আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইহুদী পলিটিকসের কাছে জামাতের পরাজয়

বুদ্ধু এক দীর্ঘ বছর থেকে আওয়ামী লীগ বি এন পি থেকে জামাতকে আলাদা করতে চাচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন সময়ে তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। এতে বি এন পি থেকে জামাতকে আলাদা করতে না পারলেও একটা ফল আওয়ামী লীগ সহ ধর্ম বিরোধী দলগুলো পেয়েছে। সেটা হলো দেশে কোথাও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকান্ড হলে, কোথাও কারো কাছে অবৈধ অস্ত্র পাওয়া গেলে, কোথাও কেউ ধর্ষিত হলে, মোট কথা সামাজিক বা রাজনৈতিক কোন অপরাধ সংঘটিত হলেই চিহ্ণিত কিছু পত্রিকা সঙ্গে সঙ্গে প্রচার করে জামাত বা শিবির কতৃক উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। জামাত এবং শিবির নেতারা লিখিত প্রতিবাদ করে, কিন্তু সেই সব পত্রিকা প্রতিবাদলিপি ছাপায় না।

সেই প্রতিবাদ শুধুমাত্র জামাতের দৈনিক সংগ্রামে ছাপা হয়। আর একটা বিষয় হলো উক্ত চিহ্ণিত পত্রিকার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আওয়ামী লীগ ও ধর্ম বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা কোন সাী-প্রমাণ ছাড়াই জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে বলতেই থাকে। জামাত ও শিবিরের দাবী, কোন অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে তাদের কোন সদস্য তো জড়িত নয়ই কোন কর্মীও জড়িত নয়। তবে সবদলের মধ্যে ২/১জন মন্দপ্রকৃতির লোক থাকতে পারে। জামাত বা শিবির সে ধরণের কোন প্রমাণ পেলে সঙ্গে সঙ্গে অপরাধী ব্যক্তিকে বহিষ্কার করে এবং সারা দেশে দলের সবাইকে তা জানিয়ে দেযা হয।

কিন্তু সমস্যা হলো সেই সব চিহ্ণিত পত্রিকাগুলি এবং সেই সব রাজনৈতিক নেতারা যখন কোন সাক্ষী প্রমাণ ছাড়া জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে অপবাদ দেয় সে অপবাদ জামাত শিবির খন্ডন করলেও এমন কি নিরপরাধ হিসেবে কোর্ট কাছারীতে প্রমাণ করলেও তা প্রচার পায় না। অথচ প্রবল প্রচারের গুণে দেশের জনগণ পত্রিকা এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের সেই মিথ্যা অপবাদ বিশ্বাস করতে শুরু করে এবং কোন কোন মহল বিশ্বাস করেও। তাই জামাত ও শিবির সত্যিকার অর্থে স্বচ্ছ, শান্তিকামী এবং উন্নত নৈতিকতার ধারক হলেও দেশের একটা বৃহৎ অংশের কাছে তা বিশ্বাস যোগ্য হয়ে ওঠেনি। এই অর্থে জামাত ও শিবির স্বচ্ছ, শান্তিকামী এবং উন্নত নৈতিকতার ধারক যে, তাদের সাহিত্য যা তারা তাদের কর্মীদের পড়ায সেই সব সাহিত্য যদি কোন সহৃদয় সুবিবেচক ব্যক্তি পড়েন তবে আমার সঙ্গে একশভাগ একমত হবেন। শুধু তাই নয় অত্যন্ত সচেতন এবং তীক্ষ্ণ মনোযোগ সহকারে তাদের কেন্দ্রিয় নেতৃবর্গ ছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমাজ দেশ মানুষ ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করে দেখতে পারেন, আশা করা যায় তাদের সে সব আলোচনায় প্রগাঢ় দেশপ্রেম ছাড়াও সকল বিষয়ে শন্তি, সৌন্দর্য এবং সৌহার্দের খোঁজই পাবেন।

তাছাড়া এর শক্তিশালী নজির হচ্ছে বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জামাতের দু’জন নেতা ৫ বছর মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। সেই ৫টি বছর তাদের সততাই প্রমাণ করেছে তারা কত সততার সাথে তাদের দল পরিচালনা করেন। বিগত বছরগুলিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের সময় জামাত শিবিরের কোন কর্মী আগুন জ্বালিয়েছে বা গাড়ি ভাংচুর করেছে এর কোন প্রমাণ নেই। এই কারণে যতদূর জানা যায় জামাত শিবিরের বর্তমান বহু তরুণ কর্মী মনে মনে ক্ষুব্ধ হয়, কারণ তারা অন্যান্য দলের কর্মীদের মত মারামারি, ভাংচুর করতে চায। কিন্তু তাদের নেতৃবর্গ তাদেরকে ইসলামের সঠিক মূল্যবোধ সম্পর্কে দিনের পর দিন তালিম দিয়ে তাদের মন থেকে অন্য দলের মানবতাবিরোধী তান্ডবলীলার আছর দূর করে দেন।

দুই ১৯ সেপ্টেম্বরে বিক্ষোভের বিষয়ে অনেকে ধারণা করছেন বি এন পি থেকে জামাতকে আলাদা করা সম্ভব হয়নি, অথচ ২৭ সেপ্টেম্বর বিরোধী দলের নেতৃ হয়তো কঠিন কিছু ঘোষণা দিতে পারেন। তাদের সে সম্মেলনকে দুর্বল করার বিষয়টিও সরকাররে মাথায় আছে। জামাতের শীর্ষ নেতারা কারাগারে। বাইরে যারা আছেন তারা প্রচলিত আইন মেনে নিজেদের অফিস চত্বরেই তাদের কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ রেখেছেন। এই নিরীহ আইন মান্যকারী শান্তিপরায়ণ নেতৃবৃন্দকে কোন ফাঁদে ফেলে আটকাতে পারলে, বি এন পি থেকে আলাদা করতে পারলে যে ফল পাওয়া যেত, সেই ফলই পাওয়া যাবে।

কারণ দলটি নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়বে। তাই বিক্ষোভের দিন পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ মিলে অসংখ্য প্রশিক্ষিত লোককে বিক্ষোভের স্থানের দুদিকের রাস্তায় সাধারণ জনতার বেশে রাখে। উদ্দেশ্য পুলিশ জামাত কর্মীদের উসকে দেবে এই সুযোগে সাধারণ জনতার ছদ্মবেশে থাকা পুলিশ ও আওয়ামী কর্মীরা গাড়ি পোড়াবে । ব্যাপারটি হয়েছে তাই, কারণ ঐ দিন পুলিশের হাতে গুলি ছোড়া অস্ত্র দেয়া হযনি। যেটা হরতালের সময় দেয়া হয়।

কারণ পুলিশ যদি গুলি ছোড়ে তবে জামাত শিবিরের সঙ্গে মিশে থাকা তাদের লোকদের গায়ে গুলি লাগতে পারে। দ্বিতীয়ত গাড়ি পোড়ানো হয়েছে পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী গ্যাস গ্রেনেডের মাধ্যমে। দেশবাসী জানে রাজশাহী ভার্সিটির সাজানো ঘটনার পর যে চিরুনী অভিযান চলেছিল তা এখনো অব্যাহত আছে। মাঝে মাঝেই পুলিশ খোঁজ পেলেই শিবিরের মেসে হানা দেয়, এ্যরেষ্ট করে, জামাতের প্রায় অফিসই তালাবদ্ধ। অতএব এমনিতেই শান্তিপ্রিয় উন্নত নৈতিকতার দাবীদার দলটি নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য গোপনে বসে গ্যাস গ্রেনেড বানাবে বা প্রশিক্ষণ দেবে এটা ভাবাই যায়না।

যতদূর জানা যায় জামাত শিবিরের কর্মীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে একস্থানে বসে কোরআন হাদিসে বর্ণিত উন্নত নৈতিকতার তালিম নেয়। তাকেই গোপন ষড়যন্ত্র বলে পুলিশ অন্যায়ভাবে তাদের এ্যরেষ্ট করে। কিছুদিন পরে দেখা যায় মাননীয় আদালত সেরকম কোন প্রমাণ না পেয়ে বেকসুর খালাশ দিয়ে দেয়। অতএব জামাত শিবিরের নেতৃবৃন্দকে এ্যরেষ্ট করে জামাত শিবিরকে দুর্বল করা যাবে বলে মনে হয় না। কারণ ইসলামের ইতিহাসে সে রকম নজির নেই।

তবে যে উদ্দেশ্যে সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে একাজ করেছে তাদের সে উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও সফল হতে পারে। বি এন পির শক্তিশালী একটা হাতকে কিছুটা হলেও কাবু করা গেছে। আসলে সেই ইহুদী উজির যে নিজের নাক কান কেটে খ্রিষ্টানদের গোত্রের কাছে গিয়ে বলেছিল ’আসলে আমি খ্রিষ্টান, ছদ্মবেশে ইহুদীদের রাষ্ট্রে উজির হয়ে ছিলাম, আমার পরিচয় জানতে পেরে রাজা আমার নাক কান কেটে দিয়েছে। ” খ্রিষ্টানরা তার উপর খুব সহানুভূতি দেখালো এবং পরবর্তীতে সে খ্রিষ্টানদের ঐক্যবদ্ধ গোত্রকে খন্ড-বিখন্ড করে ফেললো। বি এন পি বা জামাত শিবির আগামীতে ’নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গের’ এই ঘটনাটি মনে রেখেই সামনে পা বাড়াবেন বলে আশা করতে দোষ কি! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.