৮ মার্চ, ২০১৩:
# 'আন্তর্জাতিক নারী দিবস' নিয়ে শুভেচ্ছা বানী ঝাড়ার আগে আমার একটা 'আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস' চাই। একপাক্ষিক দিবসটাও একটা জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশন। এবং এ স্রেফ সূক্ষ ভন্ডামি বৈ কিছু না।
# ১। গত ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ চলার সময় হার্সা ভোগলে কে কিছু কথা বলতে শুনেছিলাম।
কথা গুলো মোটামুটি এরকম, টেস্ট জিততে হলে দলে ন্যূনতম একটা বোলার থাকতে হবে যার যেকোনো সময়, যেকোনো কন্ডিশনে একটা স্পেলে ব্রেক থ্রু দিতে পারবে অধিনায়ককে। এবং অন্তত দু'টো বোলার থাকতে হবে যারা উইকেট নেওয়ার সাথে রানটাও আটকাতে পারে। ৫ টা ভালো ব্যাটসম্যান থেকে বর্তমানে ৩/৪ টা উইকেট টেকিং বোলার টেস্ট জেতায় বেশি ভূমিকা রাখে। দূর্ভাগ্য, সোহাগ গাজী ছাড়া এই দলটার আর কেউ হার্সা ভোগলের রেসিপিতে পড়ে বলে মনে হয় না।
২।
শাহাদাত স্রেফ জঘন্য। মাশরাফি সারা জীবনে যতগুলো বল লেগ সাইডের বাইরে করেছে শাহাদাত আজ একদিনেই এর থেকে বেশি বল লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে করেছে। পুরো ম্যাচে অফ স্ট্যাম্পের ঠিক পাশ দিয়ে কোমর ঘেসা ৫/৬ টা বল করতে পেরেছে কিনা সন্দেহ। সকালের সুইং ব্যবহার করতে একদিন ব্যর্থ হতেই পারে, কিন্তু যে সুইং আর ময়েশ্চার ব্যবহার করার কৌশলই জানে না তাকে দলে রাখাটা অপাঙতেয় মনে করি। জাতীয় দলের স্টাইক বোলার হয়ে সকালের ১৩৫ প্লাস গতি বিকেলে ১২০ প্লাসে এসে ঠেকলে চলে? চিৎকার করেই তো অর্ধেক এনার্জি হারায় ও।
পরিবর্তন জরুরী।
৩। মহেলা জয়বর্ধনের ক্যাপ্টেন্সি আমার খুব পছন্দের। যখন ওভার প্রতি সাত-আট করেও রান ওঠায় প্রতিপক্ষ তখনও নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিজে আসলে ও স্লিপ নিয়ে আসে। দলের সেরা বোলারকে বোলিং এ আনে।
৩০ গজের মধ্যে ৫-৬ টা প্লেয়ার এনে চাপে রাখে ব্যাটসম্যানকে। সহজে এন্ড পরিবর্তন করতে দেয় না। মুশফিককেও যথেস্ট আক্রমনাত্মক এবং বিচক্ষণ ক্যাপ্টেন হিসেবেই জানি। তবে আজ একটা সময়ের পরে ফিল্ডিং আলগা করে দিয়ে কেন এত উদার হয়ে সিঙ্গেল নেয়ার পথ করে দিলো তা বুঝলাম না। ওই ভালো জানবে।
৪। টার্ণ বেশি না থাকলেও পিচ খুব ফ্ল্যাট বলে মনে হলো না। কুলাসেকারা এবং এরাঙ্গা আসলেই বোঝা যাবে। বোলাররা এই ইনিংসে আর খুব বেশি কিছু করবে, এই আশা করি না। যা করার ব্যাটসম্যানদেরই করতে হবে।
৫। সাকিব-তামিম-নাফিসের ক্যালিবার, এক্সপেরিয়েন্স মিস হবেই। কিন্তু কেন জানি ইলিয়াস সানিকে দেখে এনামুলের টার্ণ আর ফ্ল্যাইটও খুব মিস করছি।
৯ মার্চ, ২০১৩:
# কবীর সুমনের 'গণদাবী' না, শাহবাগের আন্দোলন নিয়ে প্রথম গানটা ছিলো প্রীতম আহমেদের 'একাত্তরের হাতিয়ার'। আজ বের হচ্ছে শাহবাগের গণজাগরণ নিয়ে প্রথম অডিও অ্যালবাম, প্রীতম আহমেদেরই 'শাহবাগ কলিং- আবার একাত্তর'।
এই অ্যালবামের আয়কৃত অর্থের একটা বড় অংশ এই গণ আন্দোলনে শহীদ পরিবারগুলোকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রীতম আহমেদ। গণজাগরণের স্বপক্ষের সবাই চাইলে একটা অ্যালবাম কিনতে পারেন। পরিবার, বন্ধু বা প্রেমিকাকে দিতেও পারেন। আবার অন্য ধাতুতে গড়া মানুষ হলে বা ব্রেইনে নিউরণের বদলে কাঁঠাল পাতার উচ্ছিষ্ট থাকলে এতকিছু জানার পরেও অবৈধ ডাউনলোড করেও শুনতে পারেন। সবই আপনার মর্জি।
# ১। সম্ভবত: ৫ টা ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। এই ধরণের পিচে ক্যাচ মিসে বড় মূল্য গুনতে হয়। বাংলাদেশ চড়া মূল্য গুনছেও। মাহামুদউল্লাহ ক্যাচটা এমন স্টাইলে ফেলেছে যে ধারাভাষ্যকার বলে বসলেন, 'হি সিমস টু বি ঠু টায়ার্ড বিফোর ফাইভ সেশন কমপ্লিটেড'।
দেড় দিনের আগেই এভাবে গা ছাড়া ফিল্ডিং পরিষ্কার বোঝায় দলটা টেস্ট খেলার মত ফিজিক্যালি ফিট না।
২। শ্রীলংকার ৪ টা উইকেট দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায় পিচে খুব বেশি কিছু নাই। কুলাসেকারা হ্যান্ড মুভমেন্টে যে সুইংটা ন্যাচারালি পায় ওটুকুই পেয়েছে। স্পিনও ধরছে না।
মেন্ডিস-হেরাথ-দিলশান তেমন টার্ণ পায়নি আজ। সুতরাং নিজে সেধে উইকেট দিয়ে না আসলে উইকেট পড়ার কথা না। আনপ্লেয়বল ডেলিভারি হচ্ছে না একটাও।
৩। জহুরুল আর মমিনুলের মাঝে বড়ই তাড়াহুড়া।
জহুরুল ম্যাক্সিমাম বল চেজ করতে যায়। এনামুলের অ্যাটিচিউড মোটামুটি টেস্টের মতই লেগেছে যতক্ষণ উইকেটে ছিলো। পা না নিয়ে জায়গায় দাঁড়িয়ে একটা বাজে শট করতে গিয়ে আউট হয়ে গেছে।
৪। আশরাফুল নিচ্ছিদ্র একটা ইনিংস খেলেছে।
ম্যাচিউর ইনিংস। আশরাফুলকে নিয়ে একটা কথা খুব প্রচলিত আছে, ও যদি ম্যাচে একটা চারও মারে ওইটাই হয় ওই ম্যাচে সবচেয়ে দর্শনীয় শট। আজকের কভার আর পয়েন্ট দিয়ে মারা চারগুলোর কথা লিখে বোঝানোর মত না। দিলশান শেষের দিকে কিছু লুপি ডেলিভারি পর্যন্ত দিয়েছে কিন্তু আশরাফুল মোটেই টেম্পটেড হয়নি। আগামীকাল ও সেঞ্চুরী তুলে নিতে না পারলে ও আবারও নিজের উপর অবিচারই করবে।
৫। ফলো-অন এড়াতে আরও ২৩৫ রান করা লাগবে। এবং তা করতে আগামীকাল প্রায় সারাদিন ব্যাট করতে হবে। সেটা করতে পারলে ম্যাচ ড্র করা খুব কঠিন হওয়ার কথা না। পিচ রিপোর্টে আজ যা দেখলাম তাতে মনে হয়েছে চতুর্থ দিনের আগে পিচে বড় ধরণের ক্রাক দেখা যাওয়ার কথা না মোটেই।
সুতরাং, আগামীকাল বাংলাদেশের ব্যাটিংই ম্যাচে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারিত করে দিবে বলেই বোধ করি।
৬। প্রথম ইনিংসে ৫৭০ করে ফেলার পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জেতা যায় না। তবে ড্র করা খুব কষ্টের হওয়ার কথা না। সেটাই হোক অন্তত।
মার্চ মাসে হারতে চাইনা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।