আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসংগঃহুমায়ুন আহম্মেদ।

পত্রিকান্তরে বা বিভিন্ন টিভি চ্যানেল মারফত জানলাম যে,লেখক হুমায়ুন আহম্মেদ ক্যান্সার আক্রান্ত। আশা করবো যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হোন। আমরা যারা আশি-নব্বইয়ের দশকে বেড়ে উঠেছি,তাদের কাছে তিনি কিংবদন্তীতুল্য। তার বোতলভুত,সূর্যের দিন,আগুনের পরশমনি,অন্ধকারের গান,পুতুল প্রথম দিকের আরো অসংখ্য বই তাকে দিয়েছে আজকের জনপ্রিয় লেখকের মর্যাদা। ফলে একটা সময় দেখা গিয়েছে তিনি যা লিখেন তাই হিট।

কিন্তু হিট লেখকও অনেক অখাদ্য বই উপহার দিয়েছে,এটা আমি তার সমালোচনা করে লিখছি না। প্রকাশকদের তার প্রতি বিভিন্ন বইমেলা ছাড়াও যে ব্যবসায়িক তাগাদা ছিলো তার ফলস্রুতি ছিলো সেইসব বই। তারপরো ভাবি একটা সময় তার নাটক অয়োময়,এইসব দিনরাত্রি,বহুব্রীহি এই ভূখন্ডের মানুষকে কি দারুন আনন্দ দিত। তার নাটকে বাকের ভাইয়ের ফাসি হবে বলে জনগন মিছিল করে প্রতিবাদ করতো। এটা সম্ভবত এই উপমহাদেশে বিরল ঘটনা।

আমার মত পাঠকের কাছে তিনি ছিলেন অসম্ভব মেধাবি,সুখী একজন লোক। তার ছিলো সুন্দরী স্ত্রী গুলতেকিন,ফুলের মত তিনটি মেয়ে ও এক ছেলে। আমি তার এই ভাগ্যকে সবসময়ই মনে করতাম আল্লাহর দান। একটা মানুষের জীবনে যা যা পাওয়া সম্ভব,তিনি তার সবই পেয়েছেন। তার পর হঠাত তার চারিত্রিক পদস্থলন! অন্য অনেকের ন্যায় আমিও আঘাত পেয়েছি,ভাবতাম হায় তার স্ত্রী,পুত্র-কন্যারা না জানি কেমন আঘাত পেয়েছে?কারন খেয়াল করলাম,তার এ ঘটনার পর তারা প্রায় মিডিয়ার আড়ালে চলে যান।

আর কখনো তাদের দেখা যায় নি। গুলতেকিন কি প্রচন্ড আত্নমর্যাদাসম্পন্ন মহিলা যে এর পর কখনো তিনি লোকসম্মুখে আর আসেননি। হবে নাই বা কেনো?তিনি যে প্রিন্সিপাল ইবরাহিম খাঁর নাতনি,সম্ভ্রান্ত বংশীয় এই মহিলা আর কখনো হুমায়ুনের সাথে সম্পর্ক রাখেননি। আমাদের দেশে এই ব্যাপারটা খুব দেখা যায় যে,যখন হাতে প্রত্যাশার বেশি টাকা এসে পরে তখন ব্যক্তিমানুষ ষড়ঋপুর ক্ষপ্পরে পড়ে বিয়ে করে ফেলে। এটা সাধারন্ত উচ্চবৃত্ত ও নিন্মবৃত্তের ক্ষেত্রে পুরোই খাটে।

হুমায়ুন তাই করেছিলেন,ফলে আমার মত অনেক পাঠক তার প্রতি ক্ষুদ্ধ হোন। আমি মনে করতাম যার মনে সামাজিক রীতিনীতি বা মোরাল এথিক্সের প্রবলেম আছে,যিনি স্ত্রী,পুত্র-কন্যার মান সন্মান নিয়ে না ভেবে ষড়ঋপুর দ্বারা চালিত হোন তিনি কোনক্রমেই ভদ্রলোক হতে পারে না। তাই তার প্রতি ছিলো ঘৃনার মনোভাব। আজ আমার বয়স আরো কিছুটা বেড়েছে,তাই প্রিয় লেখকের প্রতি ঘৃনা কিছুটা কমেছে,তার অসুস্থতার খবরে। সে তার জীবনকে যেভাবে বদলেছে,সেটা তার ব্যাপার।

সে তার জন্য সৃস্টিকর্তার নির্ধারিত নিয়তি পাবে,মিছে কেনো আমার ক্ষোভ। আমি শুধু ভাবি,একসময় সে কি সুন্দরই না লিখতো। আবার ফিরে এসে সেইসব লেখার মত বই আমাদের উপহার দিক। আর এটাতো আমরা সবাই জানি,হাজার হাজার বই নয়,কেবল একটিমাত্র ভালো বই লেখককে অনেকদিন পাঠকের মনে জীবিত রাখে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.