আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরও এক টুকরো শৈশব : যে কবিতা একাই একশো

I often see flowers from a passing car That are gone before I can tell what they are Haven gives its glimpses only to those Not in position to look too close… একটুকরো শৈশব ও তার পরের টুকরোর পরে আজ যে ছড়াটা দিচ্ছি, সেটা একাই একশো। বাঘের বাচ্চা - লুতফর রহমান রিটন গুটুল মুটুল এবং টুটুল বন্ধু ছিল তিন সবাই মিলে কী ঘটনা ঘটাল সেইদিন! ছুটির দিন সকালবেলা বন্ধুরা করছিলো খেলা জানালা ছিল পর্দা টানা হঠাৎ একটা বেড়াল ছানা সেই জানালায় দিলো উঁকি বলল, ‘ কী গো খোকাখুকি? গুডমর্নিং হালুম হালুম চিড়িয়াখানা থেকে আলুম!’ শুনেই ওরা অবাক, আরে! মিয়াঁও হালুম বলতে পারে? বলল তখন বেড়াল ছানা- “শোন তবে কাণ্ডখানা ভেঙ্গে লোহার বিরাট খাচ্চা পালিয়ে আলুম বাঘের বাচ্চা। মিয়াঁও তো নই, হালুম হালুম এবার কি ভাই হচ্ছে মালুম?” গুটুল মুটুল টুটুলরা সব করল শুরু কি কলরব তুমি আমাদের বন্ধু হবে? ড্রয়িং রুমে এসো তবে। বাঘের বাচ্চা বলল, ‘আসি এই তোমাদের ভালোবাসি। মিরপুরের ওই চিড়িয়াখানায় আমাকে ছাই একটু মানায়? বন্দি জীবন ভাল্লাগেনা মুক্ত হতে চাইবে কে না! তাইতো এলাম দেখতে শহর কেবল মানুষ গাড়ির বহর।

’ বাঘ ছানাকে সঙ্গি করে ছোট একটা ভ্যানে চড়ে গুটুল মুটুল টুটুল মিলে ঘুরল শহর, মতিঝিলে। শহরবাসী অবাক-“আচ্ছা! এ যে দেখছি বাঘের বাচ্চা! গায়ে ডোরা আঁকিবুঁকি শাবাশ খোকা, শাবাশ খুকি। ” মতিঝিলে শাপলা দেখে বাঘের বাচ্চা উঠল ডেকে- ‘হালুম হালুম হালুম হালুম শাপলা খালুম শাপলা খালুম। ’ থমকে দাঁড়ায় পথচারী জ্যাম লেগে যায় রিকশা গাড়ি। খুব রেগে যায় ট্রাফিক পুলিশ- ‘ভ্যানের ওপর ব্যাঘ্র তুলিস?’ বলেই ভ্যানের চালকটাকে ট্রাফিকটা ধমকাতে থাকে।

ভ্যানের চালক বলল-‘স্যার ধমক দেবার কি দরকার? ট্রাফিক আইনে বাঘের ছানা বহন করতে নেইকো মানা। ’ বাঘের বাচ্চা বলল, “হালুম আচরনে দুঃখ পালুম। ” শিশু পার্কে এলো ওরা চড়ল বিমান - কাঠের ঘোড়া সানফ্লাওয়ারে- ফুলদানিতে দারুন মজা নিতে নিতে স্কেটিং করে চড়ল রেলে কাটল সময় হেসে খেলে। দারুন বটে কাণ্ডখানা শিশু-পার্কে বাঘের ছানা! পার্কে যত ছেলে বুড়ো করল শুরু তাড়াহুড়ো আন্টি আপ্পু কিংবা চাচ্চা সবাই অবাক- বাঘের বাচ্চা!! পিচ্চিগুলো মজা পেয়ে কোরাস সুরে উঠল গেয়ে- “ওয়েলকাম টু আওয়ার সিটি বাঘের বাচ্চা দেখতে প্রিটি। ” বাঘের বাচ্চা বলল- হালুম শিশু পার্কে মজা পালুম।

গড়িয়ে বিকেল সন্ধ্যা নামে এলো ওরা স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামে বাঘের ছানা ডিগবাজি খায় তাধিন তানা। সদরঘাটে ওরা গেল চটপটি আর ফুচকা খেল। লঞ্চে উঠে বাঘের ছানা মুগ্ধ হয়ে গাইল গানা – “হালুম হালুম হালুম হালুম নদীর হিমেল বাতাস খালুম। ” রাতের বেলা ডিনার খেতে হোয়াং হো তে যেতে যেতে বাঘের বাচ্চা বলল – “সেথায় হরিণ ছানার স্যুপ পাওয়া যায়?” থাই কর্ণ স্যুপ ভেজিটেবল ফ্রায়েড চিকেন পর্ণ ফিশবল খেয়ে দেয়ে বাঘের ছানা বলল-“এ যে দারুন খানা! যদি এমন রোজ খাওয়া যায় ফিরব না আর চিড়িয়াখানায় হালুম হালুম হালুম হালুম চাইনিজে খুব মজা পালুম।

” চড়ে একটা টেম্পু গাড়ি রাতে ওরা ফিরল বাড়ি। টি ভি স্ক্রিনে খবর পাঠক বলল-“পেলেই করুন আটক ভেঙ্গে লোহার বিরাট খাচ্চা পালিয়ে গেছে বাঘের বাচ্চা শহরবাসী সজাগ থাকুন দোর জানালা বন্ধ রাখুন। ছোট্ট পাজি বাঘের ছানা হঠাৎ করেই দেবে হানা। ডায়েরি আছে থানায় থানায় কেউ যদি তার খবর জানায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ টাকা দেবে আড়াই লক্ষ। ” এমন খবর শোনার পরে বাঘের ছানা হেসেই মরে- “এত্ত ভয়ের কারণ টা কী? আমি বনের ব্যাঘ্র নাকি? হালুম হালুম হালুম হালুম বন্ধু হবার জন্যে আলুম তোমরা মানুষ বড্ড পাজি আটকে রাখতে কেবল রাজি।

বন্ধু হতে চাইব না আর একসাথে গান গাইবো না আর পালিয়ে যাব শহর ছেড়ে। ” বলেই খুদে লেজটা নেড়ে অভিমানি বাঘের ছানা কোথায় গেল নেইকো জানা। গুটুল মুটুল এবং টুটুল বন্ধু ওরা তিন বাঘ বন্ধুর জন্য কাঁদে সমস্ত রাত দিন। শেষের কথা : আমি আমার ছোট ভাইটাকে প্রথম যেদিন ছড়াটা শুনিয়েছিলাম, সেইদিন থেকে আমার জীবন মোটামুটি দুর্বিষহ হয়ে গিয়েছিলো। ছড়া শেষ হওয়ার পর দেখি আমার ভাইটা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেছে।

কারণ তার নাকি বাঘ বাবুটার জন্য খুব মায়া লাগছে। তারপর গলা জড়িয়ে ধরে আবদার-“বুবু, আমাকে একটা বাঘ বাবু এনে দাও না, প্লিইইজ!!”সেই আবদার চলেছিল পরের ছয় মাস!!!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।