আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দহগ্রামের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দেবে ভারত!!!!!! এ ছাড়া আর কি আশা করা যায় ভারতের কাছ থেকে?????

আশায় বুক বেধে ছিলাম , রয়েছি , চিরকাল থাকব। বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে মাত্র তিনবিঘা দূরত্বে ভারতীয় সীমানার ভেতর বাংলাদেশী ছিটমহল দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার অবস্থান। অনেক পানি গড়ানোর পর ছিটমহলবাসীর মূল ভূখণ্ডে আসার একমাত্র পথ তিনবিঘা করিডোর ভারত সরকার ৮ তারিখ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ২৪ ঘণ্টার জন্য খুলে দিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরকালে দু’দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির ফলে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতাবাসী বাংলাদেশীরা এক ধরনের মুক্তির স্বাদ পেল। এতদিন এই করিডোর সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত বন্ধ থাকত।

অর্থাত্, দহগ্রামে সন্ধ্যার পর কারও কোনো বিপদ অথবা প্রয়োজন দেখা দিলে পরদিন সূর্যোদয়ের আগে তাদের পক্ষে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে আসার উপায় ছিল না। এখন সেই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির অবসান ঘটেছে। তিনবিঘা করিডোর এখনও ভারতীয় সার্বভৌমত্বের অধীন এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী এটি নিয়ন্ত্রণ করছে; তবে এটা যে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে তা অবশ্যই স্বস্তির ব্যাপার। দহগ্রামবাসীর কপালে এ স্বস্তি ৭০-এর দশকেই জুটে যাওয়ার কথা ছিল। ১৯৭৪ সালে সম্পাদিত মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী কথা ছিল যে, বাংলাদেশ বেরুবাড়ী ছিটমহল ভারতকে ছেড়ে দেবে, বিনিময়ে ভারত বাংলাদেশকে তিনবিঘা করিডোর দেবে।

মুজিব আমলেই পার্লামেন্টে বিল পাস করে বেরুবাড়ী ভারতকে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে তিনবিঘা হস্তান্তর ঝুলে থাকে। মুজিব আমলে ছিটমহলবাসী বাংলাদেশী এবং সীমান্ত এলাকার ভারতীয়দের স্বার্থ রক্ষার বিষয় মাথায় রেখে সমঝোতা হয়েছিল যে, তিনবিঘার উপর দিয়ে একটা উড়াল সড়ক নির্মিত হবে। সড়কটির উপর দিয়ে বাংলাদেশীরা এবং নিচ দিয়ে ভারতীয়রা আসা-যাওয়া করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটাও ঝুলে যায়।

বাংলাদেশে মুজিব আমল পেরিয়ে মোস্তাক, বিচারপতি সায়েম, জিয়াউর রহমান, বিচারপতি সাত্তার, এরশাদ, খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা, আবার খালেদা জিয়া, মইন-ফখরুদ্দীনের জরুরি আমলের পর আবার শেখ হাসিনার আমল চলছে। ভারতে ইন্দিরা গান্ধীর আমল শেষে মোরারজি দেশাই, চ্যবন, চরণ সিং, আবার ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, ভিপি সিং, বাজপেয়ী, দেবগৌড়া, আইকে গুজরাল, চন্দ্রশেখর, নরসিংহ রাও, বাজপেয়ীর আমলের পর এখন চলছে ড. মনমোহন সিংয়ের আমল। তিনবিঘা করিডোর দিয়ে বাংলাদেশীদের চলাচলের অধিকার পেতে এতগুলো আমল পর্যন্ত যে অপেক্ষা করতে হলো তার দায় ভারতের। দিল্লির নীতিনির্ধারকরাই বিষয়টি এতদিন ঝুলিয়ে রেখেছিল। তবু, সব ভালো যার শেষ ভালো—মনে করে দহগ্রামবাসী যখন খুশিতে বিএসএফকে জিলাপি খাওয়াচ্ছিল তখন খবর এসেছে, ভারত কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতাকে ঘিরে ফেলবে।

ভারত তার সীমানায় জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজ পিছিয়ে কাঁটাতারের বেড়া অথবা যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের অধিকার রাখে। কিন্তু দুই বন্ধু প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এ ধরনের নজির নেই বললেই চলে। তিনবিঘা করিডোর সর্বক্ষণ উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, দিল্লি সব সময় বাংলাদেশকে কোনো না কোনো চাপের মুখে রাখতে চায়। এ ধরনের উদ্যোগ যে বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ়তর করার সহায়ক নয়, বরং এতে সে সন্দেহ আর অবিশ্বাস বাড়বে এটা খুবই সহজবোধ্য। এভাবে ভারত একের পর এক খোঁচাখুঁচি করে যাবে, আর হককথা বললে ‘ভারতবিদ্বেষী’ বলে গাল খেতে হবে, এমন তামাশার অবসান হওয়া দরকার।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।