তাশফী মাহমুদ ক্লোজ-আপ তারকা, তরম্নণ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী আবিদ শাহরিয়ার বাপির অকাল মৃতু্যর পর তাঁর কর্মরত প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের ভূমিকায় হতাশ ও ৰুব্ধ আবিদের শোকাহত পরিবার।
আবিদের বাবা এ্যাডভোকেট মিনা মিজানুর রহমান ও মা অধ্যাপক রমা রহমান তাঁদের পরিবারের পৰ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, 'আবিদের মৃতু্যর পর আমরা স্বনামধন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থা 'মাত্রা'র ভূমিকায় হতাশ হয়েছি। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এ রকম দায়িত্বহীন আচরণ প্রত্যাশা করিনি। প্রতিষ্ঠানটির পৰ থেকে আজ পর্যনত্ম কেউ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সানত্ম্বনামূলক কোন কথা বলেনি। ঢাকায় প্রতিষ্ঠানের পৰ থেকে আবিদের মৃতদেহটি তড়িঘড়ি স্বজনদের কাছে হসত্মানত্মর করা হয়।
তাদের কেউ খুলনায় আসার প্রয়োজন বোধ করেনি। '
আবিদের বাবা-মা বলেন, 'মাত্রা'র ৩৫/৪০ জনের টিমের ওয়ার্কশপ ছিল। ওয়ার্কশপ সাধারণত সিডিউল অনুয়ায়ী হয় এবং এ ধরনের টিমে চিকিৎসক, নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা, গাইডেন্স থাকে। এসব উপেৰা করে কিভাবে ছেলেরা সাগরসৈকতের বিপজ্জনক পয়েন্টে নেমে গেল। চারজনের মধ্যে বেঁচে থাকা তরম্নণকে কেন সেই ভয়াবহতার কথা মিডিয়ায় বলতে দেয়া হচ্ছে না।
ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের পৰ থেকে আবিদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হলেও প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ কাউকে দেখা যায়নি।
বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘মাত্রা’ কর্তৃপক্ষের কর্তব্যে অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সঙ্গীত শিল্পী আবিদ শাহরিয়ার বাপীর মৃত্যু ঘটেছে। এ অভিযোগে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষ থেকে মাত্রার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনপ্রিয় অভিনেতা ও বিজ্ঞাপন ব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আবিদের পিতা অ্যাড. মিনা মিজানুর রহমানের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, খুলনা জেলা ও মহানগর শাখা, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সোমবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত এক সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া ওই সভায় সংস্থার খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাড. আব্দুল মালেকের তত্ত্বাবধানে সংস্থার পিসিআরইএসজে প্রকল্প, খুলনার কো-অর্ডিনেটর অ্যাড. মোমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়।
জানা গেছে, তদন্ত দল এরই মধ্যে আবিদের বাবা অ্যাড. মিনা মিজানুর রহমান ও মাতা অধ্যাপিকা রমা রহমানের সঙ্গে দেখা করে তাদের বক্তব্য শুনেছেন।
তদন্ত দলের অনুরোধে সংস্থার কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হোসাইন আহমদ আনছারীর নেতৃত্বে সংস্থার কক্সবাজার জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে তদন্ত দলকে ঘটনার বিষয়ে অবহিত করেন।
খুলনা খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনের ওই সভায় বলা হয়- আবিদসহ তিনজনের নির্মম মৃত্যু হয়েছে তাদেরকে কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠান ‘মাত্রা’ কর্তৃপক্ষের কর্তব্যে অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে। সভায় কর্তব্যে অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার জন্য মাত্রা’র বিরুদ্ধে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়- একই ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া আবিদের বন্ধুকে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি।
এছাড়া মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার ঢাকা ইউনিট বেঁচে যাওয়া যুবকের সন্ধান করেও তাকে খুঁজে পায়নি।
এমনকি মাত্রা কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার বিষয়ে কোনও সহযোগিতাও করছে না।
তাছাড়া মাত্রা’র মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিনেতা আফজাল হোসেনসহ কক্সবাজারে বিজ্ঞাপন চিত্র তৈরির কাজে যাওয়া টিমের অন্যান্য সদস্যরা সংস্থার ঢাকা ইউনিটের তদন্ত দলের কাছে অজ্ঞাত কারণে তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
সভায় আরো বলা হয় আবিদের মৃত্যুর পর সমগ্র দেশবাসী শোকে বিহ্বল হয়ে শোক প্রকাশ ও সম্মাননা জানালেও রহস্যজনক ভাবে মাত্রা মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিনেতা আফজাল হোসেনসহ কোনও কর্মকর্তা/কর্মচারী আবিদের মরদেহ দেখতে আসেননি, সম্মাননা জানাননি বা আবিদের পিতা-মাতাকে কোনও সান্ত্বনা প্রদানও করেননি। এমনকি আবিদের ব্যাবহৃত দু’টি মোবাইল ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি কোথায় কি অবস্থায় আছে তাও জানাবার প্রয়োজন মনে করেননি তারা।
সভায় মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস।
থার কর্মকর্তারা বলেন, এ ধরনের কর্তব্যে অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার ফলে মৃত্যুর ঘটনা সুস্পষ্টভাবে মানবাধিকার লংঘন। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা নিহত আবিদের পিতা অ্যাড. মিনা মিজানুর রহমানকে বাদী করে মামলা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
তারা জানান, অচিরেই এ মামলা দায়ের করা হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অ্যাড. শাহ আলম, অ্যাড. খন্দকার মুজিবর রহমান, অ্যাড. তছলিমা খাতুন ছন্দা, অ্যাড. জিল্লুর রহমান খান, অ্যাড. মোমিনুল ইসলাম, অ্যাড. স ম বাবর আলী, অ্যাড. ইমাম হোসেন, ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন, আবিদের পিতা অ্যাড. মিনা মিজানুর রহমান, ডা. মাহমুদ হাসান লেনিন, ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত: ক্লোজআপ ওয়ান তারকা খুলনার সন্তান আবিদ শাহরিয়ার গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে খেলায় রত অবস্থায় দুই বন্ধুসহ সমুদ্রের জোয়ারে ভেসে যান।
পরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
সূত্র-বাংলানিউজ ডট কম ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।