আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রমজান গুনাহ মাফের সরল পথ

তালহা বিন জসিম : রমজান মাসে রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ। ইসলামী আইনের নির্দিষ্ট নিয়মের আওতাধীন ছাড়া সকল মুসলমানকে রোজা রাখতে হবে । কোনভাবেই পরিত্যাগ করা যাবে না। রমজান মাসের রোজা হিজরি দ্বিতীয় সালে ফরজ করা হয়। সুরা বাকারার ১৮৩ আয়াতে আল্লাহ রোজা ফরজ করে বলেন “ হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর”।

সূরা বাকারার ১৮৫ আয়াতেও বলেন “রমজান মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থ্যক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে”। পবিত্র রমজান মাস বছরের অপর মাস অপো এমন কিছু গুণাবলীর অধিকারী যে কারণে অন্যান্য মাস অপো এ মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অধিক। এ মাসে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন বান্দাদেরকে মা প্রার্থনার জন্য বিশেষ ছাড় দিয়েছেন।

যেটার সদ্ব্যাবহার করে মানুষ তার পূর্বেকার গুনাহ সমূহকে মা করিয়ে নিতে পারে। এ মাসে অধিক কোরআন তেলাওয়াত, অধিক ইবাদত ও আল্লাহর অধিক স্মরন করার মাধ্যমে একজন বান্দা তার প্রভুর নিকটবর্তী হতে পারে। সহিহ বোখারির ১৮৯৬ ও মুসলিমের ১১৫২নং হাদীসে আছে সাহাল বিন সায়াদ হতে বর্ণিত, রাসূল (স বলেন, নিশ্চয় জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি দরজা আছে । কিয়ামত দিবসে এ দরজা দিয়ে কেবল রোজাদাররাই প্রবেশ করবে। অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।

বলা হবে, রোজাদাররা কোথায়? তখন তারা দাড়াবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা প্রবেশ করার পর দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না । আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, রমজান আসলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় আর শয়তানদের বন্দি করে নেওয়া হয়। (বোখারী ১৮৯৮ ও মুসলিম ১০৭৯)। রমজান রহমত ও বরকতের মাস, গুনাহ মাফের মাস।

জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাস। বোখারির ১৮৯৪ ও মুসলিম ১১৫১ নং হাদীসে আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স বলেন, “আদম সন্তানের প্রতিটি আমলের বিনিময় দশগুণ থেকে সাতশতগুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। আল্লাহ বলন, কিন্তু রোজা তার ব্যতিক্রম, কারণ সেটি কেবলমাত্র আমার জন্যই রাখা হয় আর তার বিনিময় শুধু আমিই দিব। সে আমার কারণেই তার প্রবৃত্তিগত চাহিদা ও পানাহার ত্যাগ করে থাকে।

রোজাদারের জন্য দুইটি খুশি, একটি খুশি হলো ইফতারের সময়, আর অপর খুশি হলো আল্লাহর সাথে সাাতের সময়। রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট মিসকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম”। আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা: হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স বলেছেন, রোজাদারের চুপ থাকা তাসবিহ স্বরূপ, তার ঘুম ইবাদত, তার দোয়া গ্রহণযোগ্য আর তার কাজের সাওয়াব অধিক হারে বৃদ্ধি করে দেয়া হবে। (আবু দাউদ, বাইহাকী )। হজরত আবু হোরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলে করীম সাঃ রমজান শরীফে তারাবির প্রতি উৎসাহ প্রদান করতেন।

তিনি এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজান রজনীতে ঈমানসহ ও পুণ্যের আশায় তারাবির নামাজ আদায় করবে তার পূর্ববর্তী পাপগুলো মা করে দেয়া হবে। (মুসলিম শরিফ)। হজরত আবু হোরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, মহানবী সাঃ বলেছেন, প্রত্যেক জিনিসের জাকাত রয়েছে, আর শরীরের জাকাত হলো রোজা। (ইবনে মাজাহ) বিশ্বনবী সাঃ এরশাদ করেছেন, কেউ যখন রমজানের প্রথম রোজাটি করে ফেলে তখন আল্লাহ পাক তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে ৭০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে দেন। (বুখারি শরিফ)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।