আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আক্ষেপ করে বললেন মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার আতিকুর রহমান : ঢাকায় ইনভেস্টর পাঠালেই কমিশন চায়, হতাশ হয়ে তারা ফিরে আসে

ইমানের পরীক্ষা হয় সংকট কালে। ইমানের পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত থাকুন। ‘আমি অনেক চেষ্টা করে এখান থেকে ইনভেস্টর পাঠাই, ঢাকায় নামার পরই তাদের কাছে কমিশন চায়। হতাশ হয়ে তারা ফিরে আসে। ’ আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বললেন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ মিশনে নিয়োজিত হাইকমিশনার একেএম আতিকুর রহমান।

দৈনিক আমার দেশ ও এটিএন বাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও জানান, মাত্র ৪০ হাজার টাকা খরচে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিক আনার জন্য তিনি কাজ করছেন। তিনি অন্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমি দেখিয়ে দেব আড়াই লাখ নয়, মাত্র ৪০ হাজার টাকায় বাংলাদেশী শ্রমিক মালয়েশিয়ায় আনা সম্ভব। এনিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা সারপত্র এখন তার কাছে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি। কয়েক মাস পর চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রমবাজারের দুয়ার খুলতে তিনি এমন চমক দেখাতে চান বলেও উল্লেখ করেন। এদিকে কুয়ালালামপুরে খোঁজ নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীদের তিক্ত অভিজ্ঞতার তথ্য মিলেছে।

শুধু মালয়েশিয়ান বিনিয়োগকারীই নন, কুয়ালালামপুরে এমন অনেক বাংলাদেশী বিত্তশালী ব্যক্তি রয়েছেন যারা নিজ দেশে শিল্প-কলকারখানা স্থাপন করে ব্যাপক কর্মসংস্থানে অবদান রাখতে আগ্রহী। কিন্তু যখনই বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যান তখন শুধু বিনিয়োগই হুমকির মুখে পড়ে তাই নয়, নিরাপত্তাহীনতায় নিজের জীবনও হুমকির মুখে পড়ে। খুঁজে বের করা হয় তিনি কোন রাজনীতির সমর্থক। ঢাকায় গেলেই ঘিরে ধরে প্রভাবশালী চাঁদাবাজ ও কমিশনখোররা। শেষ পর্যন্ত একরাশ হতাশা আর জানটা নিয়ে ফিরে আসেন তারা।

মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীরা মূলত বাংলাদেশের টেলিকম খাত, বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাত, আইসিটি, স্বস্থ্যসেবা, পর্যটন, ইলেক্ট্রনিক্স প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। জানা গেছে, জরুরি সরকারের দুই বছর এবং বর্তমান সরকারের আড়াই বছরে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ান বিনিয়োগকারীদের উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ নেই। তার আগে টেলিকম খাতে একাধিক বড় বিনিয়োগ পায় বাংলাদেশ। ২০১০ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে কুয়ালালামপুরে এসে একাধিক দ্বিপাক্ষিক কর্মসূচিতে মালয়েশিয়ান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান। তখন মালয়েশিয়ার আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা এমনও আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, যদি বাংলাদেশ উপযুক্ত ব্যবসানুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে বিভিন্ন দেশে তাদের বিনিয়োগকৃত ১ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন বিনিয়োগ বাংলাদেশে স্থানান্তর করতেও তারা আগ্রহী।

কিন্তু পরবর্তীতে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়। এখানকার ব্যবসায়ী ও কূটনীতিকদের উত্সাহে বিনিয়োগের আগ্রহ নিয়ে যখনই তারা ঢাকা গেছেন এবং সরকারি ও সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিনিয়োগ বিষয়ে আলোচনা করেছেন, তখন সর্বাগ্রে এসেছে কমিশন দেয়ার বিষয়টি। কমিশন প্রাপ্তির নিশ্চয়তা ছাড়া কেউই সাড়া দেননি। একজন মালয়েশিয়ান বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে একটি বড় ফার্নিচার শিল্প স্থাপনের আগ্রহ নিয়ে গিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে কুয়ালালামপুরে ব্যবসারত বাংলাদেশীর সহায়তায় তিনি ঢাকায় সম্ভাব্যতা যাচাই করে যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সরকারি পর্যায়ে আলাপ আলোচনা শুরু করেন, তখনই তার কাছে জানতে চাওয়া হয় সুযোগ করে দিলে বিনিময়ে কতটাকা কমিশন দেবে।

এক পর্যায়ে এমন অংক কমিশন হিসেবে দাবি করে বসে যে টাকা তুলে আনতেই তার কয়েক বছর লেগে যাবে। শেষ পর্যন্ত তিনি বিনিয়োগ পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন। মালয়েশিয়ায় নিয়োজিত হাইকমিশনার আতিকুর রহমান আক্ষেপ করে যে দাবি করেছেন, সে বিষয়ে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশী ব্যবসায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম বিন আফসার বলেন, হাইকমিশনারের আক্ষেপ যথার্থ। তবে এটাও সত্য যে, হাইকমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী নেয়া কিংবা বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে তাদের দায়িত্ব খুব একটা পালন করেন না। সংবাদসূত্র জানতে এখানে ক্লিকান ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।