে পারে। পারে উন্নতির উচ্চতম প্রকোষ্ঠে আরোহণ করতে, তা কোন অর্থনীতিবিদই অস্বীকার করতে পারে না। তাই এ কথা নি:সংশয়ে বলা যেতে পারে যে, সামাজিক ও জাতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে নারীদের ভীড় জমানো কোন কল্যাণই বহন করে আনতে পারে না- না সামাজিক ও নৈতিক দৃস্টিতে, না নিতান্ত অর্থনৈতিক বিচারে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।