আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অলোকের পানে...

শফিক হাসান হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে এ কোন আলো? কোন সুর, কে ওখানে বসে বাঁশি বাজায়; যে বাঁশির সুর ছড়িয়ে পড়তে চায় তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে! কেন আচানক বুকে মোচড়? কার জন্য, কী জন্য, কেনই বা এতো মোচড়ামুচড়ি! জানি না, কিচ্ছুটি জানি না আমি। কে যেন আমাকে ডাকে সবুজ বনের গহীন থেকে, ধানক্ষেত থেকে যেন ভেসে আসে কারো লুকোচুরি-সৃষ্ট সতর্ক পদধ্বনি। একটি শুকতারা যেন জ্বলে জ্বলে ক্লান্ত হয় আমি দেখবো বলে। কিংবা আমাকে সে দেখবে বলে জ্বলে। জ্বলে জ্বলে নিজেকে পোড়ায়।

এ আমার কী হলো; কোন ভূত ধরলো আছর! শৈশবে দেখা কিশোরীর মুখ কেন এখনো হৃদয়পটে এতো উজ্জ্বল। ঘাঁই দেয়, গোত্তা খায়। তবুও সে উজ্জ্বলতা কমে না এতোটুকুন। উজ্জ্বলতার শেষ যেন নেই। সরোবরে ভাসে, ডোবে; ডোবে, ভাসে... আবছাও হয়ে যায় এক সময় অথচ দ্যাখো কী তামাশা, শুধু শৈশবের সেই কিশোরীই আমাকে দোলা দেয় না, দোলা দেয় আরো অনেকেই, অনেকভাবে।

মাঝে মাঝে ভেবে অবাক হই, চারপাশে যে সুন্দরের হাতছানি, এসবের ভিতর আমার সেই গ্রামের সোঁদা গন্ধমাখা শৈশবের স্থান হয় কী করে, কোন মরীচিকার মন্ত্রণায়! আমরা তো ভুলেই থাকি আমাদের আমিকে। ভুলতে পারার অপর নাম আধুনিকতা। তারপরও কীভাবে শেকড়ে এমন ছিঁড়ে যেতে চাওয়া টান পড়ে, কোন দৈববলে! কখনো এমন হ্যাঁচকা টান, অসহ্য রকম। আমি হারাই বনের নিবিড়ে। একটা ফড়িঙের পিছু পিছু মন দৌড়ায়।

সবুজ গন্ধমাখা ধানক্ষেতে কীসের যেন আহ্বান জানায়। বলি বলি করেও পরিস্ফুট হয়ে ওঠে না আকুতি। দিগন্তবিস্তারি যে পথরেখা-তার সাথে আমার কী সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, যাকে অমোঘ টান হিসেবে আখ্যায়িত করা যাবে? যদিও জানি না, এ পথের শুরু এবং শেষের হদিস! পথ নিজেও কি তা জানে! বিশ্বাস করো, অন্যরা কী জানে আর কী জানে না। বুঝতে চাই না আমি। তবে আমি কিচ্ছু জানি না।

আমার ভিতরে কী বয়, বাইরে কী হয়, কোন অলোকের পানে মন ধায়-তার সব কি আর বুঝি, ছাই! যেদিন মন-টন একটু বেশি ভালো থাকে, সেদিন হয়তো স্বপ্ন দেখি গ্রামের সর্পিলাকার রাস্তা ধরে কে দৌড়ে যায়। আমি তাকে পিছু ধাওয়া করি। ধাওয়া মানে প্রচলিত অর্থে ভয়ঙ্কর কিছু নয়, ধরতে চাওয়া। পিছন থেকে ডাকি। সে আমার ডাক শুনতে পায় না।

অথবা শুনেও না শোনার ভান করে চলে যায়। আর আমি অসহায়, পরাজিত খেলোয়াড়ের মতো নতজানু হই; তবু হাল ছাড়ি না। আঁকড়ে ধরি, ঝাপটে ধরি। মন বলে হয়ে যাবে, এই তো আর একটু হলেই...। এই তো হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে।

কিন্তু সুদূরতমা মরীচিকা, আলেয়ার আলো যেন। সকালে যখন তাজা ঘুম ভাঙে, উত্তর খুঁজে পাই না এ স্বপ্নের। কার পেছনে দৌড়িয়েছি আমি, কে সে। চিনি তাকে? সে আমাকে জানে? চিনলে তার নাম কী! কেনই বা এসেছিলো মনোলোকে? কখনো সখনো এমনও হয়, আমার চারপাশে এক দঙ্গল কিশোর-কিশোরী হট্টগোল করে। হট্টগোল করে কী বলে না বলে কিছু বুঝি না অথবা বুঝি ঠিকই কিন্তু মনে রাখতে পারি না অথবা মনে রাখতে পারি ঠিকই, দুর্বোধ্য সে ভাব অনুবাদ করে সামনে আনতে পারি না! কোন সুদূর পানে ছুটে চলেছি অন্ধ আমি...! এই অন্ধত্ব আর কতদিন ভোগাবে! জানি, উত্তরের খোঁজে উত্তর-দক্ষিণে ছোটার মানে নেই কোনো...! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.