আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান বর্নাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত----

তোমার ভয় নেই মা, আমরা প্রতিবাদ করতে জানি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান বর্নাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মেহের আলী মিঞা ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী ও তৎকালীন ময়মনসিংহ লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা বোর্ডের সদস্য। জনাব জিল্লুর রহমান ময়মনসিংহ জেলা শহরে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে ভৈরব কেবি হাই স্কুল থেকে তিনি মেট্রিক, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই. এ. এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এম. এ. ও এল. এল. বি. ডিগ্রী লাভ করেন। জনাব জিল্লুর রহমান ময়মনসিংহ জেলা শহরে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেন।

১৯৪৫ সালে ভৈরব কেবি হাই স্কুল থেকে তিনি মেট্রিক, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই. এ. এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এম. এ. ও এল. এল. বি. ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক আমতলায় ১৯৫২ সালের ১৯শে ফেরুয়ারি ঐতিহাসিক ছাত্র সমাবেশে জনাব জিল্লুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। সেখানেই ২১শে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ২০শে ফেরুয়ারিতে ফজলুল হক ও ঢাকা হলের মধ্যবর্তী পুকুর পাড়ে যে ১১ জন ছাত্রনেতার নেতৃত্বে ২১শে ফেরুয়ারির ১৪৪ ধারা ভংগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, জনাব জিল্লুর রহমান ছিলেন তাদের অন্যতম।

১৯৫৩ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়য়ভাবে অংশগ্রহণ করার অপরাধে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হন এবং তাঁর মাস্টার্স ডিগ্রী কেড়ে নেয়া হয়। কিন্তু প্রবল ছাত্র আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর মাস্টার্স ডিগ্রী ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন।

ষাটের দশকে তিনি ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজের ছাত্র থাকাকালীন সিলেটে গণভোটের কাজ করার সময় তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সানিড়বধ্যে আসেন। ১৯৬২ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান সহ প্রতিটি গণআন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।

তিনি মুজিবনগর সরকার কর্তৃক পরিচালিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিচালনা এবং জয় বাংলা পত্রিকার প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সে সময় তৎকালীন দখলদার পাকিস্তান সরকার তাঁর সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে ২০ বছর কারাদন্ড প্রদান ও সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ গণপরিষদ সদস্য হিসেবে সংবিধান প্রণয়নে অংশ নেন। ১৯৭৩ ও ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে ৭ম জাতীয় সংসদে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পলী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

পাশাপাশি তিনি মহান জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি আই ন জারির পর ওই বছরের ১৬ই জুলাই রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে তাঁর অবর্তমানে জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে দল পরিচালনা করেন। দীর্ঘ ১১ মাস শেখ হাসিনার জেলজীবন এবং চিকিৎসার জন্য আরও প্রায় ৬ মাস দেশের বাইরে অবস্থানকালে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অবিস্মরণীয় বিজয় লাভ করে।

এই নির্বাচনে তিনি ৬ষ্ঠ বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ১২ ফেরুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত তিনি নবম জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে তিনি পুনরায় দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠিত হলে তিনি এর প্রম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর তার জীবনের একটানা প্রায় চার বছর কারা অন্তরালে কাটে।

১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে সংসদ সদস্য থাকাকালে জনাব মোঃ জিলুর রহমান আবারও কারাবরণ করেন। ১৯৯২ এবং ১৯৯৭ সালে দলীয় কাউন্সিলে জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান পর পর দু’বার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। জনাব মোঃ জিল্লুর রহমানের সহধর্মীনি বিশিষ্ট নারীনেত্রী বেগম আইভী রহমান বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ছিলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আহুত জনসভা চলাকালে ষড়যন্ত্রকারীদের নারকীয় গ্রেনেড হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে দু’দিন পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার সাবেক চেয়ারপারসন আইভি রহমান গ্রেনেড হামলায় মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। পারিবারিক জীবনে জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান এক পুত্র এবং দুই কন্যার জনক। ১২ ফেরুয়ারি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে জনাব মোঃ জিল্লুর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.