আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেলাল হাফিজ এর ভাল লাগা কিছু কবিতা

যাতায়াত কেউ জানে না আমার কেন এমন হলো। কেন আমার দিন কাটে না রাত কাটে না রাত কাটে তো ভোর দেখি না কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকে না কেউ জানেনা। নষ্ট রাখীর কষ্ট নিয়ে অতোটা পথ একলা এলাম পেছন থেকে কেউ বলেনি করুণ পথিক দুপুর রোদে গাছের নিচে একটু বসে জিরিয়ে নিও, কেই বলেনি ভালো থেকো সুখেই থেকো যুগল চোখে জলের ভাষায় আসার সময় কেউ বলেনি মাথার কসম আবার এসো জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক, চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি বললো না কেউ তরুন তাপস এই নে চারু শীতল কলস। লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম। ক্যাঙ্গারু তার শাবক নিয়ে যেমন করে বিপদ পেরোয় আমিও ঠিক তেমনি করে সভ্যতা আর শুভ্রতাকে বুকে নিয়েই দুঃসময়ে এতোটা পথ একলা এলাম শুশ্রূষাহীন।

কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি। ইচ্ছে ছিলো ইচ্ছে ছিলো তোমাকে সম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো ইচ্ছে ছিলো তোমাকেই সুখের পতাকা করে শান্তির কপোত করে হৃদয়ে উড়াবো। ইচ্ছে ছিলো সুনিপূণ মেকআপ-ম্যানের মতো সূর্যালোকে কেবল সাজাবো তিমিরের সারাবেলা পৌরুষের প্রেম দিয়ে তোমাকে বাজাবো, আহা তুমুল বাজাবো। ইচ্ছে ছিলো নদীর বক্ষ থেকে জলে জলে শব্দ তুলে রাখবো তোমার লাজুক চঞ্চুতে, জন্মাবধি আমার শীতল চোখ তাপ নেবে তোমার দু’চোখে। ইচ্ছে ছিল রাজা হবো তোমাকে সাম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো, আজ দেখি রাজ্য আছে রাজা আছে ইচ্ছে আছে, শুধু তুমি অন্য ঘরে।

তুমি ডাক দিলে একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতোটা কাঙাল, কতো হুলুস্থূল অনটন আজম্ন ভেতরে আমার। তুমি ডাক দিলে নষ্ঠ কষ্ঠ সব নিমিষেই ঝেড়ে মুছে শব্দের অধিক দ্রুত গতিতে পৌছুবো পরিণত প্রণয়ের উৎসমূল ছোঁব পথে এতোটুকু দেরিও করবো না। তুমি ডাক দিলে সীমাহীন খাঁ খাঁ নিয়ে মরোদ্যান হবো, তুমি রাজি হলে যুগল আহলাদে এক মনোরম আশ্রম বানাবো। একবার আমন্রণ পেলে সব কিছু ফেলে তোমার উদ্দেশে দেবো উজাড় উড়াল, অভয়ারণ্য হবে কথা দিলে লোকালয়ে থাকবো না আর আমরণ পাখি হয়ে যাবো, -খাবো মৌনতা তোমার তোমাকেই চাই আমি এখন অন্য মানুষ ভিন্ন ভাবে কথা বলি কথার ভেতর অকথিত অনেক কথা জড়িয়ে ফেলি এবং চলি পথ বেপথে যখন তখন। আমি এখন ভিন্ন মানুষ অন্যভাবে কথা বলি কথার ভেতর অনেক কথা লুকিয়ে ফেলি, কথার সাথে আমার এখন তুমুল খেলা উপযুক্ত সংযোজনে জীর্ণ-শীর্ণ শব্দমালা ব্যঞ্জনা পায় আমার হাতে অবলীলায়, ঠিক জানি না পারস্পরিক খেলাধূলায় কখন কে যে কাকে খেলায়।

অপুষ্টিতে নষ্ট প্রাচীন প্রেমের কথা যত্রতত্র কীর্তন আমার মাঝে মধ্যে প্রণয় বিহীন সভ্যতাকে কচি প্রেমের পত্র লিখি যেমন লেখে বয়ঃসন্ধি-কালের মানুষ নিশীথ জেগে। আমি এখন অন্য মানুষ ভিন্নভাবে চোখ তুলে চাই খুব আলাদা ভাবে তাকাই জন্মাবধি জলের যুগল কলস দেখাই, ভেতরে এক তৃতীয় চোখ রঞ্জনালোয় কর্মরত সব কিছু সে সঠিকভাবে সবটা দেখে এবং দারুণ প্রণয় কাতর। আমি এখন আমার ভেতর অন্য মানুষ গঠন করে সংগঠিত, বীর্যবান এক ভিন্ন গোলাপ এখন কসম খুব প্রয়োজন। আমার সকল আয়োজন আমাকে দুঃখের শ্লোক কে শোনাবে? কে দেখাবে আমাকে দুঃখের চিহ্ন কী এমন, দুঃখ তো আমার সেই জন্ম থেকে জীবনের একমাত্র মৌলিক কাহিনী। আমার শৈশব বলে কিছু নেই আমার কৈশোর বলে কিছু নেই, আছে শুধু বিষাদের গহীন বিস্তার।

দুঃখ তো আমার হাত–হাতের আঙুন–আঙুলের নখ দুঃখের নিখুঁত চিত্র এ কবির আপাদমস্তক। আমার দুঃখ আছে কিন্তু আমি দুখী নই, দুঃখ তো সুখের মতো নীচ নয়, যে আমাকে দুঃখ দেবে। আমার একেকটি দুঃখ একেকটি দেশলাই কাঠির মতন, অবয়ব সাজিয়েছে ভয়ঙ্কর সুন্দরের কালো কালো অগ্নিতিলকে, পাঁজরের নাম করে ওসব সংগোপনে সাজিয়ে রেখেছি আমি সেফ্টি-ম্যাচের মতো বুকে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।