আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিনীতাকে ফিরে পেয়ে অথবা সংখ্যালঘুর দেশত্যাগ

তখনো ঠিকঠাক অভ্যস্ত হতে পারিনি ফেসবুকে। তাতে কি, অনভ্যস্ত এই আমিই তো, পুরো ২২ বছর পর একজন বন্ধুকে খুঁজে পেলাম ফেসবুকের কল্যাণে। নবনীতা মানে আমাদের বিনীতারা যেদিন দিনাজপুর থেকে চলে গেল তার পরের দিনই আমি ওকে খুঁজতে ওদের বাসায় গিয়ে ভীষণ মর্মাহত হই। কি একটা পরীক্ষার খাতা দেখিয়েছিল সেদিন এখন আর মনে নেই, কিন্তু বিনীতা ৬৭ পেয়েছিল ওই পরীক্ষায়, তা এখনো ভুলিনি। এ খবরটা জানাতেই ওদের বাসায় গিয়ে জানলাম ওরা চলে গেছে।

পানের দোকানের লোকটার কাছে জানতে চাইলাম, সে বললো ওরা নাই, কিন্তু কোথায় কিচ্ছুই জানা নাই তার। ছোট মানুষ ছিলাম আমরা, হয়তো বিনীতাকে জানানোই হয়নি ওরা দেশ ছেড়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের জানিয়ে যেতে পারেনি। অথবা জানানো হয়েছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা ছিলো কাউকে কিছু জানানো যাবে না।

তারপর দিনে দিনে জানলাম বিনীতারা আর ফিরে আসবে না। একটু বড়ো হওয়ার পর শুনলাম বিনীতারা কলকাতায় আছে। ওদের দুর্দশার কত উড়ো খবরই না পেতাম। ভীষণ কান্না পেত ওই সব গুজবে। সুবর্ণা, অনামিকা, রিংকু আর আমি প্রায়ই গল্পচ্ছলে বিনীতাকে গাল দিতাম।

আমি মনে মনে ভাবতাম, আর কাউকে না হোক আমাকে তো বিনীতা বলে যেতে পারত? কে জানে মনে মনে সুবর্ণা, অনামিকা ও রিংকুও তাই ভাবত। পরে বিনীতার সঙ্গে ফোনে কথা হলো, হাজার কথার ভিড়ে দেশ ছেড়ে যাবার আগে অন্তত আমাকে জানিয়ে যায়নি কেন, এই প্রশ্নটা আর ওকে করা হয়নি, অথচ এ প্রশ্নটা দুই দশকের বেশি সময় ধরে আমাকে পুড়িয়েছে বহুবার। আসলে প্রশ্নটা কঠিন, কিন্তু উত্তরটা তো সহজ- আমরা সবাই জানি এভাবেই আরো অনেক সংখ্যালঘু দেশ ছেড়ে গেছে, যাচ্ছে.. যাবে.। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.