আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর্টসেল এর লিরিক সমূহ (পর্ব- ২)

হারিয়ে যাই অকস্মাৎ.. https://facebook.com/tanim.misbahul ১ম পর্বে মিক্সড অ্যালবামে প্রকাশিত আর্টসেল এর ৮টি গানের লিরিক দেয়া হয়েছিল। এখন ২০০২ সালে রিলিজড হওয়া "অন্যসময়" অ্যালবামের সবগুলো (১০টি) গানের লিরিক দেয়া হল। ১) অন্যসময় (লেখকঃ রুম্মান আহমেদ) আর্তনাদে হিঁচড়ে পড়ছে বেদনা; হৃদয়ের কলুষতার বিষাক্ততা দুষিত করেছে আমায়, সমাজের নিত্য চাপে গ্রাস করেছে আমাকে, গ্রহন লেগেছে সত্তায়। দাসত্বের দাস হয়ে ফিরছি বিবাগী পথিকের বেশে বারে বারে একই ঠিকানায়। মানুষ এগিয়ে যায় অন্যসময়ে; আকাশ বদলে যায় অন্য আকাশে।

দেহের বায়ু ক্রমশ ফুরিয়ে, জীবনের চাহিদা কিছু বাকি রয়ে যায়। হৃদয়ের পাখি এখনও বন্দী খাঁচায়, জীবনের সীমানা দূরে দেখা যায়; মুক্তির সিঁড়ি পেরিয়ে কে বা কার দেখা পায়। দাসত্বের দাস হয়ে ফিরছি বিবাগী পথিকের বেশে বারে বারে একই ঠিকানায়। --------------------------------------------------- ২) ভুল জন্ম (লেখকঃ তরিকুল ইসলাম রূপক) আমি জন্মাতে দেখেছি জীবনের সব ভুলগুলো; জীবন ভুল নাও হতে পারে, হয়তো সময় ভুল ছিল। সময়ের ভুলে জীবনমঞ্চে অভিনয় করছি আমি, নষ্ট হচ্ছে স্বকীয়তা, ক্রমশঃ নষ্ট হচ্ছি আমি।

তবুও চিৎকার যখন অর্থহীন আর্তনাদ, প্রতিবাদ কোন দুর্বোধ্য ভাষা, সবাই যখন আদিম উল্লাসে মত্ত, ভুল জন্ম তোমাকে জানাই বিদায়। স্বপ্নমঞ্চে মেলানো যায় না জীবন, অলীক স্বপ্নে বদলায়না বাস্তবতা। সময় বদলায়, বদলায় এ জীবন; ধীরে ফিকে হয়ে যায় আমার এ অস্তিত্ব। ভুলের বেসাতি শেষ হয়ে যাক এবার, কষ্টে ডুবে থাকা নয়, নয় আর হাহাকার; আমার দ্বৈতসত্ত্বা করছে আজ অস্বীকার, সময় তাকিয়ে দেখ পরিবর্তন বাস্তবতার। চোখের কোণে লেগে থাকা স্মৃতি, ঘুমের মতন তীব্র ভালোবাসা, আলিঙ্গনে নিমগ্ন শূন্যতা, ভুলজন্মে আমার অসাড়তা।

----------------------------------------------- ৩) পথচলা (লেখকঃ তরিকুল ইসলাম রূপক; # হতে রুম্মান আহমেদ) আমার পথচলা আমার পথে যেন বেলা শেষে আকাশ কার মোহে; আমার স্বপ্ন আমার সাথে যেন স্বপ্নে ফিরে আসে স্বপ্ন হয়ে, খুঁজে পায় জীবনের তীর, জীবনকে কোনো স্বপ্ন ভেবে। আমি কার আশাতে ছুটে চলি পথে পথে, যেন তার মায়াতে বাঁধা পড়েছে জীবন যে। কত সুখ কল্পনা, কত মিথ্যে প্রলোভন, কষ্টের প্রতিটি ক্ষণ শোনায় তার আহবান আমার আলোয় আলোকিত হতে চেয়ে আঁধারে মিলিয়ে; আমার স্বপ্ন আমার সাথে যেন স্বপ্নে ফিরে আসে স্বপ্ন হয়ে, খুঁজে পায় জীবনের তীর, জীবনকে কোনো স্বপ্ন ভেবে। # আমি আজ নেই তবুও কত সুর ওঠে বেজে তোমার ওই গানের মাঝে; এই পথ গেছে মিশে আমার বেলা শেষে, স্বপ্ন ফিরে আসে পৃথিবীর দূর দেশে জীবনকে কোন এক স্বপ্ন ভেবে.. --------------------------------------------------- ৪) রূপকঃ একটি গান (লেখকঃ রুম্মান আহমেদ) মনের ভেতর যুদ্ধ চলে আমার সারাক্ষণ, নেশার মতন থমকে থাকে ক্লান্ত এ জীবন। ধ্বংস স্মৃতির পারে বসে আমার আহবান, দুঃখ ভুলে নতুন করে লিখছি তোমার এ গান।

মিছিল ভাঙ্গা নির্জনতায় দাড়িয়ে একা আলোর নিচে অন্ধকারে স্মৃতির দেখা। চার দেয়ালের শব্দগুলো এখন শুধুই ছাই; মেঘে ঢাকা শহরটাতে তুই কেবল নাই। মনের ভেতর ভাঙ্গা গড়ার আদিম আয়োজন; শূন্যতায় ডুবে থাকে আমার সারাক্ষণ। নিয়ম ভাঙ্গার মগজ জুড়ে এখন শুধুই ছক, তেপান্তরের নির্বাসনে হারিয়ে গেছে রূপক... মনেই যুদ্ধ আমার নিজের সাথে লড়ি, স্মৃতির দেয়াল ছুঁয়ে হাজার মূর্তি গড়ি। চোখের দেখায় যা দেখি আর হয়নি যা দেখা, অভিমানের নদীর তীরে দাড়িয়ে থাকি একা।

ভুল জন্মে কষ্ট আমার লেখার আপোষে, অদেখা এক স্বর্গ ভাসে অচেনা আকাশে। মনের ভেতর যুদ্ধ এখন আমার সারারাত, অন্ধকারের কোলাহলে ধরেছি তোমারি হাত। একলা ভীষণ আমার ঘরে স্মৃতির হাহাকার, আলোয় চাইছি নিভিয়ে দেব মলিন অন্ধকার। মনের ভেতর যুদ্ধ চলে আমার সারাক্ষণ, মহাকালে মিলিয়ে গেলি হঠাৎ কখন... ---------------------------------------------- ৫) মুখোশ (লেখকঃ রুম্মান আহমেদ) মুখোশে আমায় যেমন দেখ পরিচ্ছন্ন তোমার মত; মুখোশে আমার শরীর ঢাকা, তোমার চোখেও মুখোশ আঁকা। যতই মিথ্যের দেয়াল গড়ি তোমার আমার চারিপাশে, নিজের আয়নায় মুখোশবিহীন পড়ে থাকি গল্প শেষে আমি।

জানালার ভেতরে বাহিরে দুজন দেয়ালের কাছাকাছি যাই; দেয়ালে বাঁধা সস্তা জীবন, নিজের আয়নায় একলা দাঁড়াই। মুখোশে যাকে তুমি চেন, চেন না যাকে মুখোশ বিহীন; আমরা দুজন সত্য পুরুষ, নিজের ভেতর দুজনেই পরাধীন। শূন্যতায় প্রশ্ন থেকে দাঁড়ায় মনের খোলা ঘরে; দেয়ালে, চৌকাঠে, আয়নায় কে সত্য? তুমি না আমি? ------------------------------------------------------------- ৬) রাহুর গ্রাস (লেখকঃ জর্জ লিংকন ডি কস্টা) শূন্যতায় এঁকেছি গভীরতা দৃপ্ত নেশায় উন্মাদ স্বচ্ছতা জানিনা জীবনের সেই সলতে কোথায় ঝড়ো বাতাসেও প্রদীপ জ্বালায় স্বপ্নঘোর এ ধরায় মগ্ন এক বিলাসিতায়.. পাষণ্ড এ জীবনের কোথায় শেকল গাড়া? ব্যর্থ ও শৃঙ্খলিত মনে তারই ছায়া। পাপের দংশনে দংশিত এ রক্ত ধারা; শেষ প্রহরে শ্বাসরুদ্ধ রাহুর ছায়া। স্বপ্নের ছায়ায়, কারও উষ্ণতায় ঝাপসা সুখে অশ্রু ঝরায়।

অস্তমিত ঐ রবির শেষ আলোকছটাও বিলীন। ক্লান্ত এক যুবা উদ্ভ্রান্ত, মৌন-মলিন। দুর্ভোগের উপহাস কিসের শব্দে? কিসের উষ্ণতায় ? ঘনঘোর আঁধার-কোলে ছোটে গন্তব্য শূন্যতায়.. ------------------------------------------------------- ৭) ইতিহাস (সময়+অদৃষ্ট) লেখকঃ রুম্মান আহমেদ (সময়) + সায়েফ আল নাজি সেজান (অদৃষ্ট) (সময়) আজ আমি আলোছায়া, আজ আমি অন্ধকার সময়ের হারানো পথে আজ ভেঙেছে ঘুম চেতনার। পৃথিবীর কোলাহল নির্জনে আপোষের এ বেঁচে থাকা পেছনে ফেলে ইতিহাস যাবে না ভাঙা চার দেয়াল। কুয়াশা ঢাকা স্বপ্ন আমার খুঁজে ফিরি ধুসর সীমানায় বদ্ধ ঘরে আলোছায়ায় থমকে থাকি নির্জনতায়।

হয়নি পাওয়া কিছু আর, শুধুই অন্ধকার আজ আমিই এক শূন্যতা, তবুও চেয়ে রই মুক্তির আশায়, শান্তির আশায়। (অদৃষ্ট) বিধাতারই একটু ইশারায় ভেঙে গেছে স্বপ্ন; অসহায় পথিকের মত খুঁজে ফিরি পথে পথে করুণা। সত্য যা দেখ সবই মিথ্যের মায়াজালে ঘেরা; আমাদের সাথে ছলনা অদৃষ্টের করা। ----------------------------------------- ৮) কৃত্রিম মানুষ (লেখকঃ জর্জ লিংকন ডি কস্টা) কালো মেঘে ঘেরা পৃথিবীতে কৈশোর বয়সে আমি শিখেছি নিজেকে চিনতে অন্যের দৃষ্টিতে। যাযাবর আমি পৃথিবীতে মানুষের রূপ ধরে, আমি দেখেছি মানুষের হাতে গড়তে দেবতারে।

অন্যায় আর অবিচারের কালিমা বুকে নিয়ে আকাশ এখানে মাথা তুলে দাঁড়াতে ভুলে গেছে। সব সকাল রাতেরি মাঝে বিলীন হয় অবশেষে; মানুষ শুধু বেঁচে থাকে অন্য মানুষের মাঝে। বিষাক্ত বাতাস চারদিকে.. আমাকে আঁকড়ে ধরে আছে আমার আত্মবিশ্বাস, বাস্তবতার আঘাতে ভেঙ্গে গেছে স্বপ্নগুলো, রাতের অন্ধকারে চারদিকে এখন শুধু হাহাকার শুনি। আমাকে ছেড়ে গেছে চলে আমার অতীত স্মৃতিগুলো, আমার দেহে আছে পড়ে অপমানের শত চিহ্ন; এখনো আমি আছি বেঁচে যেন কৃত্রিম মানুষ হয়ে, আমার চারিধারে জ্বলছে আগুন আমারি জ্বালানো। -------------------------------------------------------- ৯) অবশ অনুভুতির দেয়াল (লেখকঃ রুম্মান আহমেদ) তোমার জন্য পৃথিবী আজ নিয়েছে বিদায়, তবুও তোমার টুকরো ছায়ায় ডুবে আছে কত মিথ্যে আগুন, অন্ধকারময় কত স্মৃতি, কত সময়.. তোমার জন্য পৃথিবীতে আজকে ছুটির রোদ, নিজের মাঝে তোমায় খোঁজা, আকাশ নীলে তাকিয়ে থাকা.. তোমার জন্য পৃথিবী আজ নিয়েছে বিদায় মেঘাচ্ছন্ন ব্যাস্ত ঢাকায়, মানুষগুলো শূন্য চোখে দুঃখ দ্বিধায় আকাশ পানে তাকায়।

তোমার জন্য পৃথিবীতে থেমে যায় সময়, আমার দেহে রাত্রি নামায় মিথ্যে আগুন, অন্ধকারময়.. ভিড়ের মাঝে আবার ভীড়ে আমার শরীর মেশে কোলাহলে, দুঃখ ভুলে মিশে যাই মুখোশ স্রোতে.. অনেক দূরের একলা পথে ক্লান্ত আমি ফিরি তোমার কাছে, মুখোশ খুলে বসে রই জানলা ধরে.. আমার গানের শব্দ সুরের অন্তরালে তোমায় আঁকি কান্না চেপে মহাকালের ক্লান্ত পথে.. তোমার জন্য বৃষ্টি ঝরে আমার লেখায়, আলোর মত মিথ্যে ছায়ায় পাথর হয়ে ঘুরে মরে আমার হৃদয়, কত স্মৃতি, কত মিথ্যে ভয়। তোমার জন্য গলার ভেতর আতকে থাকে ক্রোধ; আমার চোখে স্মৃতির ঘোলা জল, নির্জনতায় তোমার কোলাহল। তোমার না থাকা অস্তিত্ব রয়ে গেছে আমার নিঃশ্বাসে, ফেলে আসা এই পথে দুজনেই একসাথে.. আমার অবশ অনুভুতির দেয়াল জুড়ে কত সময় হেঁটে এসে আমরা দু'জন হারিয়েছে পথ কোথায় কখন.. আমার দেহে খুঁজে ফিরি তোমার অনুভূতি; তোমার চোখের দূরের আকাশ মিশে থাকে রূপক হয়ে.. তোমার জন্য বিষণ্ণ এক নিথর হৃদয় আমার ভেতর দাঁড়ায় সরব একা; তোমার পৃথিবী স্বর্গের মত চির অদেখা.. তোমার জন্য পথ হারিয়ে অজানায়, তবুও তোমার লেখায় কথায় ফেরে ক্লান্ত আমার অলস সময়, কত স্মৃতি, কত অন্ধকার ভয়.. -------------------------------------------- ১০) অলস সময়ের পাড়ে (লেখকঃ রুম্মান আহমেদ) অলস সময়ের পাড় ধরে হাঁটছি; ঢেউ এসে পড়ে পৃথিবীর শব্দ ও নীরবতায়, ভাঙে অন্ধকার, আলো ছায়ায় মাখামাখি পৃথিবী.. স্বপ্নের পাড়ে একা একা হাঁটছি.. আলোর কার্নিশে জমে দিন, রাতের নিশাচর নিঃশ্বাসে মেশে মদ; আজও মাতাল আমি, পথভ্রষ্ট কবি। পৃথিবীর কোলাহলে একা একা হাঁটছি.. অসাড় কথার শেষে আরও কথা থাকে শব্দহীন অনুচ্চারে; ঝড়ের হাওয়ায় ভেঙে যায় অন্তমিল, দু'জনার মিথ্যে আবেগে পড়ে থাকে মৃত নদী.. জীবনের পাড় ধরে আজও একা হাঁটছি.. অলস সময়ের সৈকতে ঢেউ এসে পড়ে স্বপ্ন জুড়ে, ভেঙে দেয় ছায়ার মত তুমি; রোদের আকাশে ভেঙে যায় মেঘের স্বপ্নপুরী.. পৃথিবীর কোলাহলে তুমি আমি হাঁটছি.. স্বপ্নের পাড়ে একা একা হাঁটছি.. পৃথিবীর কোলাহলে একা একা হাঁটছি.. জীবনের পাড় ধরে আজও একা হাঁটছি.. পৃথিবীর কোলাহলে তুমি আমি হাঁটছি.. ---------------------------------------------- ৩য় পর্ব ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।