আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিভির জন্য অযোগ্য হলো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কে ধন্যবাদ।


আমার সাথে ২০০৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে পাস করে। এই ডিভি লটারীর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হওয়ার চেষ্টা করছে পাস করার পর থেকেই। যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী হওয়ার আশায়, সবাই অনেক বোঝানোর পরেও আর কোন পড়াশোনা করেনি দেশে। যাই হোক আজ খবর বের হলো ডিভির জন্য অযোগ্য হলো বাংলাদেশ, ৫টি বাছর পর এখবর জানার পর কি হবে সবুজের। আমি জানিনা, বেশ কিছুদিন যোগাযোগ নেই ওর সাথে।

তবে কি এভাবেই কি নষ্ট হয়ে যাবে সবুজের জীবন?? ধরুন, ২০০৭ সালে ডিভি লটারীর মাধ্যমে সবুজ এখন যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী। সবুজ তার মা-বাবা কে নিয়ে গিয়েছে ২০০৮ সালেই। সবুজ এর বাবা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা শিক্ষক, মা একজন ডাক্তার। শুনেছি সবুজ এখন একটি হোটেল এর মালিক যুক্তরাষ্ট্রে। কিছুদিন আগে দেশে এসেছে সবুজ।

বিয়েও করল সুমনা কে। সুমনাও আমার ছোট বেলার বন্ধু, একি সাথে স্কুলে পড়েছি আমরা। সুমনা এই বছর বুয়েটের স্থাপত্য অনুষদ থেকে পাস করে বের হলো। সুমনা এখন বৈবাহিক সুত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী। সামনের মাসে সুমনাও যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাবে।

এটি হলো ডিভি লটারী পাওয়া না পাওয়া মানুষের সাধারন গল্প। আমি ধিক্কার জানাই ঐসব মানুষকে যারা ডিভি লটারী পেয়ে এভাবে দেশ থেকে চলে যায়। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আশাই স্বাভাবিক কেন আমি এদেরকে ঘৃণা করি?? সবুজ ডিভি লটারী পেলো-বাংলাদেশ অনেক কিছু হারালো.... সবুজের মত একজন সুছাত্র সবুজের বাবা একজন শিক্ষক সবুজের মা একজন ডাক্তার সবুজের বৌ সুমনা একজন স্থপতি সবুজ এখন স্বপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী। দেশে কেউ নেই বললেই চলে। বাংলাদেশ হারালো চারটি মানুষ।

তারা এখন বাংলাদেশ থেকে সুশিক্ষিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেবা করবে। চিন্তা করুন এই ৪জন কে শিক্ষিত করতে বাংলাদেশ সরকার কত অর্থ ব্যায় করেছে। এত বছর তারা অপচয় করেছে এই বাংলার মৌলিক অধিকার। এদের শিক্ষা-চিকিৎসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে কত টাকা ভর্তুকি দিয়েছে বাংলাদেশ!! এখানে সবুজের একার কথা বললাম, বছরে ১৭হাজার এভাবে অন্য দেশের অধিবাসী হয়। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের পিছিয়ে পরার অন্যতম প্রধান কারন হল এটি।

হয়তবা বিদেশে থেকে অনেকেই দেশে প্রচুর টাকা পাঠাচ্ছে, সাময়িক ভাবে আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হলেও দেশ কিন্তু পিছিয়ে পড়ছে। ডিভির জন্য বাংলাদেশের অযোগ্য হওয়াকে স্বাগত জানচ্ছি। ভাই বিদেশে গিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করতে পারবেন কিন্তু দেশে বসে পিয়োন হতে পারবেন না-এই মনোভাব পাল্টাতে হবে। কোন কাজই ছোট না। যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করে যদি আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন, তবে এই দেশে কাজ করে কেন পারবেন না।

একবার চিন্তা করুন এই দেশ আপনাকে কতকিছু দিয়েছে। এভাবে দেশকে ভুলে চলে যাবেন না। আমি কাওকে বিদেশ যেতে মানা করছি না, অবশ্যই বিদেশ যান। উচ্চশিক্ষার জন্য যান, ভ্রমন করতে যান। সবশেষে দেশে ফিরে আসুন, দেশের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেন ।

। বিঃদ্রঃ লেখাটি পড়ে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে একটি গল্প মনে করে ভুলে যাবেন। চরিত্রগুলো পুরোটাই কাল্পনিক। প্রবাসে বাসবাসরত অনেক মানুষই দেশের জন্য অনেক কিছু করছেন। তাই বলবোনা যে আমার লেখাটি সকল প্রবাসীর জন্য সত্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।